মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

ব্যাংকিং সেক্টর: অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা ও উত্তরণের উপায়

ব্যাংকিং খাতের ঘুরে দঁাড়ানোর সঙ্গে আমাদের সামগ্রিক অভ্যন্তরীণ অথর্নীতির বিকাশ সম্পকির্ত। এ খাতে আরও বেশি গভীরতা, স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা, নিয়মানুবতির্তা এনে আথির্ক খাত তথা অথৈর্নতিক ব্যবস্থাপনায় পরিপক্বতার পরিচয় দেয়ার প্রয়োজন। আমরা ফিলিপাইন, ইন্দোনেশিয়া কিংবা ভারতের নিয়ন্ত্রক সংস্থার নেয়া পদক্ষেপগুলো সম্পকের্ জানছি। এ দেশগুলো জনস্বাথর্ রক্ষার জন্য তাদের আথির্ক খাতে কী ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করছে, তা থেকে আমরা ধারণা নিতে পারি।
ড. ফোরকান উদ্দিন আহাম্মদ
  ১৮ ডিসেম্বর ২০১৮, ০০:০০

তিনশ বছরের কিছু আগে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উদ্ভবের পর থেকে বিশ্বব্যাপী কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো সুদের হার নিধার্রণ, বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হারের লক্ষ্যমাত্রা নিধার্রণ (টাগেির্টং), সরকারের ব্যাংক এবং ব্যাংকগুলোর ব্যাংক ও নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা হিসেবে কাজ করে অথর্নীতির ওঠানামা সামাল দিয়ে আসছে। সম্প্রতি ব্যাংকমালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (বিএবি) সুদের হার ঘোষণা দেয়ায় এবং সাম্প্রতিককালে এই একই সংগঠনের আরও কিছু কাযর্কলাপের ফলে দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক তথা বাংলাদেশ ব্যাংকের ভ‚মিকা ও অস্তিত্ব প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছে।

আগে বাজার অথর্নীতিতে সরকারই নিয়ন্ত্রকের ভ‚মিকা পালন করত। নিয়ন্ত্রণের প্রধান উদ্দেশ্যগুলোর মধ্যে ছিল প্রতিযোগিতাকে উৎসাহিত করা, একচেটিয়া বাজার নিয়ন্ত্রণ করা, জনস্বাথর্, বিশেষত ভোক্তা, গ্রাহক ও বিনিয়োগকারীদের স্বাথর্ রক্ষা করা। পরে দেখা গেল যে সরকার এ কাজ সুচারুভাবে করতে পারে না। রাজনৈতিক প্রভাব, প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতার অভাব, অস্বচ্ছ সিদ্ধান্ত গ্রহণ-প্রক্রিয়া, স্বাথের্র সংঘাত এর অন্যতম কারণ। ফলে বিশ্বব্যাপী স্বতন্ত্র নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থার উদ্ভব ঘটে। যেমন ব্যাংকিং খাতের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের জন্য বাংলাদেশ অ্যানাজির্ রেগুলেটরি কমিশন প্রভৃতি। কিন্তু পরে দেখা গেল যে এই প্রতিষ্ঠানগুলোও কাযর্কর ভ‚মিকা পালন করতে পারছে না বা এই প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের বিধিবদ্ধ দায়িত্ব পালন করতে দেয়া হচ্ছে না।

উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, ব্যাংকমালিকরা দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক, অথর্ মন্ত্রণালয়, এমনকি সংসদকেও প্রভাবিত করে তাদের ইচ্ছা অনুযায়ী সিদ্ধান্ত আদায় করতে সমথর্ হয়েছেন। উদাহরণস্বরূপ সম্প্রতি ব্যাংক কোম্পানি আইনের এক সংশোধনীর মাধ্যমে তারা বেসরকারি ব্যাংকের পরিচালনা পষের্দ একই পরিবারের সদস্যসংখ্যা ২ থেকে ৪ এবং পরিচালনা পষের্দ সদস্যদের মেয়াদ ৬ থেকে ৯ বছর পযর্ন্ত বৃদ্ধি করতে সমথর্ হন। এরপর তারা ক্যাশ রিজাভর্ রেসিও (সিআরআর) ১ এবং রেপো রেট শূন্য দশমিক ৭৫ শতাংশ হ্রাস ও রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান থেকে বেসরকারি ব্যাংকে জমা করা অথের্র সীমা ২৫ থেকে ৫০ শতাংশে উন্নীত করতে সমথর্ হন। ২০১৮-১৯ অথর্বছরের বাজেটে তারা ব্যাংক কোম্পানির জন্য করপোরেট আয়করের হার ২ দশমিক ৫ শতাংশ হ্রাস করে নন-পাবলিকলি ও পাবলিকলি ট্রেডেড কোম্পানির জন্য যথাক্রমে ৪০ ও ৩৭ দশমিক ৫ শতাংশ নিধার্রণ করায় সমথর্ হন। সবের্শষ তারা ঋণের ওপর ৯ শতাংশ ও জমার ওপর ৬ শতাংশ সুদ নিধার্রণের প্রস্তাব করেছেন এবং রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো বিএবির ঘোষণা অনুসরণ করেছে।

বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতের প্রধান সমস্যা হলো খেলাপি ঋণ ও ব্যাংক খাতের করপোরেট ব্যবস্থাপনার সংকট। ব্যাংক কোম্পানি আইনের এক সংশোধনীর মাধ্যমে বেসরকারি ব্যাংকের পরিচালনা পষের্দ একই পরিবারের সদস্যসংখ্যা ২ থেকে ৪ এবং পরিচালনা পষের্দ সদস্যদের মেয়াদ ৬ থেকে ৯ বছর পযর্ন্ত বৃদ্ধি করার ফলে করপোরেট ব্যবস্থাপনার সংকট আরও ঘণীভ‚ত হবে।

দেশের মুদ্রানীতি নিধার্রণ, পরিচালনা ও ব্যাংকিং খাতকে নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব বাংলাদেশ ব্যাংকের। এ ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, উল্টো বিএবি তার সাম্প্রতিক কাযর্কলাপের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংককে নিয়ন্ত্রণ করছে। এটা সম্ভব হয়েছে তিনটি কারণে। আমাদের দেশে বিভিন্ন নিরপেক্ষ নিয়ন্ত্রক সংস্থা গঠিত হলেও এদের স্বাধীনভাবে কাজ করতে দেয়া হয় না। দ্বিতীয়ত, প্রায়ই এসব সংস্থায় অমেরুদÐী ও জি হুজুর-টাইপের প্রধান নিয়োগ প্রদান করা হয়ে থাকে, যারা নিরপেক্ষভাবে সংস্থা পরিচালনার পরিবতের্ ক্ষমতাসীন ও তাদের ঘনিষ্ঠ মহলের হুকুম তামিলে ব্যস্ত থাকেন। সবোর্পরি দেশের আথির্ক ব্যবস্থাপনার সঙ্গে জড়িত সব প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্ব দিয়ে থাকেন অথর্মন্ত্রী। তার দৃঢ়তা, দূরদশির্তা ও সরকারপ্রধানের বিশ্বাসভাজনতা এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূণর্। তার অন্যথা হলে আথির্ক ব্যবস্থাপনার সঙ্গে জড়িত প্রতিষ্ঠানগুলোর অভিভাবকহীন হয়ে পড়বে এবং যাদের নিয়ন্ত্রণ করার কথা ছিল, তারাই উল্টো নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করেছে। এখন তারা মুদ্রানীতি, রাজস্বনীতি সবকিছুই নিধার্রণ করছে।

নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো দখল ও তাদের বিধিবদ্ধ দায়িত্ব পালনে ব্যথর্তার পরিণতি আমরা জানি। ১৯৯৬ ও ২০১১ সালের শেয়ার মাকের্ট বিপযের্য়র প্রধান কারণ ছিল নিয়ন্ত্রক সংস্থা দখল বা বাংলাদেশ সিকিউরিটিস অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের ব্যথর্তা, যার ফলে লাখ লাখ ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী সবর্স্বান্ত হন। বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যথর্তার কারণেই রিজাভর্ চুরি, ব্যাংক দখল, বেসিক ব্যাংক, ফারমাসর্ ব্যাংক কেলেঙ্কারির ঘটনা ঘটেছে; ২০১১ সালে তাদের সৃষ্ট অতিরিক্ত তারল্যের কারণে শেয়ার মাকেের্ট ধস এবং নিয়ন্ত্রণে শৈথিল্যের কারণে খেলাপি ঋণের হার উদ্বেগজনক মাত্রায় বৃদ্ধি পেয়েছে। অথর্নীতিতে নয়ছয় কেবল ব্যাংকিং খাতেই সীমাবদ্ধ নয়। সরকারি ব্যয়, রাজস্ব আয় ব্যবস্থাপনাসহ আরও অনেক ক্ষেত্রেই তা দৃশ্যমান এবং এগুলো ইতোমধ্যেই আমাদের অন্য সব খাতের অজর্নকে ঝুঁকির মুখে ঠেলে দিয়েছে।

এখানে, একটি গুরুত্বপূণর্ বিষয় অবশ্যই আলোচনা দাবি রাখেÑ সেটি হচ্ছে ঋণগ্রহীতা নিবার্চনে ব্যাংকগুলো কি সঠিকভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করছে। ব্যাংকের ঋণ প্রদানের প্রায় শতকরা নব্বই ভাগ তহবিল আসে জনগণের আমানত থেকে। সে কারণে ব্যাংক থেকে বিতরণকৃত সব ঋণ যাতে সময়মতো ফেরত আসে সে জন্য সবাির্ধক গুরুত্বারোপ করা ব্যাংকের জন্য অপরিহাযর্। বাংলাদেশ ব্যাংকের উপরোক্ত গাইডলাইনসে বলা হয়েছে, ব্যাংক থেকে ঋণ প্রদানকালে সঠিক গ্রাহক নিবার্চন, গ্রাহকের ব্যবসায়িক অবস্থা, সুনাম, ঋণ পরিশোধে গ্রাহকের সামথর্্য এবং ব্যাংকব্যবস্থাপনাকে সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে নিরপেক্ষভাবে ভালো জামানতের ওপর সবোর্চ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। যেসব গ্রাহকের ব্যবসার টানর্ওভার ভালো, বাজারে যথেষ্ট সুনাম রয়েছে, ঋণ পরিশোধে খুবই যতœবান, জামানত নিষ্কণ্টক, মূল্যবান এবং সহজে বিক্রয়যোগ্য সেসব গ্রাহক ভিন্ন অন্য কাউকে ঋণ দেয়ার সুযোগ নেই। গ্রাহক নিবার্চনসহ, ঋণমঞ্জুর, সঠিকভাবে ঋণের দলিলাদি/জামানত গ্রহণ গ্রাহককে হয়রানি না করে স্বল্পতম সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় কাযাির্দ সম্পন্ন করে এবং সঠিক সময়ে ঋণ আদায়ের জন্য সব প্রয়োজনীয় কাযাির্দ নিশ্চিত করা ব্যাংকের সিনিয়র ম্যানেজমেন্ট, ব্র্যাঞ্চ ম্যানেজারসহ সংশ্লিষ্ট কমর্কতাের্দর সবাির্ধক গুরুত্বপূণর্ বিষয়। সততা ও নিষ্ঠার অভাব রয়েছে এবং যথেষ্ট পেশাগত দক্ষতা নেই এমন জনবলের ব্যাংকে স্থান থাকা কোনোভাবেই কাক্সিক্ষত নয়।

