বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার প্রস্তুতি

প্রাথমিক বিজ্ঞান

পরিবেশ দূষণের উৎস কী?
মো. শাহিনুর আলম শাহিন, সহকারী শিক্ষক নিশিন্ধরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বগুড়া য়
  ২১ নভেম্বর ২০১৮, ০০:০০

প্রিয় শিক্ষাথীর্, আজ তোমাদের জন্য প্রাথমিক বিজ্ঞান থেকে কাঠামোবদ্ধ প্রশ্নোত্তর নিয়ে আলোচনা করা হলো

কাঠামোবদ্ধ প্রশ্নোত্তর

প্রশ্ন. পরিবেশ দূষণের উৎস কী? তোমার এলাকার পরিবেশ দূষণ রোধে তোমার বন্ধুদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করার দুটি উপায় লেখ।

উত্তর : যেসব কারণ পরিবেশের ক্ষতি করে সেগুলোই পরিবেশ দূষণের উৎস। যেমনÑ বায়ু দূষণের উৎস শিল্পকারখানা, যানবাহন, ইটের ভাটা ইত্যাদি। পানি দূষণের উৎস রাসায়নিক সার, কীটনাশক, কলকারখানার বজর্্য। আবার মাটি দূষণের উৎস প্লাস্টিক, পলিথিন ইত্যাদি।

আমার এলাকার পরিবেশ দূষণ রোধে আমার বন্ধুদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করার দুটি উপায় হলোÑ

১. পরিবেশ দূষণের কারণ ও পরিবেশ দূষণ হলে মানুষসহ অন্যান্য প্রাণী ও জীবজন্তুর ওপর কী কী প্রভাব পড়তে পারে তা পয়েন্ট আকারে কাগজে লিখে বন্ধুদের দিতে পারি।

২. বন্ধুদের এক জায়গায় জড়ো করে পরিবেশ দূষণ রোধে কী কী পন্থা অবলম্বন করা যায় সে ব্যাপারে আলোচনা করতে পারি।

প্রশ্ন. বায়ুপ্রবাহকে আমরা কী কী কাজে ব্যবহার করতে পারি?

উত্তর : বায়ুপ্রবাহকে আমরা নিম্নলিখিত কাজে ব্যবহার করতে পারিÑ

১. বড় চরকা বা টারবাইন ঘুরিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা।

২. ফসল ঝেড়ে ময়লা দূর করা।

৩. পালতোলা নৌকা চালানো।

৪. ভেজা কাপড় শুকানো।

৫. ঘুড়ি ওড়ানো।

৬. লম্বা ভেজা চুল সহজে শুকানো।

৭. আমাদের শরীর ঠাÐা রাখতে হাতপাখা ও বৈদ্যুতিক পাখা থেকে বায়ুপ্রবাহকে ব্যবহার করতে পারি।

প্রশ্ন. শক্তি কী? শক্তির রূপান্তরের উদাহরণ ৪টি বাক্যে ব্যাখ্যা কর।

উত্তর : শক্তি হচ্ছে পরিবতের্নর সংঘটক বা এজেন্ট, যা সৃষ্টি বা ধ্বংস করা যায় না। এটি শুধু এক রূপ থেকে অন্য রূপে রূপান্তরিত হয়। নিচে উদাহরণসহ শক্তির রূপান্তরের ব্যাখ্যা দেয়া হলোÑ

১. বৈদ্যুতিক বাতিতে বিদ্যুৎ শক্তির তাপ ও আলোকে শক্তিতে রূপান্তর।

২. গাড়ি চালালে তেলের রাসায়নিক শক্তি প্রথমে রূপান্তরিত হয় তাপশক্তিতে, পরে এ তাপশক্তি রূপান্তরিত হয় গতিশক্তিতে।

৩. গাছের পাতা সূযের্র আলোকশক্তি শোষণ করে। এ আলোকশক্তি রাসায়নিক শক্তিতে রূপান্তরিত হয়।

