বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
সড়ক দুর্ঘটনা কি অপ্রতিরোধ্য?

৬ জেলায় ১০ জনের মৃতু্য

নতুনধারা
  ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০০:০০

একের পর এক সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছেই। আর এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, দুর্ঘটনায় মৃতু্যও থেমে নেই। সঙ্গত কারণেই এমন পরিস্থিতি কতটা উদ্বেগের এবং ভয়ানক বাস্তবতাকে স্পষ্ট করে তা আমলে নেওয়া জরুরি। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল যে, সড়ক দুর্ঘটনায় ছয় জেলায় অন্তত ১০ জন প্রাণ হারিয়েছেন। রোববারে মোটরসাইকেলকে সাইড দিতে গিয়ে সিরাজগঞ্জে যাত্রীবাহী বাস খাদে পড়ে নারীসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। ফরিদপুরে ট্রাকের চাপায় দুই মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছে একইদিনে। নাটোরের সিংড়ায় ট্রাক ও মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে মোটরসাইকেল চালক এক শিক্ষক নিহত হয়েছে। এ ছাড়া শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে ট্রাকচাপায় এক রিকশাচালক এবং সাতক্ষীরা-যশোর সড়কের ছয় ঘরিয়ায় পরিবহণের ধাক্কায় ট্রলিচালক নিহত হয়েছেন। ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের নারায়ণগঞ্জের ফতুলস্নায় কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় একজন নিহত হয়েছেন রোববারেই। আর নাটোরের বড়াইগ্রামে বালু বোঝাই ট্রাকের নিচে চাপা পড়ে এক আহত যুবকের চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃতু্য হয়েছে শনিবার সন্ধ্যায়।

আমরা বলতে চাই, যখন সড়ক পথে দুর্ঘটনার এমন চিত্র পরিলক্ষিত হচ্ছে- তখন পরিস্থিতি কতটা ভয়ানক তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এই মৃতু্যর বিভীষিকা এমন, যেন সড়ক পথ একটা মৃতু্যর ফাঁদ! সঙ্গত কারণেই সামগ্রিক বাস্তবতা অনুধাবন করে সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার দুর্ঘটনার কারণগুলো আমলে নেওয়া এবং সেই মোতাবেক কঠোর পদক্ষেপ নিশ্চিত করা। নানা ধরনের অব্যবস্থাপনা ও বেপরোয়া গতির কাছে হারিয়ে যাচ্ছে তরতাজা প্রাণ, গণপরিবহণে অসুস্থ প্রতিযোগিতা এবং রেষারেষির কারণেও দুর্ঘটনা বাড়ছে। ফলে সড়ককে নিরাপদ করতে হলে সার্বিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ ও তার সুষ্ঠু বাস্তবায়নে কাজ করার বিকল্প নেই।

সংশ্লিষ্টদের আমলে নেওয়া দরকার, এর আগে পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে এমন তথ্যও উঠে এসেছিল যে, সারাদেশে গত বছর ৫ হাজার ৫১৬টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে ৭ হাজার ৮৫৫ জনের মৃতু্য হয়েছে। আহত হয়েছে ১৩ হাজার ৩৩০ জন। জাতীয় ও আঞ্চলিক সংবাদপত্র এবং অনলাইন পোর্টালে প্রকাশিত প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে এ তথ্য জানিয়েছিল বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। এ ছাড়া এটাও আমলে নেওয়া দরকার, জানা গেছে ২০১৯ সালের সড়ক দুর্ঘটনার সংখ্যা ছিল আগের বছর ২০১৮ সালের প্রায় সমান। আমরা মনে করি, সামগ্রিক এই পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে সড়ক দুর্ঘটনার ভয়াবহতা আমলে নিতে হবে এবং যত দ্রম্নত সম্ভব এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। একের পর এক সড়ক দুর্ঘটনা ঘটতে থাকবে আর ঝরে যাবে একেকটা তরতাজা প্রাণ, এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। প্রসঙ্গত আমরা উলেস্নখ করতে চাই, বিভিন্ন সময়েই সড়ক দুর্ঘটনা রোধে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে, এ ছাড়া সড়ক দুর্ঘটনার কারণ এবং দুর্ঘটনা রোধে সুপারিশও সামনে এসেছে নানা সময়ে। বারবার আলোচনায় এসেছে সড়ক পথের ভয়াবহতা। কিন্তু বাস্তবতা এটাই যে, সড়ক দুর্ঘটনা রোধ হচ্ছে না এবং দুর্ঘটনায় বাড়ছে লাশের মিছিল- যা অত্যন্ত পরিতাপের জন্ম দেয়।

আমরা বলতে চাই, সড়ক দুর্ঘটনার কারণ এবং সড়ক দুর্ঘটনা রোধে করণীয় নির্ধারণ সাপেক্ষে সুষ্ঠু বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, যোগাযোগ ব্যবস্থারও উন্নতি হচ্ছে ক্রমাগত। অথচ সড়ক যদি নিরাপদ না হয় তবে যোগাযোগ সহজ হলেও তার সুফল অনিশ্চিতই থেকে যাবে- যা কাম্য নয়। ফলে সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে সড়ক দুর্ঘটনা রোধে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে সংশ্লিষ্টদের তৎপরতা জরুরি। সড়ক দুর্ঘটনা রোধে যথাযথ পদক্ষেপ নিশ্চিত হোক এমনটি আমাদের প্রত্যাশা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<88960 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1