বাংলাদেশ ব্যাংক হতে ব্যাংকগুলোর ঝুঁকিব্যবস্থাপনা যুগোপযোগী করার জন্য পযার্প্ত নীতি সহায়তা প্রদান করার পরও ব্যাংকগুলোর যথাযথ পরিপালন নিশ্চিত করতে সামথর্্য হচ্ছে না। ঋণ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার গুরুত্ব সবাির্ধক হলেও এ ক্ষেত্রে পরিপালনের হার সবির্নম্ন। ঋণের যথাযথ ঝুঁকি বিশ্লেষণের মাধ্যমেই ব্যাংকের বিনিয়োগ ঝুঁকিকে সবির্নম্নœ মাত্রায় বজায় রাখার নিদের্শনা থাকলেও উদ্যোক্তার ঋণ পাওয়ার যোগ্যতা, ঋণ চুক্তি, গ্রাহকের তারল্যপ্রবাহ, চাজর্ সৃষ্টি, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা ইউনিট কতৃর্ক প্রস্তাবিত ঋণ হিসাব মূল্যায়নের যথাথর্তা যাচাই, ঋণ আবেদনের যথাথর্তার দিকে দৃষ্টি রেখে ঋণ প্রস্তাব বিবেচনায় নেয়া, সম্পদ ও জামানতের সঠিকতা ও যথাযথ মূল্যায়ন, ঋণের প্রকৃতি ও পরিমাণ, ঋণের উদ্দেশ্য, ঋণ কাঠামো, ঋণের মেয়াদ, ঋণের নিরাপত্তাব্যবস্থা ইত্যাদি বিশ্লেষণ ছাড়াই ঋণ প্রদান করা হয়। চাতুরী বিন্যাসের মাধ্যমে ঋণ ঝুঁকি সবির্নম্ন পযাের্য় রাখা হলেও এ ক্ষেত্রে যেসব অনিয়মের আশ্রয় নেয়া হচ্ছে, তা পরিচালনজনিত ঝুঁকির অন্তভুর্ক্ত। পরিচালনজনিত ঝুঁকির প্রথম সুরক্ষা হলো বিজনেস লাইন ম্যানেজমেন্ট, দ্বিতীয় সুরক্ষা হলো স্বাধীন রিস্ক ম্যানেজমেন্ট ইউনিট এবং তৃতীয় সুরক্ষা হলো ইন্টারনাল অডিট। এগুলো কাযর্করভাবে পরিচালিত হচ্ছে কি-না, তার প্রাথমিক দায়-দায়িত্ব ব্যবস্থাপনার; কিন্তু ব্যবস্থাপনা এ ক্ষেত্রে দ্বৈত ভ‚মিকা পালন করছে। একদিকে যথাযথভাবে পরিপালন নিশ্চিত করছে না বা এ ক্ষেত্রে পরিপালনে অদক্ষতা রয়েছে। অন্যদিকে পষর্দকে ভুল তথ্যপ্রদান করে প্রকৃত অবস্থা গোপন করে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করছে। এ ক্ষেত্রে পষের্দর ভ‚মিকাও প্রশ্নবিদ্ধ। শুধু নতুন ঋণ বিতরণ নয়, ঋণ নবায়ন, মেয়াদ ও সীমা বধির্তকরণ এবং পুনঃতফসিলিকরণের সময় বস্তুনিষ্ঠ নয় এমন তথ্য দিয়ে ঋণকে চিরসবুজ রেখে ব্যাংকের স্থিতিপত্র বলিষ্ঠ রাখার প্রতিযোগিতা তো আছেই। ঋণ অবলোপনের মহোৎসব তো রয়েছেই। এ ক্ষেত্রে ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ এবং পরিপালন ব্যথর্তার বিষয়টি সুস্পষ্ট এবং এমনকি বহিঃনিরীক্ষকের ভ‚মিকাও প্রশ্নবিদ্ধ। এখানে ঋণ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা ও পরিচালন ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার মধ্যে সুসমন্বয় না থাকার কারণে ব্যাংকের সম্পদের গুণগতমান ক্রমাগত নিম্নগামী হলেও তার যথাথর্ প্রতিফলন স্টেকহোল্ডারদের কাছে অজানাই রয়ে যাচ্ছে।

