মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১
পাঠক মত

রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান হোক

দিলীপ কুমার আগরওয়ালা ঢাকা
  ২০ জুলাই ২০১৯, ০০:০০

বাংলাদেশে এক বছরের বেশি সময় ধরে অবস্থান করছে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা। মিয়ানমার মুখে তাদের নাগরিকদের ফেরত নেয়ার কথা বললেও এজন্য যথোপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি না হওয়ায় রোহিঙ্গারা ঝুঁকি নিয়ে দেশে ফিরতে রাজি হচ্ছে না। রোহিঙ্গাদের ফেরত নেয়ার ব্যাপারে সে দেশের আদৌ আগ্রহ আছে কিনা তা নিয়ে ইতোমধ্যে সংশয় সৃষ্টি হয়েছে। বাংলাদেশ প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখেই রোহিঙ্গা সমস্যার হাত থেকে রক্ষা পেতে চায়। যে কারণে তারা মিয়ানমারের সঙ্গে চুক্তিতেও আবদ্ধ হয়েছে। কিন্তু প্রতিবেশী দেশের কথা ও কাজে মিল না থাকায় রোহিঙ্গাদের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন জটিল হয়ে উঠছে। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, ভূরাজনৈতিক কারণে বাংলাদেশের দুই বড় প্রতিবেশী ভারত ও চীন এ ইসু্যতে ধরি মাছ না ছুঁই পানি নীতি গ্রহণ করেছে। রোহিঙ্গাদের স্বদেশে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে উভয় দেশ নীতিগত সমর্থনের কথা জানালেও মিয়ানমারের সঙ্গে তাদের যে অর্থনৈতিক স্বার্থ জড়িত সে বিষয়টিও হিসাবে রাখছে। ফলে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর সমর্থনই বাংলাদেশের জন্য ভরসা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে ওয়াশিংটনের সমর্থন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবে নিছক এই সমর্থনে সন্তুষ্ট থাকার অবকাশ নেই। ভূরাজনৈতিক বাস্তবতার কারণেই দুই প্রতিবেশী বন্ধুদেশ চীন ও ভারতকে আরও সক্রিয় করা এখন বাংলাদেশের দায়িত্ব হয়ে দাঁড়িয়েছে। আশা করা যায়, প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন চীন সফরকালে এ বিষয়ে বেইজিংয়ের সমর্থন পাওয়া যাবে। ভারতের সমর্থন পেতেও সরকারকে সক্রিয় হতে হবে। আমরা আশা করব, বাংলাদেশকে ১১ লাখের বেশি বিদেশি নাগরিকের বোঝা থেকে পরিত্রাণ দিতে চীন ও ভারত সহায়তার হাত বাড়াবে। এ অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতার স্বার্থে রোহিঙ্গা সমস্যার শান্তিপূর্ণ ও সম্মানজনক সমাধান সবারই কাম্য হওয়া উচিত। বন্ধুত্বের স্বার্থেই তারা এ ব্যাপারে সুমতি ও সুবিবেচনার পরিচয় দেবেন- এমনটিই প্রত্যাশিত। বাংলাদেশে ১১ লাখেরও অধিক রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী আশ্রিত। বাংলাদেশের মতো একটি জনবহুল রাষ্ট্রকে এই বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গাদের ভরণপোষণের ব্যবস্থা করাও অত্যন্ত কঠিন। এ ব্যাপারে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতা থাকলেও মোটা দাগে বাংলাদেশকেই ব্যয়ভার বহন করতে হচ্ছে। বলার অপেক্ষা রাখে না, বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গারা এ দেশে আশ্রিত থাকায় নানামুখী চাপে আছে বাংলাদেশ। ইতোমধ্যে আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রসহ নানান স্তরে এর বিরূপ প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। রোহিঙ্গা বাংলাদেশের পাসপোর্ট তৈরি করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যাচ্ছে, স্থানীয়ভাবে নানান অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে। এর আগে রোহিঙ্গা আশ্রিত এলাকায় খুনের ঘটনা ঘটেছে, যার সঙ্গে রোহিঙ্গারা জড়িত বলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিশ্চিত করেছিল। ফলে রোহিঙ্গা সমস্যা সার্বিকভাবে বাংলাদেশের জন্য কতটা ভয়াবহতা নিয়ে উপস্থিতি হয়েছে তা স্পষ্ট। আমরা মনে করি, এ অবস্থার সুষ্ঠু সমাধানের উদ্যোগ নেয়া অপরিহার্য। সর্বোপরি বলতে চাই, মিয়ানমার আন্তর্জাতিক আইন অমান্য করে নিজেদের খেয়াল-খুশিমতো, যা ইচ্ছে তাই করবে এটা কিছুতেই সমথর্নযোগ্য হতে পারে না। এ জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসতে হবে। রোহিঙ্গাদের নিজের দেশে নিরাপদে প্রত্যাবর্তনের ব্যবস্থা করতে হবে। যত দ্রম্নত সম্ভব রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান হোক, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<59065 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1