৪. কাঠ বা কয়লা পোড়ালে তাপশক্তি রাসায়নিক শক্তিতে রূপান্তর হয়।

প্রশ্ন. পদাথর্ কাকে বলে? পদাথের্র গঠন ও বৈশিষ্ট্য ৫টি বাক্যে ব্যাখ্যা কর।

উত্তর : যার ওজন আছে, জায়গা দখল করে এবং বল প্রয়োগ করলে বাধা প্রদান করে তাকে পদাথর্ বলে।

পদাথর্ ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কণিকা দ্বারা গঠিত, যার নাম পরমাণু বা অ্যাটম। অ্যাটম অথর্ অবিভাজ্য, অথার্ৎ পরমাণুসমূহ আর ভাঙা যায় না। সব পদাথর্ পরমাণু দ্বারা গঠিত। পদাথের্র ভিন্নতা নিম্নলিখিত বৈশিষ্ট্যের ওপর নিভর্র করেÑ

১. প্রতিটি পদাথর্ ভিন্ন রকম পরমাণু দ্বারা গঠিত।

২. পরমাণুসমূহের পারস্পরিক বন্ধন ভিন্ন রকমের।

প্রশ্ন. খাদ্য সংরক্ষণ কী? তোমাদের বাসার প্রয়োজনের অতিরিক্ত চাল ও মাছকে পরে ব্যবহারের জন্য কিভাবে সরক্ষণ করা যেতে পারে ৪টি বাক্যে ব্যাখ্যা কর।

উত্তর : খাদ্যদ্রব্যকে পচন থেকে রক্ষা করে টাটকা ও সতেজ অবস্থায় দীঘির্দন রেখে দেয়াকেই খাদ্য সংরক্ষণ বলে।

বাসার প্রয়োজনের অতিরিক্ত চাল ও মাছকে সংরক্ষণের ক্ষেত্রে কোন পদ্ধতি উপযোগী প্রথমে তা নিধার্রণ করতে হবে। আমরা জানি, শুকনো অবস্থায় চাল ভালো থাকে, তাই চালকে রোদে শুকিয়ে সংরক্ষণ করতে হবে। অন্যদিকে মাছ সংরক্ষণের বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে। যেমনÑ মাছকে বাসার ফ্রিজে রেখে সংরক্ষণ করা যায় অথবা উচ্চ তাপে জীবাণু ধ্বংস করে বদ্ধ পাত্রেও সংরক্ষণ করা যেতে পারে।

প্রশ্ন : বায়ুবাহিত রোগ কী? এসব রোগ প্রতিরোধে তুমি তোমার এলাকায় কিভাবে সচেতনতা বৃদ্ধি করবে? ৪টি বাক্যে লেখ।

উত্তর : যেসব রোগের জীবাণু বাতাসের মাধ্যমে ছড়ায়, সেগুলো বায়ুবাহিত রোগ নামে পরিচিত। যেমনÑ সদির্জ্বর বা ইনফ্লুয়েঞ্জা, বসন্ত, হাম ইত্যাদি।

বায়ুবাহিত রোগ প্রতিরোধে আমি আমার এলাকায় নিম্নরূপে সচেতনতা বৃদ্ধি করবÑ

১. যেখানে সেখানে কফ, থুতু না ফেলে বন্ধ কৌটায় ফেলে মাটিতে চাপা দিয়ে রাখতে বলব।

২. হঁাচি, কাশি হলে মুখে মাস্ক বা রুমাল ব্যবহার করতে বলব।

৩. বসন্ত রোগীদের গুটি শুকিয়ে যাওয়ার সময় তার কাছের মানুষদের সতকর্ থাকার পরামশর্ দেবে।

৪. স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা ব্যবহার করতে বলব।

প্রশ্ন : সৌরজগৎ কী? আমাদের জন্য সূযর্ এত গুরুত্বপূণর্ কেন? ৪টি বাক্যে লেখ।

উত্তর : চঁাদ, সূযর্, পৃথিবী এবং অন্যান্য গ্রহ, উপগ্রহ, নানা বস্তু নিয়ে যে জগৎ গঠিত তাকে সৌরজগৎ বলে।

