বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

ছদ্মবেকার সোয়া কোটি

কার্যকর পদক্ষেপ নিন
নতুনধারা
  ১৫ অক্টোবর ২০১৯, ০০:০০

২০১৭ সালের তুলনায় ২০১৮ সালে পুরুষের চেয়ে নারীর কর্মসংস্থান বেশি হয়েছে। এ ছাড়া এক বছরের ব্যবধানে নারী বেকার কমেছে সাড়ে চার লাখ আর পুরুষ বেকার কমেছে দেড় লাখ। স্বাভাবিকভাবেই এই বিষয়টি ইতিবাচক। কিন্তু আমলে নেয়া সমীচীন- এখনো ১২ লাখ পুরুষ আর ৯ লাখ নারী বেকার এবং এই ২১ লাখ বেকার সপ্তাহে এক ঘণ্টাও মজুরির বিনিময়ে কাজ পাননি- পরিকল্পনা কমিশনের একটি প্রতিবেদনে এমন চিত্র উঠে এসেছে- যা হতাশার বলেই প্রতীয়মান হয়।

তথ্য মতে, পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) প্রকাশিত 'স্টাডি অন এমপেস্নায়মেন্ট, প্রোডাক্টিভিটি অ্যান্ড সেক্টরাল ইনভেস্টমেন্ট ইন বাংলাদেশ' শীর্ষক প্রতিবেদনে দেশের বেকারত্বের এই নতুন চিত্র পরিলক্ষিত হয়। এ ক্ষেত্রে উলেস্নখ্য যে, সাধারণত বাংলাদেশ পরিসংখ্যান বু্যরো নির্দিষ্ট সময় পর পর বেকারত্ব, শ্রমশক্তি, কর্মজীবীর সংখ্যা- এসব তথ্য-উপাত্ত সরকারিভাবে প্রকাশ করে, কিন্তু জিইডি প্রথমবারের মতো এ ধরনের জরিপ করল। আমরা বলতে চাই, জরিপে আসা তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ সাপেক্ষে সংশ্লিষ্টদের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। কেননা, এক বছরের ব্যবধানে নারী-পুরুষ বেকারের সংখ্যা কমলেও ২১ লাখ বেকার সপ্তাহে এক ঘণ্টাও মজুরির বিনিময়েও কাজ পাননি- এই বিষয়টি এড়ানো যাবে না। ফলে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে করণীয় নির্ধারণ করতে হবে সংশ্লিষ্টদেরই।

জিইডির সমীক্ষা প্রতিবেদনে উঠে এসেছে যে- দেশে সার্বিকভাবে বেকারের সংখ্যা কমে ২১ লাখে নেমে এসেছে। ২০১৮ সালের শেষে বেকারের এই হিসাবটি করেছে জিইডি। তবে এ ক্ষেত্রে উলেস্নখ করা দরকার, বিবিএসের শ্রমশক্তি জরিপ অনুযায়ী, ২০১৭ সালে দেশে ২৭ লাখ বেকার ছিল। এর অর্থ দাঁড়ায় এক বছরের ব্যবধানে বেকারের সংখ্যা কমেছে ৬ লাখ। আমরা বলতে চাই, এটিও আমলে নিতে হবে- জিইডির প্রতিবেদন অনুযায়ী, এক শ্রেণির তরুণ-তরুণী আছেন ১৫ থেকে ২৯ বছর বয়সী, যারা কাজের মধ্যেও নেই আবার প্রশিক্ষণের মধ্যেও নেই- এরা আসলে ছদ্মবেকার। আর এই ছদ্মবেকারের সংখ্যা ১ কোটি ২৫ লাখ। প্রতিবেদন মতে, এই বিশাল জনগোষ্ঠীকে কাজে লাগানো যাচ্ছে না। এ ধরনের উচ্চ হারের নিষ্ক্রিয় তরুণগোষ্ঠীর কারণে জনসংখ্যা বোনাসের সুযোগ হুমকির মুখে পড়তে পারে এমন আশঙ্কার বিষয়ও উঠে এসেছে। ফলে এই বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে আমলে নিতে হবে। মনে রাখা দরকার, এই বিশাল সংখ্যক ছদ্মবেকারদের কাজে না লাগালে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে সর্বত্রই এমন আশঙ্কা অমূলক নয়। এ ছাড়া সংশ্লিষ্টদের বিবেচনায় নিতে হবে যে, ছদ্মবেকারদের বাইরেও নিজের কাজ নিয়ে সন্তুষ্ট নয় কিংবা পচ্ছন্দের কাজ পাচ্ছেন না এমন কর্মজীবীর সংখ্যাও কম নয়। জিইডির হিসাব মতে সারাদেশে এমন এক কোটি ১৫ লাখের বেশি মানুষ আছেন- যাদের কেউ টিউশনি করেন কিংবা চাকরি হারানোর শঙ্কায় আছেন।

সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, জিইডির প্রতিবেদনে উঠে আসা তথ্যগুলো পর্যবেক্ষণ করুন এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে কার্যকর পদক্ষেপ নিশ্চিত করুন। ছদ্মবেকারের মতো বিশাল জনগোষ্ঠীকে নিয়ে সুপরিকল্পিত উদ্যোগ গ্রহণ ও তার সুষ্ঠু বাস্তবায়ন নিশ্চিত করুন। এ ছাড়া সার্বিকভাবে যে বিষয়গুলো উঠে এসেছে সেগুলো পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষেও পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। ভুলে যাওয়া যাবে না, দেশের অগ্রগতি অব্যাহত রাখতে হলে কর্মসংস্থানের বিষয়টি অত্যন্ত জরুরি। বেকারের সংখ্যা কমেছে এটা স্বস্তির, কিন্তু একইসঙ্গে যে বিশাল ছদ্মবেকার জনগোষ্ঠী আছে এবং নিজেদের কাজ নিয়ে সন্তুষ্ট নয় এমন অনেক কর্মজীবী আছে- এগুলোও আমলে নিতে হবে। সামগ্রিক চিত্র বিবেচনায় নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিশ্চিত হোক এমনটি কাম্য।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<71179 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1