শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

ডায়াবেটিস রোগীর ৪০ শতাংশ কিডনি আক্রান্ত

নতুনধারা
  ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০০:০০
আপডেট  : ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১০:১৩

বাংলাদেশ একটি জনসংখ্যাবহুল দেশ। সঙ্গত কারণেই জনসাধারণের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করা একটা বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের বিষয়। বলার অপেক্ষা রাখে না যে, চিকিৎসকের সংকট এবং প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির অভাব থেকে শুরু করে নানা ধরনের সংকটের বিষয় বিভিন্ন সময়েই পত্রপত্রিকায় উঠে এসেছে। এ ছাড়া চিকিৎসা ব্যয়ের কারণেও অনেক পরিবারই অভাব-অনটনকে মোকাবেলা করে সুচিকিৎসা নিতে পারে না এমন অভিযোগও আছে। আর এমতাবস্থায় যখন জানা যাচ্ছে যে, দেশের ডায়াবেটিস রোগীর ৪০ শতাংশ কিডনি রোগে আক্রান্ত হচ্ছে তখন বিষয়টি কোনোভাবেই এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই বলেই আমরা মনে করি। আমলে নেয়া সমীচীন, কিডনি ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি গত শনিবার রাজধানীর মিরপুরে কিডনি ফাউন্ডেশন বাংলাদেশে তিন দিনব্যাপী আয়োজিত এক সেমিনারে বলেছেন, 'ডায়াবেটিস হচ্ছে নীরব ঘাতক। এর মাধ্যমে মানবদেহে জটিল রোগ ধারণ করে। ডায়াবেটিসের কারণে মানুষের কিডনি পর্যন্ত নষ্ট হয়ে যায়। এ রোগে আক্রান্ত ৪০ শতাংশ মানুষ কিডনি রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।' আমরা বলতে চাই, যখন এমন বিষয়ও সামনে আসছে যে, বাংলাদেশে প্রতিনিয়ত কিডনি রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। উন্নত বিশ্বে ও আমাদের পাশ্বর্বর্তী দেশে (ভারত) কিডনি রোগের উন্নত মানের চিকিৎসাব্যবস্থা চালু হলেও আমরা অনেক পিছিয়ে রয়েছি। তখন আমরা মনে করি, সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার এই ধরনের পরিস্থিতি আমলে নিয়ে তার পরিপ্রেক্ষিতে কার্যকর পদক্ষেপ নিশ্চিত করা। আমরা বলতে চাই যে, যখন ডায়াবেটিস রোগীর ৪০ শতাংশ কিডনি রোগে আক্রান্ত হচ্ছে, তখন ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হওয়ার কারণগুলো পর্যবেক্ষণ করতে হবে। বলা দরকার যে, কিছুদিন আগে এমন খবর সামনে এসেছিল- ডায়াবেটিস রোগ বৃদ্ধির অন্যতম কারণই হলো অসচেতনতা। এ ছাড়া বিশ্বে ডায়াবেটিস আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৪২ কোটিরও বেশি। যা আগামী ২০৪০ সালে ৬৪ কোটিতে পৌঁছতে পারে বলেও জানা গিয়েছিল। এ ক্ষেত্রে আমরা বলতে চাই, যখন এমন তথ্যও উঠে এসেছিল যে, বাংলাদেশে এ রোগীর সংখ্যা ৭৩ লাখেরও বেশি এবং ডায়াবেটিস আছে এমন রোগীদের শতকরা ৫০ জনই জানেন না যে, তারা এ রোগে আক্রান্ত, যখন আক্রান্ত রোগীর শরীরে অন্যান্য রোগ বাসা বাঁধে তখন এটি চিহ্নিত হয়। অথচ প্রাথমিক পর্যায়ে এ রোগটি চিহ্নিত হলে ৮০ শতাংশ প্রতিরোধ করা সম্ভব। আমরা মনে করি, এই বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। এ ক্ষেত্রে সচেতনতার বিকল্প নেই। প্রসঙ্গত উলেস্নখ্য, এমন বিষয়ও আলোচনায় এসেছে যে, মানুষ বাজে অভ্যাস পরিহার, পরিমিত ও ভালো খাবার গ্রহণ এবং পরিমিত শারীরিক পরিশ্রম করার মাধ্যমে সুস্থ থাকতে পারেন। ফলে এটি স্বাভাবিকভাবেই স্পষ্ট যে, ভালো চিকিৎসাব্যবস্থা যেমন নিশ্চিত করতে হবে, তেমনিভাবে মানুষকে সুস্থ থাকতে হলে ব্যাপকভাবে সচেতনতা করে তুলতেও উদ্যোগী হতে হবে। প্রয়োজনে গণাম্যধ্যমসহ বিভিন্ন্নভাবে প্রচার-প্রচারণা বৃদ্ধি করতে হবে। জনসাধারণকে সচেতন করা এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে, আর তা সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করার প্রশ্নে জরুরি। সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, প্রথমে ডায়াবেটিস এরপর ডায়াবেটিস রোগীর ৪০ শতাংশ কিডনি রোগে আক্রান্ত- এই পরিস্থিতিসহ সামগ্রিক বিষয় আমলে নিয়ে সংশ্লিষ্টদের যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ ও তার সুষ্ঠু বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা অপরিহার্য। অসচেতনতা থেকে শুরু করে নানা কারণে ডায়াবেটিস রোগ বাড়তে থাকবে এটা কাম্য হতে পারে না। আমরা মনে করি, ডায়াবেটিস প্রতিরোধে বিভিন্ন সমেয়ই যে উদ্যোগগুলো নেয়া হয়েছে সেগুলোর সুষ্ঠু বাস্তবায়নের পাশাপাশি প্রতিনিয়ত মানুষকে সচেতন করতে কার্যকর পদক্ষেপ অব্যাহত রাখতে হবে। একইসঙ্গে চিকিৎসা ব্যবস্থাকে আরো বেশি এগিয়ে নিতেও উদ্যোগী হত হবে। সৃষ্ট পরিস্থিতি নিরসনে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকুক এমনটি কাম্য।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে