শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

জাল মুদ্রা

কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে
নতুনধারা
  ২৭ মার্চ ২০১৯, ০০:০০

সারাদেশে জাল মুদ্রার ভয়াবহ বিস্তার লাভ করেছে। এই বিস্তারের ফলে দেশের অর্থনীতিকে এক বিপজ্জনক অবস্থায় ঠেলে দিয়েছে। কেবল দেশের অর্থনীতিকেই ঠেলে দিচ্ছে না, দেশের সাধারণ মানুষকেও বিপদের মধ্যে ঠেলে দিয়েছে, বিশেষ করে যারা জাল মুদ্রা চিনতে পারছে না। জাল মুদ্রার প্রযুক্তি যে হারে সহজলভ্য হয়েছে তাতে অল্প সময়ের মধ্যেই সারাদেশে ব্যাঙের ছাতার মতো জাল নোট তৈরির কারখানা গজিয়ে উঠবে এত কোনো সন্দেহ নেই। টাকা ছাপানোর ক্ষেত্রে কঠোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা না গেলে দেশের অর্থনীতি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠবে।

এক প্রতিবেদনে প্রকাশ, রাজশাহীতে বিদেশি মুদ্রা জাল চক্রের চার সদস্যকে আটক করেছে মহানগর গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পুলিশ। সোমবার সকালে মহানগরের লক্ষ্ণীপুর ও রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের প্রধান ফটকের সামনে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। পরে তাদের মহানগর ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। আটক ওই চার সদস্যের কাছ থেকে দুটি আসল রিয়াল ও ২০১টি জাল সৌদি রিয়াল উদ্ধার করা হয়েছে। এরা সংঘবদ্ধ চক্র। তারা জাল সৌদি রিয়াল তৈরি ও ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। মানুষের সরলতার সুযোগ নিয়ে তারা জাল সৌদি রিয়াল বিক্রি করে আসছিল। এর আগে গত ১০ মার্চ আট লক্ষাধিক জাল টাকাসহ ডিবি পুলিশের হাতে ধরা পড়ে চার যুবক। এ সময় তাদের কাছ থেকে মোট ৮১২টি এক হাজার টাকার জাল নোট উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার হওয়া জাল টাকার সমমূল্য দাঁড়ায় আট লাখ ১২ হাজার টাকা। আমরা বিস্ময়ের সঙ্গে লক্ষ্য করে আসছি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে প্রায়ই জাল মুদ্রা প্রস্তুকারীরা ধরে পড়ে, আবার তারা আইনের ফাঁক গলে বেরিয়েও আসে। আইনের শিথিলতার কারণেই মূলত এ ঘটনা ঘটে থাকে।

এ কথা কোনোভাবেই অস্বীকার করার উপায় নেই যে, জাল নোটের প্রচলনটা অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে ভয়ঙ্কর হিসেবে দেখা দিয়েছে। অত্যন্ত সুকৌশলে জালিয়াতচক্র এ কাজ করে যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে দেশের কাগুজে মুদ্রার নিরাপত্তা নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন করে ভাবা উচিত। অসচেতন সাধারণ মানুষের পক্ষে জাল নোট চিহ্নিত করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। অবশ্য বাংলাদেশ ব্যাংক জাল নোট চিহ্নিত করণের ব্যাপারে প্রায়ই বিজ্ঞাপন দিচ্ছে জনসাধারণকে সচেতন করার জন্য। জাল নোটের বিড়ম্বনা সারা বিশ্বেই রয়েছে এবং বাংলাদেশ এর বাইরে নয়। তবে দেশ ধীরে ধীরে ডিজিটালাইজড হওয়াতে এ প্রবণতা কমে আসবে বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা।

তবে কোনো একক ব্যক্তির পক্ষে এ কাজ করা সম্ভব নয়। তথ্যানুযায়ী একটি গ্রম্নপ মুদ্রা তৈরি করে এবং অপর গ্রম্নপ এসব মুদ্রা পাইকারি বিক্রি করে। সুতরাং এদের খাটো করে দেখার কোনো সুযোগ নেই। এখনই সরকার এবং সংশ্লিষ্ট বিভাগকে জাল নোট প্রস্তুতকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া উচিত। এমনিতেই দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি খাতে আর্থিক অব্যবস্থাপনা ভর করেছে। উচ্চ মূল্যস্ফীতির বেড়াজালে বন্দি হয়ে পড়েছে দেশের সাধারণ মানুষ। এমতাবস্থায় জাল নোটের ভয়াবহ বিস্তারে সাধারণ মানুষের সংকট আরো ঘনীভূত হবে। জাল নোটের ভয়াবহ বিস্তার রোধে বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জাল মুদ্রা শনাক্তকারী মেশিন স্থাপনের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। সরকার যদি অবৈধ মুদ্রা তৈরি চক্রের হোতাদের দ্রম্নত আইনের আওতায় আনতে পারে তবে দেশব্যাপী জাল নোটের ভয়াবহ বিস্তার রোধ করা সম্ভব হবে না।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<42717 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1