বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

ইতিহাসের পাতা

নতুনধারা
  ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০০:০০
পেস্নটো প্রাচীন গ্রিসের অন্যতম প্রভাবশালী দার্শনিক জন্ম : আনুমানিক ৪২৮/৪২৭ অথবা ৪২৪/৪২৩ খ্রিস্টপূর্বে মৃতু্য : আনুমানিক ৩৪৮/৩৪৭ খ্রিস্টপূর্বে

পেস্নটো

শিক্ষা জগৎ ডেস্ক য়

প্রাচীন গ্রিসের অন্যতম প্রভাবশালী দার্শনিক পেস্নটো। তিনি দার্শনিক সক্রেটিসের ছাত্র ছিলেন এবং দার্শনিক অ্যারিস্টটল তার ছাত্র ছিলেন। পেস্নটোর দাদার নামের সঙ্গে মিলিয়ে তার নাম রাখা হয়েছিল অ্যারিস্টোক্লেস। তার প্রশস্ত দৈহিক গঠনের জন্য তার নাম হয় 'পেস্নটো' যার অর্থ প্রশস্ত। পেস্নটোর সঠিক জন্ম সাল জানা যায়নি। ঐতিহাসিকদের মতে পেস্নটোর জন্ম আনুমানিক ৪২৮/৪২৭ অথবা ৪২৪/৪২৩ খ্রিস্টপূর্বে এথেন্সের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে। তার বাবা ছিলেন অ্যারিস্টন এবং মা পেরিকটিওন। পেস্নটো শৈশব থেকেই অত্যন্ত বিনয়ী ছিলেন। শরীর গঠনের জন্য তিনি নানারকম খেলাধুলা করেছেন এবং সম্ভ্রান্ত পরিবারের রীতি অনুসারে, তিনি গৃহশিক্ষকের কাছে শিক্ষার সুযোগ পেয়েছিলেন। সেই সূত্রে তিনি অল্প বয়সেই ব্যাকরণ, সংগীত, শরীর গঠন বিষয়ে শিক্ষালাভ করতে পেরেছিলেন।

সক্রেটিসের মৃতু্যর পর পেস্নটো ক্ষুব্ধচিত্তে এথেন্স ত্যাগ করেন ২৮ বছর বয়সে। এথেন্স থেকে প্রথম তিনি মেগরাতে যান। এরপর তিনি প্রায় ১২ বছর ইটালি, সিসিলি, মিশর, সাইরিন ইত্যাদি এলাকা ঘুরে বেড়ান।

৪০ বছর বয়সে তিনি আবার এথেন্সে ফিরে আসেন। এরপর এথেন্সের বাইরে একটি নির্জন স্থানে তিনি একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। এই প্রতিষ্ঠানটির নাম দেন 'অ্যাকাডেমি'। পেস্নটোর এই অ্যাকাডেমিকে আধুনিক ইউরোপীয় বিদ্যালয়ের প্রাথমিক রূপ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

শৈশব থেকেই পেস্নটোর মধ্যে শৈল্পিক ও সৃজনশীল গুণাবলির বিকাশ ঘটে। তিনি কিশোর বয়সেই লেখালেখিতে অভ্যস্ত হন। তার জীবনে অধিকাংশ লেখাই সক্রেটিসকে কেন্দ্র করে লেখা। কথোপকথন বা ডায়লগের মাধ্যমে সক্রেটিসের দর্শন তুলে ধরেছেন তিনি এসব লেখায়। সক্রেটিসের এই ডায়লগকে ঐতিহাসিকরা তিন ভাগে ভাগ করেছেন প্রাথমিক ডায়লগ, মধ্যবর্তী সময়ের ডায়লগ এবং শেষ সময়ের ডায়লগ।

পেস্নটোর চিন্তা-ভাবনার পূর্ণ প্রকাশ ঘটেছে তার রিপাবলিক গ্রন্থে। বিশ্বসাহিত্যের এক অন্যতম শ্রেষ্ঠ গ্রন্থ। যদিও বইখানিতে মূলত রাষ্ট্রনীতির আলোচনা করা হয়েছে কিন্তু রাষ্ট্রনীতির প্রয়োজনে এখানে নানা প্রসঙ্গ এসেছে। মানবজীবন এবং সমাজজীবনে যা কিছু প্রয়োজন-শরীরচর্চা, শিল্পকলা, সাহিত্য, শিক্ষা এই বইয়ের অন্তর্ভুক্ত। পেস্নটো রাষ্ট্রের নাগরিকদের তিনটি ভাগে ভাগ করেছেন- (১) শাসক সম্প্রদায় (২) সৈনিক (৩) জনসাধারণ ও ক্রীতদাস। রাষ্ট্র তখনই সুপরিচালিত হয় যখন তিন বিভাগের কাজের মধ্যে সুসামঞ্জস্য থাকে। রাষ্ট্রের উন্নতি-অবনতি অনেকাংশে নির্ভর করে শাসকদের ওপর। তাই পেস্নটো সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন শাসক নির্বাচনের ওপর। তিনি তার 'আইন'গ্রন্থে মানুষের বাস্তব প্রয়োজন, তার কল্যাণের কথা চিন্তা করে আদর্শ রাষ্ট্রের কথা বলেছেন। এতে মানুষের বাস্তব প্রয়োজন, তার কল্যাণের কথা চিন্তা করে রাষ্ট্রের আদর্শের কথা বলেছেন। শেষজীবনটা পেস্নটো কাটিয়ে দেন তার স্কুল অ্যাকাডেমিতে শিক্ষাদান করে এবং লেখালেখি করে।

তিনি আনুমানিক ৩৪৮/৩৪৭ খ্রিস্টপূর্বে মৃতু্যবরণ করেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<67652 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1