শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
ইতিহাসের পাতা

থিওডর মম্‌সেন

শিক্ষা জগৎ ডেস্ক
  ২০ জুলাই ২০১৯, ০০:০০
থিওডর মম্‌সেন সাহিত্যিক ও নোবেল জয়ী জন্ম: ৩০ নভেম্বর, ১৮১৭খ্রি: মৃতু্য: ১ নভেম্বর, ১৯০৩ খ্রি:

থিওডর মম্‌সেন একজন জার্মান সাহিত্যিক। মমসেন ১৮১৭ সালের ৩০ নভেম্বর তারিখে ডেনমার্কের গার্ডিং শহরে জন্মগ্রহণ করেন। শহরটি বর্তমানে পশ্চিম জার্মানির অন্তর্ভুক্ত। তিনি ১৯০২ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। তার কৈশোর ও ছাত্রজীবন কাটে হলস্টেইন শহরে। তার জীবনের মূল শিক্ষা লাভ করেন তার বাবা জেমস মম্‌সেনের কাছ থেকে। গ্রিক, জার্মান, ফরাসি এবং ইংরেজি ভাষা তিনি তার বাবার কাছ থেকেই শিখেছিলেন। তার বাবা সাহিত্যানুরাগী ছিলেন। বাল্যকালেই তাই মমসেন সাহিত্যের সংস্পর্শে আসার সুযোগ পেয়েছিলেন। স্কুলের ছাত্র থাকা অবস্থায়ই তিনি শেক্সপিয়ার, ভিক্টর হুগো, লর্ড বায়রন প্রমুখের সাহিত্যকর্ম পড়ে শেষ করে ফেলেন। এমনকি এ বয়সে এসব বিখ্যাত সাহিত্যিকদের বেশ কিছু লেখা জার্মান ভাষায় অনুবাদও করেন।

১৮৩৮ সালে থিওডর মমসেন ডেনিস বিশ্ববিদ্যালয় কিইল-এ ভর্তি হন। পড়াশোনা শুরু করেন আইন বিষয়ে। পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করে এ বিশ্ববিদ্যালয়েই অধ্যাপনা শুরু করেন। এখানে পরবর্তী সময়ে তিনি রোমান আইন সম্পর্কে বিশেষ গবেষণা করেছিলেন। এই গবেষণা করার সময় তিনি বুঝতে পারেন যে, রোমান আইনের ক্রমবিবর্তনের চিত্র প্রাচীন শিলালিপিতে পাওয়া যাওয়ার কথা। এই আগ্রহের বশেই এক সময় প্রাচীন মুদ্রা ও শিলালিপি নিয়ে গবেষণা শুরু করেন। এ সময় তার মনে এপিগ্রাফবিদ হওয়ার সাধ জেগেছিল, ঐতিহাসিক হওয়ার তেমন কোনো ইচ্ছা ছিল না। কিন্তু রোমান আইনের মূল অনুসন্ধান করতে যেয়ে ঐতিহাসিকে পরিণত হন। এ হিসেবে তিনি আইনের অধ্যাপক হয়েও রোমের সমৃদ্ধ ইতিহাস রচনা করেন। এই ইতিহাস রচনার জন্য তিনি ইতালিতে গিয়েছিলেন। মূলত আইন পড়ার সময় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাকে সরকারি বৃত্তি দিয়ে তিন বছরের ইতালিতে পাঠিয়েছিল। সেখানে যেয়ে প্রাচীন রোমান শিলালিপি ও মুদ্রাসংশ্লিষ্ট প্রচুর তথ্য সংগ্রহ করেন। এই তথ্যের ভিত্তিতে রচনা করেন করপাস ইন্‌সক্রিপশান্স লাতিনেরাম নামক ১৬ খন্ডের একটি বই। এই বইয়ের প্রথম খন্ড প্রকাশিত হয়েছিল ১৮৩৩ সালে। আর ১৬তম খন্ড প্রকাশিত হয় ১৮৬৩ সালে।

১৮৪৮ সালে মমসেন জার্মানির লাইপেজিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের অধ্যাপক মনোনীত হন। এরপর ১৮৫২ সালে সুইজারল্যান্ডের জুরিখে চলে যান। জুরিখে থাকার সময় তিনি সিদ্ধান্ত নেন নতুন দৃষ্টিভঙ্গিতে রোমের ইতিহাস লিখবেন। এ সময় তিনি অবর্ণনীয় পরিশ্রমের মাধ্যমে নতুন ইতিহাস গ্রন্থ হিস্ট্রি অব রোম রচনা করেন। ১৮৫৪ সালে এই বইটির প্রথম খন্ড প্রকাশিত হয়েছিল। এই বইটি পড়ে সমগ্র ইউরোপের সৃজনশীল লোকজন অভিভূত হয়ে পড়ে। মমসেনের খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে দেশ থেকে দেশে। তার এই বিষয়ের প্রথম তিনটি খন্ডের বিষয়বস্তু ছিল খ্রিস্টপূর্ব ৪৬ অব্দ থেকে শুরু করে দিগ্বিজয়ী বীর জুলিয়াস সিজার কর্তৃক উত্তর আফ্রিকার সেনেট সৈন্যদের পরাজয় পর্যন্ত সমগ্র রোমের ইতিহাস বৃত্তান্ত।

\হ১৮৫৪ সালে তিনি আবার জার্মানিতে ফিরে আসেন এবং প্রম্নশিয়ার ব্রাসল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নিযুক্ত হন। এ সময়ই তিনি সেখানকার এক পুস্তক ব্যবসায়ীর কন্যা মেরী রেইমারকে বিয়ে করেন। মমসেন ১৮৫৮ সালে বার্লিন বিশ্ববিদ্যালয়ের রোমান ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপকের পদে যোগ দেন। কর্মজীবনে শেষ পর্যন্ত তিনি এই পদে বহাল ছিলেন। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করার সময় তিনি সক্রিয় রাজনীতিতে অংশ নিয়েছিলেন। তিনি জার্মানির প্রগতিশীল দলের সমর্থনে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন। ১৮৬৩-১৮৬৬ এবং ১৮৭৩-১৮৭৯ সাল পর্যন্ত প্রম্নশিয়ার সংসদের সদস্য পদে বহাল ছিলেন। ১৮৭০ সালে সেডানে প্রম্নশিয়া ও ফ্রান্সের যুদ্ধে ফ্রান্স পরাজিত হয়। ১৮৭১ সালে ফ্রাঙ্কফুর্টে সম্পাদিত এক অপমানজনক চুক্তিতে ফ্রান্স সাক্ষর করতে বাধ্য হয়। তখন তিনি বিসমার্কের অভ্যন্তরীণ রীতি-নীতির তীব্র সমালোচনা করেছিলেন এবং এ কারণে তাকে কারাগারে অন্তরীণ থাকতে হয়েছিল। ১৯০৩ সালের ১ নভেম্বর থিওডর মমসেন মৃতু্যবরণ করেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<58894 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1