শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

বিজ্ঞানের যত কথা

বসন্ত (চঙঢ)
শিক্ষা জগৎ ডেস্ক য়
  ৩০ মে ২০২০, ০০:০০

বসন্ত রোগ দুই ধরনের। একটি গুটিবসন্ত ও অন্যটি জলবসন্ত। বসন্ত ঠঅজওঙখঅ ও ঠঅজওঈঊখখঅ নামক ভাইরাসঘটিত সংক্রামক ছোঁয়াচে রোগ। দুই ধরনের বসন্তের মধ্যে একটি হলো গুটিবসন্ত যা ভ্যারিওলা ভাইরাস দ্বারা সংক্রমিত হয় এবং এটি অত্যন্ত মারাত্মক ব্যাধি। ভ্যারিসেলা ভাইরাস দ্বারা সংক্রমিত জলবসন্ত তুলনামূলকভাবে কম মারাত্মক।

গুটিবসন্ত (ঝগঅখখচঙঢ) মারাত্মক ছোঁয়াচে রোগ। দেহে প্রথমে এক ধরনের গুটি বের হয় যা পরবর্তী সময়ে তিল বা দাগ, ফোস্কা, পুঁজবটিকা এবং খোসা বা আবরণ ইত্যাদি পর্যায়ের মাধ্যমে দেহে লক্ষণ প্রকাশ করে। সারা শরীরের ত্বকে এবং চোখে মারাত্মক ক্ষতের আবির্ভাব এই রোগের প্রধান উপসর্গ যা কখনও কখনও অন্ধত্বের কারণ ঘটায়। গুটিবসন্তের মহামারি বিশেষ বিশেষ মৌসুমে দেখা যায়। অণুজীববাহিত সংক্রামক রোগের টিকা আবিষ্কার হয়েছে ১৭৯৬ সালে। এডওয়ার্ড জেনার সর্বপ্রথম টিকা আবিষ্কার করেন এবং তখন থেকেই সংক্রামক রোগ প্রতিরোধে টিকা পদ্ধতির ব্যবহার শুরু হয়।

জলবসন্ত (ঈঐওঈকঊঘচঙঢ) হারপেস ভাইরাস গ্রম্নপের সদস্য ভ্যারিসেলা ভাইরাস কর্তৃক সংক্রমিত রোগ। ভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি, কাশি, সর্দি থেকে বাতাসে জীবাণু ছড়ায়। এছাড়া রোগীর প্রত্যক্ষ সংস্পর্শ থেকেও এই রোগ ছড়াতে পারে। শরীরে জীবাণু প্রবেশের দুই সপ্তাহের মধ্যে এই রোগের লক্ষণ দেখা দেয়। মূলত শিশুদের এই রোগ হয়। এই ভাইরাস শ্বসনযন্ত্রের উপরের অংশের মিউকাস আবরণীর মাধ্যমে দেহে প্রবেশ করে। বসন্তকাল ও প্রাক গ্রীষ্মকালীন সময়ে বাতাসে ভাসমান প্রচুর ধুলোবালির কারণে এই রোগের সংক্রমণের ঘটনা অহরহ ঘটতে দেখা যায়। এভাবে দেহে রোগটির পূর্ণতা প্রকাশ পায় যাকে স্থানীয়ভাবে জলবসন্ত হিসেবে অভিহিত করা হয়। এই রোগটি আরোগ্যকালে ত্বকে স্থায়ী কোনো ক্ষত সৃষ্টি করে না। জলবসন্ত রোগটি সাধারণত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ যেমন চোখ ইত্যাদিকে ক্ষতিগ্রস্ত করে না।

লক্ষণগুলো হলো-

১. এই রোগের প্রাথমিক উপসর্গ গা ম্যাজ ম্যাজ ভাব এবং জ্বর।

২. রোগীর শরীরে দুর্বল ভাব, মাথাব্যথা, সর্দি-কাশি, জ্বরভাব ইত্যাদি হয়।

৩. কিছুদিনের মধ্যেই শরীরে ঘামাচির মতো দানা দেখা দেয়। পরে সেগুলো বড় হয়ে ভেতরে পানি জমতে থাকে।

৪. প্রথমে শরীরে এবং পরে মুখমন্ডল, বাহু এবং মুখগহ্বর ও গলবিলের মিউকাস আবরণীতে ফুসকুড়ি দেখা দেয়।

৫. পর্যায়ক্রমে দেহে ফোস্কা দেখা দেয়।

৬. মাথাব্যথা ও ক্ষুধামন্দা দেখা দিতে পারে।

৭. এছাড়া গলার অভ্যন্তরে, চোখের পাতায়, চোখের বাইরের পর্দা বা কনজাংটিভা, টনসিল প্রভৃতি জায়গায় ফুসকুড়ি দেখা দেয়।

৮. শরীরে ব্যথা ও সর্দি-কাশিও হতে পারে।

\হবসন্তরোগে মেনে চলা উচিত-

মূলত সরাসরি সংস্পর্শে এবং রোগীর হাঁচি-কাশির মাধ্যমে বসন্ত ছড়ায়। তাই বসন্ত হলে যা যা করতে হবে সেগুলো হলো-

১. আক্রান্ত রোগীকে আলাদা রাখতে হবে।

২. রোগীর কফ, নাকের পানি, শুকনো ফুসকুড়ির চামড়া মাটির নিচে পুঁতে রাখতে হবে। আর রোগীর ব্যবহার করা সব কাপড়-চোপড় গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।

৩. পুষ্টিকর ভালো মানের খাবার রোগীকে খেতে দিতে হবে।

৪. চুলকালে এন্টিহিস্টামিন জাতীয় ওষুধ খেতে দিতে হবে। যদি ঘাগুলো পেকে যায় বা নিউমোনিয়া দেখা দেয় তবে এক কোর্স কার্যকর এন্টিবায়োটিক খেতে হবে। লোকাল এন্টিসেপটিক হিসেবে ফ্লোরোহেক্সিডিন লাগাতে হবে। তবে এসব ক্ষেত্রে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে।

বসন্ত রোগ-প্রতিরোধে যেসব খাবার খাওয়া যায় সেগুলো হলো-

টকদই, বার্লি, রসুন, সামুদ্রিক মাছ, চিকেন সু্যপ, বস্ন্যাক টি, লাল আলু, প্রাণীজ মাংস, মাশরুম, ভিটামিন সিসমৃদ্ধ খাবার।

বসন্তের হাত থেকে বাঁচার প্রধান উপায় প্রতিষেধক টিকা। জন্মের ৪৫ দিন পর থেকে যে কোনো বয়সেই এই টিকা দেওয়া যায়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<100604 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1