মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

শুদ্ধি অভিযানের এক মাস

অব্যাহত রাখতে হবে
নতুনধারা
  ২০ অক্টোবর ২০১৯, ০০:০০

ক্যাসিনো কেলেঙ্কারি ফাঁস হয়ে যাওয়ার পর দুর্নীতিবিরোধী শুদ্ধি অভিযান চলছে। ইতোমধ্যে অনেকেই ধরা পড়েছেন। তাদের বিভিন্ন অপরাধ বেরিয়ে এসেছে। এরা বেশির ভাগই ক্ষমতাসীন দল ও অঙ্গসংগঠনের নেতা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ইতোমধ্যে বিভিন্ন খাতের অরাজকতা, বিশৃঙ্খলা ও অবৈধ অর্থের বিরুদ্ধে তৎপরতা শুরু করেছে সংশ্লিষ্ট আইন প্রয়োগকারী বিভিন্ন সংস্থা। তবে এ বিশেষ অভিযানে সরাসরি দায়িত্ব পালন করছে এলিট ফোর্সর্ যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন র্(যাব)। গত ১৮ সেপ্টেম্বর রাজধানীতে অবৈধ ক্যাসিনোর বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করের্ যাব, যাকে বলা হচ্ছে সরকার ঘোষিত শুদ্ধি অভিযান। এ অভিযান শুরু থেকেই পেয়েছে ব্যাপক জনসমর্থন, জনমনে সৃষ্টি করেছে আস্থা। এক মাস ধরে চলমান এ অভিযানে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি (বহিষ্কৃত) ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটসহ গ্রেপ্তার করা হয়েছে ১৮ জনকে। নগদ সাড়ে আট কোটি টাকাসহ জব্দ করা হয়েছে প্রায় ১৬৬ কোটি টাকার এফডিআর। এ পর্যন্ত ১১টি ক্যাসিনো/ক্লাবে অভিযান পরিচালনা করেছের্ যাব, যার মধ্যে রাজধানীতে আটটি ও চট্টগ্রামে রয়েছে তিনটি। এসব ক্লাব থেকে উদ্ধার করা ক্যাসিনো সামগ্রীর দাম কয়েক কোটি টাকা। সব মিলিয়ে গত এক মাসে ক্লাব, বাসাবাড়ি ও অফিসসহ মোট ১৯টি স্থানে অভিযান চালানো হয়েছে। আমরা মনে করি এই অভিযান অব্যাহত রাখা উচিত।

আমাদের দুর্ভাগ্য দুর্নীতির রাহুগ্রাস থেকে বাংলাদেশ এখনো মুক্ত হতে পারেনি। বাংলাদেশ এক সময় দুর্নীতির জন্য পর পর পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। দুর্নীতির সেই কলঙ্ক-তিলক মোচন করতে আমরা সক্ষম হয়েছি এটা যেমন সত্য, একইভাবে সত্য যে, আমরা সমাজ-রাষ্ট্র থেকে দুর্নীতি নির্মূল করতে পারিনি। যার কারণে আমাদের আশানুরূপ উন্নতির অগ্রগতি হয়নি। এটা আমাদের জাতীয় ব্যর্থতা। দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ ব্যাপারে তার রয়েছে জিরো টলারেন্স নীতি। ইতোমধ্যে তিনি দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন। বাংলাদেশ আরও এগিয়ে যেতে পারত। এ ক্ষেত্রে দুর্নীতি বড় বাধা। দুর্নীতির কারণেই আমরা পিছিয়ে রয়েছি। বিশেষ করে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দুর্নীতিতে এমনভাবে জড়িয়ে পড়েছেন, তাদের বেতন দ্বিগুণ করেও কোনো লাভ হয়নি। তাদের অতি লোভী মানসিকতার কোনো পরিবর্তন হয়নি। সরকারি কোনো কাজের জন্য দশ জায়গায় ধরনা দিতে হয়। ঘুষ দিতে হয় প্রতিটি টেবিলে। এই চিত্র হতাশাজনক। তবে এখন যে কেঁচো খুঁড়তে সাপ বেরিয়ে আসছে এটা তো নতুন কিছু নয়। দুর্নীতি বাংলাদেশে আগেও ছিল এখনো আছে। এখন যে দেশব্যাপী শুদ্ধি অভিযান চলছে, ঠিকমতো তলস্নাশি চালালে এমন শত শত নেতার ঘর থেকে টাকার খনি বেরিয়ে আসবে। তা হলে ব্যাংকের বাইরে কী পরিমাণ টাকা রয়েছে এবং কত টাকা পাচার করা হয়েছে ভাবতে অবাক লাগে। প্রশ্ন হচ্ছে, বেঁচে থাকার জন্য মানুষের কত টাকা প্রয়োজন। দেশের সবাই যদি অবৈধভাবে কোটিপতি হতে চায় তা হলে এটা একটা বিপজ্জনক বার্তা। দুর্নীতি নির্মূল করা সম্ভব হলে বাংলাদেশ হবে বিশ্বের বুকে একটি মর্যাদাশালী ও গর্বিত দেশ। আমাদের সেদিকেই অগ্রসর হওয়া জরুরি এবং এর কোনো বিকল্প নেই।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<71840 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1