বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
সচেতনতা বৃদ্ধি জরুরি

পানিতে ডুবে শিশুর মৃতু্য

নতুনধারা
  ০২ এপ্রিল ২০২০, ০০:০০

একের পর এক পানিতে ডুবে মৃতু্যর ঘটনা ঘটছেই। এ ক্ষেত্রে বলার অপেক্ষা রাখে না যে, এমন ঘটনা ঘটতে থাকলে তা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক বাস্তবতাকেই স্পষ্ট করে। সম্প্রতি জানা গেল, কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে পুকুরের পানিতে ডুবে জবা রানি মালাকার নামের ৯ বছর বয়সি এক শিশুর মৃতু্য হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার বাজরা-মাছিমপুর এলাকার গোলাপ মিয়ার বাড়ির সামনের পুকুরে এ ঘটনা ঘটে। এ ক্ষেত্রে বলা দরকার, স্থানীয়রা জানিয়েছেন যে, নিজ বাড়ি থেকে নানার বাড়িতে বেড়াতে যাওয়া জবা মঙ্গলবার দুপুরে আরেকটি শিশুর সঙ্গে পুকুরে গোসল করতে নামে। সাঁতার জানা না থাকায় পুকুরে হাবুডুবু খেতে থাকে তারা। এ সময় স্থানীয়রা দেখতে পেয়ে পুকুর থেকে শিশু দু'টিকে উদ্ধার করে কুলিয়ারচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জবা রানিকে মৃত ঘোষণা করেন।

আমরা মনে করি, এই ঘটনাটি অত্যন্ত মর্মান্তিক এবং বেদনার। একইসঙ্গে এটাও বলা দরকার, একের পর এক যদি শিশুরা এভাবে পানিতে ডুবে মৃতু্যর কোলে ঢলে পড়ে, তবে তা কতটা আশঙ্কাজনক বাস্তবতাকে স্পষ্ট করে সেটি আমলে নেওয়া অপরিহার্য। এর আগেও দেশের বিভিন্ন স্থানে শিশুদের পানিতে ডুবে মৃতু্যর ঘটনা ঘটেছে। সংশ্লিষ্টদের এটাও আমলে নেওয়া দরকার, এর আগে পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গিয়েছিল- নদীপ্রধান বাংলাদেশে প্রতিদিন গড়ে ৩০টি শিশু পানিতে ডুবে মারা যায়। এ হিসাবে প্রতিবছর পানিতে ডুবে মারা যায় ১২ হাজার শিশু। এ ছাড়া প্রতিবছর পানিতে ডুবে যারা মারা যায় তাদের ৪০ শতাংশের বয়স ১৫ বছরের নিচে, যার মধ্যে পাঁচ বছরের কম বয়সি শিশুদের নিয়েই ঝুঁকিটা বেশি। আমরা মনে করি, পানিতে ডুবে শিশু মৃতু্যবিষয়ক সামগ্রিক চিত্র আমলে নিতে হবে এবং কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণও অপরিহার্য।

এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, শিশুদের পানিতে ডুবে মৃতু্যর ঘটনা বিভিন্ন সময়ে আলোচনায় এসেছে। এ ক্ষেত্রে অভিভাবকদের সচেতনতা বৃদ্ধিতে উদ্যোগ গ্রহণ জরুরি। এবারের ঘটনায় যে চিত্র পরিলক্ষিত হচ্ছে এখানেও অসচেতনতা স্পষ্ট; কেননা, আরেকটি শিশুর সঙ্গে পুকুরে গোসল করতে নামে জবা, কিন্তু তথ্য মতে সে সাঁতার জানত না, ফলে অভিভাবকদের এটা আমলে নেওয়া দরকার, শিশুরা যেন পুকুরে বা নদীতে এভাবে নামতে না পারে। এক দিকে শিশুদের দিকে খেয়াল রাখতে সচেতনতা বৃদ্ধি জরুরি, অন্য দিকে সচেতনতা বৃদ্ধির কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ব্যাপক প্রচার প্রচারণাও আবশ্যক। শিশুর অন্যতম ঘাতক এই পানিতে ডুবে মৃতু্য রোধে সচেতনতা বাড়ানোর লক্ষ্যে প্রথমেই এগিয়ে আসতে হবে পরিবারকে। শিশুরা জলাধারের কাছে যেন যেতে না পারে সেই খেয়াল রাখা এবং সতর্কতার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, এমন বিষয়ও এর আগে খবরে উঠে এসেছে যে, এক থেকে চার বছর বয়সি শিশুদের ৭৫ শতাংশ বাড়ির ২০ মিটারের মধ্যে পানিতে ডুবে মারা যায়। আর এর বড় কারণ হচ্ছে, পরিবারের অসচেতনতা। সংশ্লিষ্টদের মনে রাখা দরকার, সাঁতার না জানার কারণে অনেক শিশু পানিতে ডুবে মারা যায়। এমনকি শুধু শিশুরাই নয়, প্রাপ্তবয়স্কদেরও পানিতে ডুবে মৃতু্যর ঘটনা ঘটেছে। সঙ্গত কারণেই সাঁতার শেখার বিষয়টিকেও গুরুত্ব দেওয়া দরকার। এ কথা মনে রাখা দরকার, আজকের শিশুরাই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ নির্মাণ করবে, তাদের হাত ধরেই এগিয়ে যাবে দেশ। সঙ্গত কারণেই শিশুর সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। পানিতে ডুবে মৃতু্যর মতো ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে অভিভাবক তথা সবারই দায়িত্ব আছে সেটি মনে রাখার কোনো বিকল্প নেই।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<94892 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1