শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
নৈরাজ্যের শিকার যাত্রীরা

যথাযথ উদ্যোগ নিন

নতুনধারা
  ২০ মে ২০১৯, ০০:০০

যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন তখনই ফলপ্রসূ হতে পারে, যখন যাত্রীরা যাত্রাপথে নিরাপদ বোধ করবেন এবং কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে পৌঁছাবেন দুর্ভোগ ছাড়া। এ ক্ষেত্রে যদি এমন খবর সামনে আসে যে, যাত্রীরা যাতায়াতের ক্ষেত্রে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন তবে বিষয়টি সন্দেহাতীতভাবেই উদ্বেগজনক বাস্তবতাকে স্পষ্ট করে; যা আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ সমীচীন বলেই প্রতীয়মান হয়। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, রমজান মাসে ঢাকায় গণপরিবহনের ৯৫ শতাংশ যাত্রী প্রতিদিন যাতায়াতের ক্ষেত্রে দুর্ভোগের শিকার হন। গণপরিবহন ব্যবস্থার ওপর তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেন ৯০ শতাংশ যাত্রী। আর অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্যের শিকার হন ৯৮ শতাংশ যাত্রী। মূলত বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির এক পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। রাজধানীর ১৫টি এলাকা ও গুরুত্বপূর্ণ মোড় ঘুরে সরেজমিন পর্যবেক্ষণ করে প্রতিবেদনটি করা হয়। শনিবার যাত্রী কল্যাণ সমিতির পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে এই পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনটি পাঠানো হয়েছে।

আমরা বলতে চাই, রাজধানী ঢাকায় গণপরিবহনের ৯৫ শতাংশ যাত্রীর প্রতিদিন যাতায়াতের ক্ষেত্রে দুর্ভোগের শিকার হওয়া, গণপরিবহন ব্যবস্থার ওপর তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ ৯০ শতাংশ যাত্রীর। আর অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্যের শিকার যদি হন ৯৮ শতাংশ যাত্রী- তবে এই পরিস্থিতি ভয়ানক। যা এড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার, যত দ্রম্নত সম্ভব কার্যকর পদক্ষেপ নিশ্চিত করা। কেননা যাত্রীরা যদি দুর্ভোগের শিকার হন তবে তা ভীতিপ্রদ। মানুষ তার প্রয়োজনে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যাতায়াত করবে এটাই স্বাভাবিক। ফলে এ ক্ষেত্রে যাত্রীর সামগ্রিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিকল্প থাকতে পারে না। এ ছাড়া অতিরিক্ত ভাড়ার বিষয়টিও আমলে নিয়ে দোষীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থাগ্রহণ করা আবশ্যক। কেননা গণপরিবহন ব্যবস্থা যদি সুষ্ঠু না হয় তবে পরিস্থিতির উন্নয়ন ও যোগাযোগ ব্যবস্থার সুফল পাওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।

আমলে নেয়া দরকার, পর্যবেক্ষণকালে এমন বিষয়ও উঠে এসেছে যে, ৬৮ শতাংশ যাত্রী চলন্ত বাসে ওঠানামা করতে বাধ্য হন। সিটিং সার্ভিসের নামে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়েও ৩৬ শতাংশ যাত্রীকে দাঁড়িয়ে যেতে বাধ্য করা হয়। হয়রানির শিকার হলেও অভিযোগ কোথায় করতে হয় জানেন না ৯৩ শতাংশ যাত্রী। আবার ৯০ শতাংশ যাত্রী মনে করেন, অভিযোগ করে কোনো প্রতিকার পাওয়া যায় না বলেই তারা অভিযোগ করেন না। এ ক্ষেত্রে অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় হলো, জানা যাচ্ছে- এসব ভোগান্তি নিরসনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তৎপরতা লক্ষ্য করা যায়নি! আমরা মনে করি, গণপরিবহন ব্যবস্থার আধুনিকায়ন এবং যাত্রীবান্ধব করতে হলে এসব অভিযোগের সুরাহা করতে হবে এবং যাত্রীরা কোনোভাবেই যেন ভোগান্তি ও হয়রানির শিকার না হন সেটি নিশ্চিত করতে হবে। এটাও বিবেচনায় নেয়া দরকার, সিএনজির ভাড়া প্রসঙ্গে পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে উলেস্নখ করা হয়েছে, নগরীতে চলাচলকারী সিএনজিচালিত অটোরিকশা শতভাগ চুক্তিতে চলাচল করছে। এতে মিটারের প্রায় তিন থেকে চার গুণ বেশি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। এ ছাড়া ইফতারের আগ মুহূর্তে যানজট, গণপরিবহন সংকটের কারণে নগরীর সাধারণ যাত্রীরা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। আর গণপরিবহন নৈরাজ্যে প্রথমবারের মতো যুক্ত হয়েছে রাইড শেয়ারিংয়ের নামে চলাচল করা মোটরবাইকগুলো এমন বিষয়ও সামনে এসেছে।

আমরা মনে করি, সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিতে হবে এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে কার্যকর ব্যবস্থাও নিশ্চিত করতে হবে। রাজধানীসহ দেশের পরিবহনব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থা সৃষ্টি এবং যাত্রীদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা হোক এমনটি কাম্য।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<50157 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1