ব্যাংকিং খাতের ঘুরে দঁাড়ানোর সঙ্গে আমাদের সামগ্রিক অভ্যন্তরীণ অথর্নীতির বিকাশ সম্পকির্ত। এ খাতে আরও বেশি গভীরতা, স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা, নিয়মানুবতির্তা এনে আথির্ক খাত তথা অথৈর্নতিক ব্যবস্থাপনায় পরিপক্বতার পরিচয় দেয়ার প্রয়োজন। আমরা ফিলিপাইন, ইন্দোনেশিয়া কিংবা ভারতের নিয়ন্ত্রক সংস্থার নেয়া পদক্ষেপগুলো সম্পকের্ জানছি। এ দেশগুলো জনস্বাথর্ রক্ষার জন্য তাদের আথির্ক খাতে কী ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করছে, তা থেকে আমরা ধারণা নিতে পারি।

আমাদের আথির্ক খাতকে এগিয়ে নেয়ার পাশাপাশি দক্ষ জনশক্তি তৈরি করতে হবে এবং ব্যাংকগুলোয় বাধ্যবাধকতা দিতে হবে যে, তারা তাদের মুনাফার একটি অংশ জনশক্তির উন্নয়নে ব্যবহার করবে। নতুন ব্যবস্থাপক তৈরি করতে হবে, যারা নতুন ব্যবস্থা, নতুন প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ব্যাংকিং ব্যবস্থাকে আরও সহজতর করবে। ব্যাংকিং ব্যবস্থাকে গ্রাহকবান্ধব করবে। বাংলাদেশে ব্যাংকের পরিমাণ অনেক বেশি। এত ব্যাংকের প্রয়োজনীয়তা নেই। তবে সেক্টরাল ব্যাংক হতে পারে। যেমন সাম্প্রতিককালে বিজিপি বা পুলিশকে ব্যাংক দেয়া হয়েছে। এগুলো নিয়ে ততো সমস্যা নেই। তবে বাণিজ্যিক ব্যাংকের অবাধ প্রবেশাধিকার রোধ করা উচিত। সমাজের প্রভাবশালী ব্যক্তিরা সে সব ব্যাংক পরিচালনা করছে সেগুলো ভালো চলছে না। এসব নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের পযের্বক্ষণ আরও বাড়ানো উচিত। বাংলাদেশ ব্যাংক তার ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারছে না। অপশক্তি অতিক্রম করে কাজ করার ক্ষমতা বাংলাদেশ ব্যাংক অজর্ন করেনি। এসব অব্যবস্থাপনা ও অনিয়ম থেকে উত্তরণের উপায় হিসেবে আমাদের দরকার রাজনৈতিক অঙ্গীকার এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা। দেশ কোনো বিশেষ রাজনৈতিক দলের নয়, দেশ জনগণের। অথার্ৎ রাষ্ট্রের মালিক জনগণ। কাজেই ব্যাংকের এই স্বেচ্ছাচারিতাকে জনগণ কোনো অবস্থায় মেনে নেবে না। সে বিষয়টি কতৃর্পক্ষকে বুঝে যথাযথ সময়োচিত ব্যবস্থা নিতে হবে।

ড. ফোরকান উদ্দিন আহাম্মদ: লেখক, কলামিস্ট ও গবেষক

ভড়ৎয়ধহ.রহভড়@মসধরষ.পড়স

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<27573 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1