আমাদের নিকটতম নক্ষত্র সূযর্ থেকেই আমরা তাপ ও আলো পাই। সূযের্ক কেন্দ্র করেই পৃথিবী নানা গতি লাভ করেছে। সূযর্ থেকে আমাদের প্রয়োজনীয় সব শক্তি পাচ্ছি এবং দিন-রাতের পরিবতর্ন ঘটছে সূযের্র জন্য। পৃথিবীতে জীবনের উদ্ভব সম্ভব হয়েছে সূযের্র জন্য।

প্রশ্ন. বিশুদ্ধ পানি কী? বিশুদ্ধ পানির ৪টি বৈশিষ্ট্য লেখ।

উত্তর : যে কোনো ধরনের রোগজীবাণুমুক্ত পানের উপযোগী পানিকে বিশুদ্ধ পানি বলে।

বিশুদ্ধ পানির ৪টি বৈশিষ্ট্য নিম্নরূপÑ

১. বিশুদ্ধ পানি সব ধরনের জীবাণুমুক্ত হবে।

২. পানির রং বা বণর্ টলমলে ও বণর্হীন হবে।

৩. পানিতে কোনো প্রকার দুগর্ন্ধ ও ভাসমান পদাথর্ থাকবে না।

৪. পানি খুবই স্বচ্ছ হবে।

প্রশ্ন : বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সম্পকর্ উদাহরণ দিয়ে প্রমাণ কর।

উত্তর : বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সম্পকর্ খুবই ঘনিষ্ঠ। এরা পাশাপাশি চলে। বিজ্ঞানীদের মূল্যবান আবিষ্কারকে মানুষের কাজে লাগাতে হলে প্রযুক্তির সাহায্য নিতে হয়। তাই বিজ্ঞানের আবিষ্কার কাজে লাগানোর জন্য তৈরি হয় প্রযুক্তি। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সম্পকর্ বোঝানোর জন্য নিচে দুটি উদাহরণ উল্লেখ করা হলোÑ

উদাহরণÑ১ : বিজ্ঞানীরা বস্তুর গঠন এবং বস্তুর ওপরে শক্তির নানা প্রভাব আবিষ্কার করেছেন। প্রযুক্তিবিদরা বিজ্ঞানের সেই জ্ঞান ব্যবহার করে নতুন নিমার্ণসামগ্রী উদ্ভাবন করেছেন।

উদাহরণÑ২ : আলো, বাতাস, পানি ও নানা উপাদান কিভাবে উদ্ভিদের ওপরে কাজ করে তা নিয়ে বিজ্ঞানীরা গবেষণা করেন। প্রযুক্তিবিদরা এই জ্ঞান প্রয়োগ করেন ফসল উৎপাদনের উন্নতি সাধনে। সুতরাং বলা যায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি গভীরভাবে সম্পকির্ত।

প্রশ্ন । শিক্ষাক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তি কিভাবে কাজে লাগে?

উত্তর : শিক্ষাক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তির প্রভাব অত্যন্ত ব্যাপক ও গভীর। তথ্যপ্রযুক্তি আজকাল শিক্ষাব্যবস্থাকে করেছে গতিশীল, দক্ষ ও পরিপূণর্। নিচে এর কয়েকটি উদাহরণ দেয়া হলোÑ

১. ঘরে বসেই আজ পৃথিবীর যে কোনো দেশের খ্যাতনামা লাইব্রেরির বই পড়া যায়।

২. শিক্ষাথীর্রা ক্লাসে না গিয়েও ইন্টারনেটের মাধ্যমে পারে ক্লাসে অংশগ্রহণ করতে। শিক্ষককে প্রশ্ন করে প্রয়োজনীয় উত্তরটি জানতে পারে।

৩. শিক্ষাসংক্রান্ত মাল্টিমিডিয়া সিডির মাধ্যমে লেখাপড়ার অসংখ্য চমকপ্রদ বিষয় দেখানো যায়।

৪. কম্পিউটার, ইন্টারনেট, ডিভিডি, মেমোরি কাডর্ বা পেনড্রাইভ ব্যবহার করে শিক্ষাবিষয়ক যে কোনো তথ্য সংগ্রহ বা সংরক্ষণ করে রাখা যায়।

