বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

চালের দাম বৃদ্ধি

কার্যকর উদ্যোগ নিন
নতুনধারা
  ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০০:০০

নানা ধরনের অজুহাতকে সামনে রেখে চালের বাজার অস্থির হওয়ার বিষয়টি নতুন কিছু নয়। কারসাজিসহ নানা কারণে চালের দাম বাড়ানোর বিষয় বারবারই আলোচনায় আসে। অথচ এমন পরিস্থিতিকে কেন্দ্র করে নিম্ন আয়ের মানুষ যে দিশাহারা হয়ে পড়ে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, ধানের বাম্পার ফলন হওয়ার পরও দফায় দফায় বাড়ছে সব ধরনের চালের দাম। গত এক মাসে প্রতি কেজি চালের দাম পাইকারি ও খুচরা বাজারে ৩ থেকে ৫ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। আর সবচেয়ে বেশি কেজিতে ৫ টাকা বেড়েছে মিনিকেট চালের দাম। মোটা চাল কেজিতে ৩ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এ ক্ষেত্রে জানা গেছে, চালের বাজারের এ অস্থিরতা রোধে বাজার নিয়ন্ত্রণে মিল মালিকদের ওপর নজরদারিতে গুরুত্বারোপ করেছেন পাইকারি ব্যবসায়ীরা। অন্যদিকে বেঁচে থাকার জন্য জরুরি এ খাদ্যপণ্যের দাম বাড়ায় দিশাহারা হয়ে পড়েছেন নিম্ন ও মধ্যম আয়ের ক্রেতারা। সঙ্গত কারণেই সৃষ্ট পরিস্থিতি আমলে নেওয়া জরুরি বলেই প্রতীয়মান হয়।

প্রসঙ্গত আমরা বলতে চাই, সীমিত ও নিম্নআয়ের মানুষ এমনিতেই পরিবারের সব ব্যয় মেটাতে হিমশিম খায়। এ ছাড়া দরিদ্র পরিবারের অনেকে ঋণ করেও নিত্য-নতুন ব্যয় মেটাতে বাধ্য হন। এ অবস্থায় যদি চালের দাম আবার বাড়ে তবে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগের বিষয় অনুমান করা কঠিন কিছু নয়। চালের দামের বিষয়টি আমলে নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে সংশ্লিষ্টদেরই। যদিও এটা উলেস্নখ করা দরকার, চালের এবারের দাম বৃদ্ধিকে স্বাভাবিক মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, প্রতি বছর এ সময় বিশেষ করে জানুয়ারি, ফেব্রম্নয়ারি ও মার্চ মাসে ধানের সরবরাহ কম থাকে। তাই সব ধরনের চালের দাম বেড়ে যায়। আবার এপ্রিলে যখন নতুন ধান আসে তখন আগের দামে ফিরে আসে। তবে চালের দাম বেড়ে যাওয়ার পেছনে যদি এর বাইরে অন্য কোনো কারণ থাকে সেটা মিল মালিকরাই বলতে পারবেন বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। আমরা মনে করি দাম বৃদ্ধির কারণ নির্ণয়পূর্বক যথাযথ উদ্যোগ নিতে হবে সংশ্লিষ্টদেরই।

লক্ষণীয়, বাবুবাজার চাল ব্যবসায়ী সমিতির সেক্রেটারি বলেছেন, প্রতি বছর এ সময় চালের দাম একটু বেশি থাকে। তাই এটা স্বাভাবিক বিষয়। কারণ এখন কোনো ধানের মৌসুম নয়। ধানের সংকটের জন্যই দাম বেড়েছে। আর পুরনো চাল প্রায় শেষ। নতুন চাল আসতে আসতে আরও দুই মাস লাগবে। তাই এপ্রিলের আগে আর চালের দাম কমবে না। তবে দাম নিয়ন্ত্রণে সরকারকে মিল মালিকদের ওপর নজরদারি বাড়ানোর অনুরোধ জানিয়ে তিনি এটাও বলেছেন, মিলগেটে এক টাকা দাম বাড়লে তার প্রভাব খুচরা বাজারে ৫ থেকে ৭ টাকা পড়ে। মিল থেকে বেশি দামে কিনে বেশি দামে বিক্রি করতে হয় বলেও জানা যায়। আমরা বলতে চাই, মিল মালিকদের কারসাজিসহ নানা কারণে চালের দাম বৃদ্ধি এর আগেও নানা সময়ে আলোচনায় এসেছে। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি আমলে নিতে হবে। এ ছাড়া সংশ্লিষ্টদের এটাও আমলে নেওয়া দরকার, এমনটিও আলোচনায় এসেছে, এখন ধানের মৌসুম শেষ তাই মিলাররা কারসাজি শুরু করেছে। তারা সব ধরনের চালের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। তাদের কাছে চালের অর্ডার দিলে তারা বাড়তি রেট জানিয়ে দিচ্ছে। তাই সে দামেই কিনতে হচ্ছে এবং বিক্রিও করতে হচ্ছে বাড়তি দরে। আমরা মনে করি, সামগ্রিকভাবে সৃষ্ট পরিস্থিতি আমলে নিয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিশ্চিত করা জরুরি।

সর্বোপরি বলতে চাই, বারবার যদি চালের দাম বাড়তে থাকে তবে দিশাহারা পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে এমনটি স্বাভাবিক। এমন বিষয়ও উঠে এসেছে, প্রতিটি নিত্যপণ্যের দাম যেভাবে বাড়ছে তাতে জীবনযাপন করতে খুব কষ্ট হচ্ছে। একটি পণ্য কিনলে আরেকটি কেনার বাজেট থাকছে না। আমরা মনে করি, এ ক্ষেত্রে সামগ্রিক পরিস্থিতির ওপর নজরদারি বা নিয়ন্ত্রণ জোরদার করতে হবে। সংশ্লিষ্টদের বাজার মনিটরিংয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। চালের বাজার সহনীয় রাখতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা জারি থাকুক এমনটি প্রত্যাশিত।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<90046 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1