শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

দিশাহারা ঝিলপাড় বস্তিবাসী

পুনর্বাসনে দ্রম্নত পদক্ষেপ নিন
নতুনধারা
  ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০০:০০

গত ১৬ আগস্ট মিরপুরের ঝিলপাড় বস্তির (চলন্তিকা বস্তি) ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে আড়াই হাজার ঘর ভস্মীভূত হয়েছিল। চলন্তিকা মোড় থেকে রূপনগর আবাসিক এলাকা পর্যন্ত ঝিলের ওপর কাঠের পাটাতন দিয়ে ছোট ছোট ঘর বানিয়ে গড়ে তোলা হয়েছিল এই বস্তিটি। আগুন লাগার পর ফায়ার সার্ভিসের ২০টি ইউনিটের ১১৫ জন কর্মী কয়েক ঘণ্টার পরিশ্রমে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, সেই ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে পুড়ে যাওয়া বস্তির বাসিন্দাদের ঠাঁই এখনো খোলা আকাশের নিচে। অগ্নিকান্ডে সব হারিয়ে দিশাহারা বস্তিবাসীদের মাথা গোঁজার জায়গা এখনো হয়নি। কেউ খোলা আকাশের নিচে, কেউ অন্যের বাড়িতে, কেউবা রিকশা-ভ্যানেই রাত্রিযাপন করছেন।

আমরা বলতে চাই, সৃষ্ট পরিস্থিতির ভয়াবহতা অনুধাবন করা জরুরি। কেননা হঠাৎ করে এমন পরিস্থিতি নেমে এলে তার ফলে যে দুর্ভোগ সৃষ্টি হয় তা অবর্ণনীয়। যদিও এমন বিষয় উঠে এসেছে যে, বস্তিবাসীর পুনর্বাসনের জন্য বাউনিয়া বাঁধে কাজ শুরু হয়েছে; কিন্তু প্রকাশিত খবরে জানা যাচ্ছে- অগ্নিকান্ডের এক মাস কেটে গেলেও মিরপুর-৬ ঝিলপাড় বস্তিবাসীর পুনর্বাসনে বাউনিয়া বাঁধে তেমন কোনো কার্যক্রমের অগ্রগতি চোখে পড়েনি। আমরা মনে করি, সংশ্লিষ্টদের এই বিষয়টি আমলে নিতে হবে এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে যত দ্রম্নত সম্ভব কার্যকর পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া কোন প্রক্রিয়ায় সেখানে বস্তিবাসীর জায়গা বা ঘর বরাদ্দ দেয়া হবে সে বিষয়েও বস্তিবাসীরা কিছু জানেন না বলে জানিয়েছেন।

প্রসঙ্গত উলেস্নখ্য, সম্প্রতি সংসদ ভবনে দুর্যোগব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির ৫ম বৈঠকেও মিরপুর-৬ ঝিলপাড় বস্তির অগ্নিকান্ডে ক্ষতির বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সেখানে উলেস্নখ করা হয়েছে, ঝিলপাড় বস্তিতে আগুনে ২ হাজার ২৪৮টি ঘর, ১ হাজার ৯৮৮টি পরিবার এবং ৬ হাজার ৭৫৪ জন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমরা বলতে চাই, একদিকে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় সব হারিয়ে দিশাহারা বস্তিবাসীদের মাথা গোঁজার জায়গা হয়নি- খোলা আকাশের নিচে, কেউ অন্যের বাড়িতে, কেউবা রিকশা-ভ্যানেই রাত্রিযাপন করছেন; অন্যদিকে এখনো পুনর্বাসন না হওয়ার বিষয়টি সামনে আসছে- যা অত্যন্ত উৎকণ্ঠাজনক বাস্তবতাকে স্পষ্ট করে। আমরা মনে করি, সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে সৃষ্ট পরিস্থিতির ভয়াবহতা অনুধাবন করে যত দ্রম্নত সম্ভব কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ ও তার যথাযথ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে সংশ্লিষ্টদেরই।

মনে রাখা দরকার, অগ্নিকান্ড একই সঙ্গে জীবন ও সম্পদবিনাশী। দেশে প্রায়ই অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটলেও এ ব্যাপারে করণীয় নির্ধারণ, উদ্ধার প্রক্রিয়া ও জনসচেতনতা যতটুকু থাকা দরকার, তা নেই এমন বিষয়ও আলোচনায় এসেছে। আর প্রসঙ্গত এটাও বলা দরকার, বিভিন্ন সময়েই বস্তিতে অগ্নিকান্ডের ভয়াবহতা সামনে এসেছে। চলন্তিকার বস্তির অগ্নিকান্ডের ঘটনাটিকে সামনে রেখে আমরা বলতে চাই, অগ্নিকান্ডের কারণ শনাক্ত করা এবং পুনরাবৃত্তি রোধে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। নানা ধরনের অনিয়ম, অবৈধ গ্যাস ও বিদু্যতের সংযোগ, পস্নাস্টিক গ্যাসের লাইনসহ সার্বিক বিষয়গুলোকে আমলে নিতে হবে। মনে রাখতে হবে যে, অগ্নিকান্ডসহ অন্যান্য দুর্যোগের সম্ভাব্য বিপদ ও ক্ষতি নূ্যনতম পর্যায়ে রাখতে হলে দীর্ঘমেয়াদি প্রস্তুতি নিয়ে অগ্রসর হওয়া উচিত।

সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, বস্তিসহ বিভিন্ন স্থানে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। এ ক্ষেত্রে উলেস্নখ করা দরকার, বিশ্বের অনেক দেশে অগ্নিকান্ডের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে উন্নত প্রযুক্তির সহায়তায় স্বয়ংক্রিয়ভাবে গ্যাস ও বিদু্যৎ সংযোগ বন্ধ করার প্রযুক্তির ব্যবহার চালু হয়েছে। বাংলাদেশেরও এ পদ্ধতি অনুসরণ করার বিষয়টি ভাবতে হবে। সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নেয়ার পাশাপাশি, মিরপুরের চলন্তিকা বস্তিবাসীর পুনর্বাসনে দ্রম্নত পদক্ষেপ নিশ্চিত হোক এমনটি কাম্য।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<67699 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1