৫. ই-বুক ব্যবহার করে পাঠ্যবইয়ের ব্যবহার কমানো সম্ভব।

৬. মোবাইল বা ইন্টারনেট ব্যবহার করে যে কোনো পরীক্ষাসংক্রান্ত তথ্য পাওয়া সম্ভব।

এভাবে শিক্ষাক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তিকে কাজে লাগানো যায়। এতে শিক্ষা লাভ হয়ে উঠবে আরো সহজ ও আনন্দদায়ক।

প্রশ্ন । নিম্নচাপ কিভাবে সৃষ্টি হয়?

উত্তর : সাধারণত কোনো জায়গার বায়ু বেশি ঘন হলে বায়ুচাপ বেশি হয় এবং বায়ু হালকা হলে বায়ুচাপ কম হয়। বায়ুচাপ কম-বেশি হলে বায়ুপ্রবাহের সৃষ্টি হয়। বায়ুপ্রবাহ আবার বেশি চাপের জায়গা থেকে কম চাপের জায়গায় প্রবাহিত হয়। কোনো জায়গার তাপমাত্রা যখন খুব বেশি হয় তখন সেখানকার বায়ু তাপে প্রসারিত হয়। প্রসারিত হওয়ার ফলে বায়ুর ঘনত্ব কমে যায় এবং বায়ু হালকা হয়ে ওপরে উঠে যায়। এর ফলে ওই জায়গার বায়ুচাপ কমে যায় ও নিম্নচাপের সৃষ্টি হয়।

প্রশ্ন । গ্রিনহাউস কেন গরম থাকে? ব্যাখ্যা কর।

উত্তর : কাচ তাপ কুপরিবাহী। কাচের ভেতর দিয়ে তাপ সহজে চলাচল করতে পারে না। কিন্তু আলো খুব সহজেই কাচের ভেতর দিয়ে চলাচল করতে পারে। গ্রিনহাউসের দেয়াল এবং ছাদ কাচের তৈরি। এ কারণে সূযের্র আলো খুব সহজেই কাচের ভেতর দিয়ে ঘরের ভেতরে প্রবেশ করতে পারে। অন্যদিকে বাইরের ঠাÐা ঘরের ভেতরে আসতে পারে না। আবার ঘরের ভেতরের গরমও বাইরে যেতে পারে না। এতে গ্রিনহাউসের ভেতরটা বেশ গরম থাকে।

প্রশ্ন । জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে মানুষের কী কী চাহিদা বাড়ে? বাড়তি ঘরবাড়ি তৈরি ও বাড়তি খাদ্য উৎপাদনে মাটির কী ক্ষতি হয়? ৩টি বাক্যে লেখ।

উত্তর : জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে মানুষের প্রধান চাহিদা বাড়ে খাদ্যের। তারপর কাপড়-চোপড়, থাকার জায়গা, খেলার জায়গা, চিকিৎসা ইত্যাদি। এগুলোই হচ্ছে মানুষের মৌলিক চাহিদা। আবার বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে যোগ হবে পড়াশোনা, যাতায়াত, ঘর ও বাইরে খেলার চাহিদা।

বাড়তি ঘরবাড়ি তৈরি ও বাড়তি খাদ্য উৎপাদনে মাটির যে ক্ষতি হয় তা নিচে বণর্না করা হলোÑ

১. বাড়তি ঘরবাড়ি তৈরি করতে মাটি কেটে বসতভিটা তৈরি করায় মাটি আলগা হয় এবং বৃষ্টির পানির সঙ্গে নদী বা খাল-বিলে গিয়ে পড়ে মাটির ক্ষয় হয়।

২. বাড়তি বাড়িঘর তৈরিতে গাছপালা কেটে ফেললে মাটির ক্ষয় বৃদ্ধি পায়।

৩. বাড়তি খাদ্য উৎপাদনে জমিতে অধিক পরিমাণ রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহার করায় মাটির উবর্রতা কমে যায়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<23369 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1