শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

নিবার্চনী সহিংসতা থামছে না

রোধে কঠোর হোন
নতুনধারা
  ১৫ ডিসেম্বর ২০১৮, ০০:০০

নিবার্চনী প্রচারণার তৃতীয় দিনেও দেশের বিভিন্ন স্থানে রাজনৈতিক দলগুলোর কমীর্-সমথর্কদের মধ্যে সংঘাত-সহিংসতা ও হামলা-মামলার ঘটনা ঘটেছে। আসন্ন নিবার্চনে মাঠপযাের্য় রাজনৈতিক দলগুলোর সংঘষের্ জড়িয়ে পড়ার ঘটনা নিঃসন্দেহে উদ্বেগের। সুষ্ঠু ও শান্তিপূণর্ নিবার্চন অনুষ্ঠানে নিবার্চন কমিশনের দৃঢ় ভ‚মিকা সমালোচকদের প্রশংসা অজর্ন করেছে। সরকারের দৃষ্টিভঙ্গিও এ বিষয়ে স্পষ্ট। নিবার্চনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে বিতকর্ হোক তা যে তারা চান না তা প্রধানমন্ত্রী সোজাসাপ্টা ভাষায় বলেছেন। বিরোধী দলও বলেছে শান্তিপূণর্ ও সংঘাতমুক্ত নিবার্চনই তাদের কাম্য। তার পরও নিবার্চন কেন্দ্র করে বিচ্ছিন্নভাবে হলেও কোথাও কোথাও সংঘাত মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে। সংঘষের্ নিহত হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। আহত হওয়ার ঘটনাও বাড়ছে। নিবার্চন কেন্দ্র করে সংঘষর্ কিংবা প্রতিপক্ষের ওপর হামলা-পাল্টা হামলা খুবই দুভার্গ্যজনক।

গণমাধ্যমের খবরে জানা যায়, প্রচারণার তৃতীয় দিন বুধবার গণসংযোগে বাধা ও হামলা হয়েছে, এতে বিএনপির দুই প্রাথীর্সহ শতাধিক আহত হয়েছেন। ভাঙচুর করা হয়েছে ৯টি গাড়ি, নিবার্চনী অফিস ও প্রচার মাইক। চট্টগ্রামে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর কমীর্-সমথর্কদের ওপর হামলায় আহত হয়েছেন ৪ জন। ফেনীর সোনাগাজীতে শেখ রাসেল স্মৃতি সংসদে মঙ্গলবার গভীর রাতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। এ ছাড়া দেশের আরও বেশকিছু জায়গায় সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। নিবার্চনী প্রচারাভিযানে সহিংসতার যেসব ঘটনা ঘটছে, তাতে দেশবাসী উদ্বিগ্ন না হয়ে পারে না। নিবার্চনটি যেহেতু অংশগ্রহণমূলক হতে চলেছে, সেহেতু এটি শান্তিপূণর্ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হতে পারলে দেশবাসীর আকাক্সক্ষা পূরণ হতে পারে। কিন্তু সহিংসতা অব্যাহত থাকলে ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে উপস্থিত হতে কতটা উৎসাহিত হবেন, তা প্রশ্নসাপেক্ষ হয়ে পড়ছে। পাশাপাশি গভীর দুঃখের সঙ্গে লক্ষ্য করা যাচ্ছে, রাজনৈতিক দলগুলো স্থানীয় পযাের্য় তাদের কমীর্-সমথর্কদের সহিংসতা থেকে নিবৃত্ত করার ক্ষেত্রে ব্যথর্তার পরিচয় দিয়ে যাচ্ছে। দুই প্রতিপক্ষ শুধু যে সহিংসতায় লিপ্ত হয়েছে তা নয়, দুই প্রধান দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির অভ্যন্তরীণ দ্ব›েদ্বর বহিঃপ্রকাশও ঘটছে সহিংসতার মধ্য দিয়ে। এ পরিস্থিতি প্রত্যাশিত হতে পারে না।

স্মতর্ব্য যে, নিবার্চন হলো জনগণের মতামত প্রকাশের উৎসব। ফলে প্রচারাভিযানে হামলা-পাল্টা হামলা ও অসহিষ্ণুতা ভোটের উৎসবে যে ব্যত্যয় ঘটাবে, সে আশঙ্কা অমূলক নয়। আমরা মনে করি, সারা দেশের এই অস্থিরতা, সহিংস ঘটনা সাধারণ মানুষের মনে অস্বস্তি সৃষ্টিতেই মদদ জোগাচ্ছে। প্রতিপক্ষের নিবার্চনী সভা কিংবা প্রচারাভিযানে বাধাদানের অভিযোগও পরিবেশ দূষিয়ে তুলছে। আশা করব, নিবার্চন কমিশন সংঘাত সৃষ্টিকারীদের সামাল দিতে কঠোর পদক্ষেপ নেবে। অপরাধী যেই হোক তাকে আইনের আওতায় আনা হবে। নিবার্চন কেন্দ্র করে তৃতীয় কোনো পক্ষ সংঘাত সৃষ্টির ষড়যন্ত্র করছে কিনা তাও খতিয়ে দেখা জরুরি।

প্রধান নিবার্চন কমিশনার সহিংসতার ঘটনাগুলোর প্রেক্ষাপটে বলেছেন, তিনি এতে বিব্রতবোধ করছেন। নিবার্চনী সহিংসতা যে ঘটছে তা স্বীকার করায় তাকে ধন্যবাদ দেয়া যেতে পারে। কিন্তু এতে শুধু বিব্রতবোধ করা কাজের কথা নয়। সহিংসতা প্রতিরোধে নিবার্চন কমিশনের (ইসি) ব্যথর্তাগুলো কমিশন কেন কাটিয়ে উঠতে পারছে না, সে প্রশ্নও উঠে আসা অযৌক্তিক নয়। আমরা সবাই চাই নিবার্চনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বজায় রাখতে নিবার্চন কমিশন আরও কঠোর হোক। তা না হলে নিবার্চনে গণরায়ের প্রতিফলন নিয়ে সংশয় থেকেই যাবে। নিবার্চনও হয়ে পড়বে প্রশ্নবিদ্ধ। যেহেতু গণতান্ত্রিক শাসনের ধারাবাহিকতা রক্ষা এবং উন্নয়নের ধারা সমুন্নত রাখতে সুষ্ঠু ও শান্তিপূণর্ নিবার্চনের কোনো বিকল্প নেই; সেহেতু যে কোনো প্রকারেই হোক, নিবার্চনী সহিংসতা বন্ধে ইসিকে দৃঢ় অবস্থান নিতে হবে।

সবোর্পরি বলতে চাই, একাদশ জাতীয় সংসদ নিবার্চনে দেশের আপামর মানুষের বিজয় নিশ্চিত করতেই গ্রহণযোগ্য ও শান্তিপূণর্ সুষ্ঠু নিবার্চন দেখতে চায় শুভবুদ্ধিসম্পন্ন প্রতিটি মানুষ। এটা স্পষ্ট যে, সংঘাত সৃষ্টিকারীরা জনগণের প্রতিপক্ষের ভ‚মিকায় অবতীণর্ হয়েছে। ফলে রাজনৈতিক দলগুলো তাদের নেতা-কমীর্-সমথর্কদের সামাল দিকÑ এমনটি আমরা চাই। সংঘাত সৃষ্টিকারী যেই হোক তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ সময়েরই দাবি। সরকারেরও উচিত হবে নিবার্চন কমিশনকে এ ব্যাপারে সবার্ত্মক সহায়তা অব্যাহত রাখা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<27109 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1