শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে ব্যয়বহুল

ভোগবাদী মানসিকতা পরিহার করতে হবে
নতুনধারা
  ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০০:০০

বসবাসের জন্য দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে ব্যয়বহুল দেশ বাংলাদেশ আর বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল দেশ সুইজারল্যান্ড। সিইও ওয়ার্ল্ড ম্যাগাজিনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে কম ব্যয়ে বসবাস করা যায় পাকিস্তানে। এরপরই রয়েছে আফগানিস্তান ও ভারত। বিশ্বের ব্যয়বহুল দেশের মধ্যে ৯টি ইউরোপের, পাঁচটি এশিয়ার, একটি উত্তর আমেরিকার, আফ্রিকার একটি, ক্যারিবিয়ান দুটি এবং ওশেনিয়া অঞ্চলের দুইটি দেশ রয়েছে। সুইজারল্যান্ডের পর বিশ্বের ব্যয়বহুল দেশের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে নরওয়ে, তৃতীয় আইসল্যান্ড, চতুর্থ জাপান, পঞ্চম ডেনমার্ক, ষষ্ঠ বাহামাস, সপ্তম লুক্সেমবার্গ, অষ্টম ইসরায়েল, নবম সিঙ্গাপুর এবং দশম দক্ষিণ কোরিয়া। মানদন্ডগুলো হলো- জীবনযাত্রার ব্যয়, বাসাভাড়া, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যপণ্যের দাম, খাবারের দাম এবং নাগরিকদের পণ্য ক্রয় ক্ষমতা।

এ কথা কোনোভাবেই অস্বীকার করার উপায় নেই, বাংলাদেশের মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় অনেক বেশি। এ দেশের সচ্ছল পরিবার ভোগবাদী জীবনযাপনে অভ্যস্ত। দেশের উচ্চবিত্তরা এই কাতারে শীর্ষে রয়েছে। একাধিক বাড়ি, ফ্ল্যাট, গাড়ি ও ব্যাংকে কোটি কোটি টাকা রয়েছে এদের। এদের মধ্যে মিতব্যয়ী মানসিকতা নেই। আবার অনেকেই অবৈধ উপায়ে অর্থ উপার্জন করার কারণে টাকাকে টাকা মনে করছে না, দেদারছে খরচ করছে। এর কুপ্রভাব পড়ছে সমাজে। মূলত অসুস্থ ও অসম পুঁজি বিকাশের কারণে দেশের মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় লাগামহীনভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।

এটা সত্য, মানুষের উপার্জন ও ক্রয় দুটোই আগের তুলনায় বেড়েছে। তবে গ্রামের চেয়ে শহরের জীবনযাত্রার ব্যয় অনেক বেশি। এ ছাড়াও এ দেশের মানুষ ভোজনরসিক ও বিলাসী জীবনযাপনে অভ্যস্ত। সঞ্চয়ী মানোভাব একেবারে কম। শহর বা নগরে বাসাভাড়া অত্যধিক, যানবাহনের ভাড়াও বেশি। আর নিত্যপণ্যের কথা তো বলাই বাহুল্য। এত সীমাবদ্ধতার মাঝেও বাংলাদেশের উন্নতি হয়েছে। সামাজিক অর্থনৈতিক সূচকে ভারত ও পাকিস্তানকে পেছনে ফেলেছে বাংলাদেশ।

\হস্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশ এতটাই আর্থিকভাবে দুর্বল ছিল, মার্কিন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ও রাজনীতিবিদ হেনরি কিসিঞ্জার এই দেশকে একটি 'তলাবিহীন ঝুড়ি' হিসেবে অ্যাখ্যা দিয়েছিলেন। ১৯৭১ সালের সেই বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হয়েছে। আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হয়েছেন অজোপাড়া গ্রামের গরিব-দুঃখী মানুষও। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থা আগের থেকে অনেক ভালো। এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, বর্তমানে দেশটির জিডিপি ৮ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।

যতই দিন যাচ্ছে বাংলাদেশ উন্নয়ন অগ্রগতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। দেশের সাধারণ মানুষের অর্থনৈতিক সক্ষমতা বেড়েছে। একাত্তরের বাংলাদেশ আর বর্তমান বাংলাদেশ এক নয়। দেশ এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ, দেশের বিদু্যৎ সংকট সিংহভাগই কেটে গেছে। দারিদ্র্য বিমোচনের ক্ষেত্রে বর্তমান শেখ হাসিনা সরকার চ্যালেঞ্জিং ভূমিকা পালন করেছে। বর্তমান সরকার দেশের ঈপ্সিত প্রবৃদ্ধির ভিত্তি রচনা করতে সক্ষম হয়েছে। রেমিট্যান্স প্রাপ্তির হারও অনেক বেড়েছে এবং এ ক্ষেত্রে বাজেটে বিশেষ সুবিধা দেয়া হয়েছে। মাতৃমৃতু্য ও শিশুমৃতু্যর হার কমেছে। তথ্যপ্রযুক্তিতে, নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ অনেক এগিয়েছে। বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু বেড়েছে। সুখি দেশের তালিকায় বাংলাদেশ আশাব্যঞ্জক অবস্থানে রয়েছে।

\হশিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি ও ক্রীড়াসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশকে একটি সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলায় পরিণত করতে 'ভিশন-২০২১' ও 'ভিশন-২০৪১' কর্মসূচি গ্রহণ করেছে সরকার- যা সফল হওয়ার পথে। শুধু দেশেই নয়- আন্তজার্তিক অঙ্গনেও এর স্বীকৃতি মিলেছে। আমাদের এই অর্জন ধরে রাখতে হবে। তবে বাংলাদেশ আরো এগিয়ে যেতে পারতো। এ ক্ষেত্রে দুর্নীতি বড় বাধা। দুর্নীতির রাহুগ্রাস থেকে বাংলাদেশ এখনো মুক্ত হতে পারেনি। আমরা মনে করি, এশিয়ার সবচেয়ে ব্যয়বহুল দেশের অভিধা থেকে মুক্ত হতে পারলে দেশ আরো এগিয়ে যাবে। আমরা আশাবাদী।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<89112 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1