শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

নিবার্চন সমাজ বিনিমাের্ণর একটি শক্তিশালী ভিত্তি

সালাহ্উদ্দিন আহমেদ ঢাকা
  ২১ অক্টোবর ২০১৮, ০০:০০

নিবার্চন শব্দের মধ্যে একটা সবর্জনীনতা বিদ্যমান। এই সবর্জনীনতাকে পুঁজি করে একটি স্বতঃস্ফূতর্, অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নিবার্চন গণতন্ত্রের ভিতকে মজবুত করে তোলে ও বহিবিের্শ্ব দেশের ভাবমূতির্ উজ্জ্বল করে। দেশের পরিস্থিতির দৃশ্যপট বদলে দেয় নিবার্চন। নিবার্চন অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করার লক্ষ্যে সরকারের উচিত নিরপেক্ষ হয়ে সব পক্ষকে সমান তালে তাদের কমর্সূচি নিয়ে কাজ করার সুযোগ তৈরি করে দেয়া। মনে রাখা প্রয়োজন, ছোট্ট একটি ভুল ভবিষ্যতে বড় ভুলকে উৎসাহিত করে। ফলে দেশ ও সমাজের সবর্নাশে তা সহায়ক হয়। জনগণ চায় অংশগ্রহণমূলক ও স্বতঃস্ফূতর্ নিবার্চনের মাধ্যমে বিজয়ী দলের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর।

সুষ্ঠু নিবার্চনের জন্য দরকার নিরপেক্ষ ও দক্ষ নিবার্চন কমিশন। সাধারণত দেখা যায়, যারা ক্ষমতায় থাকে তারা নিজের স্বাথের্ নিবার্চন কমিশনকে ব্যবহার করার চেষ্টা করেন। স্বাধীন নাগরিক হিসেবে যদি নিজের ভোটাধিকার প্রয়োগ না করা যায় তাহলে সেই নিবার্চনকে স্বচ্ছ বলা যাবে না। স্বচ্ছ নিবার্চনের জন্য স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও দক্ষ নিবার্চন কমিশন একান্ত প্রয়োজন।

অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নিবার্চনের জন্য দাগী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। তাদের আইনের আওতায় আনা। অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, চঁাদাবাজি রোধ, কালো টাকার ছড়াছড়ি ইত্যাদি রোধ করে নিবার্চনের জন্য লেভেল পেয়িং ফিল্ড তৈরি করা। সবার জন্য সমান সুযোগ তৈরি করতে না পারলে কোনোভাবেই অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নিবার্চন করা যাবে না। সরকারকে নিবার্চনের পরিবেশ সৃষ্টির জন্য নিবার্চন কমিশনকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দিতে হবে। তারা যেন তাদের প্রয়োজন মতো সিদ্ধান্ত নিতে পারে, সেদিকে সরকারকেই খেয়াল রাখতে হবে।

প্রশাসনের ইচ্ছার ওপরই নিভর্র করে একটি অবাধ, সুষুম ও নিরপেক্ষ নিবার্চন। আর সরকার বা আমাদের দক্ষ নিবার্চন কমিশন সেটা চাইলেই পারে- এ বিশ্বাস আমাদের আছে। সরকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মাধ্যমে নিবার্চনের আগেই লেভেল পেয়িং ফিল্ড করে নেবে। এতে নিবার্চনের আগেই সে আইনশৃঙ্খলাকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে আনতে পারবে। আর যদি প্রয়োজন মনে করে তাহলে নিবার্চনের সময় সেনাবাহিনী নামানো যেতে পারে। এ জন্য সবাই মিলে বসে আলোচনার মাধ্যমে অথার্ৎ রাজনৈতিক দল, শিক্ষক, ছাত্র, বুদ্ধিজীবী, সুধী সমাজের প্রতিনিধি- সবাইকে নিয়ে বসে ঠিক করতে হবে নিবার্চনের সময় কিভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হবে। সরকারের সদিচ্ছার ও বিএনপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সদিচ্ছার ওপরই তা নিভর্র করছে। আশা করি বিষয়টি সকল রাজনৈতিক দলের নেতারা ভেবে দেখবেন।

নিবার্চনের ভোটাররা যেন অবাধে ভোট দিতে কেন্দ্রে আসতে পারেন, সে নিশ্চয়তা প্রদান করতে হবে। সবাইকে মনে রাখতে হবে, নিবার্চন মানে শুধু রদবদল বা পরিবতর্ন নয়। এটির সামাজিক বাস্তবতা অনেক। এটি সমাজ বিনিমাের্ণর একটি শক্তিশালী ভিত্তি।

আমি মনে করি, নিবার্চন সামনে রেখে সব রাজনৈতিক দল, সংগঠন ও ব্যক্তির রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় পরিপূণর্ভাবে অংশগ্রহণের স্বাধীনতা থাকা উচিত। রাজনৈতিক দলগুলোর কমীর্ ও সমথর্কদের অবশ্যই মতপ্রকাশের স্বাধীনতা থাকা, প্রচারণা চালানো, ভয়ভীতি, প্রতিশোধ বা জবরদস্তিমূলক বিধিনিষেধ ছাড়াই সমাবেশ করার স্বাধীনতা থাকতে হবে। নিবার্চনের আগে, নিবার্চন চলাকালে এবং নিবার্চনের পরে শান্তি বজায় রাখতে সবাইকে সচেষ্ট হতে হবে। মনে রাখতে হবে, সহিংসতায় কেবল তারাই লাভবান হয়, যারা বাংলাদেশের ভালো চায় না।

পরিশেষে বলছি, ‘শান্তিপূণর্ নিবার্চনে সবার অংশগ্রহণে একটি সুন্দর দেশ আরও সুন্দর হতে পারে। আসুন, আমরা হাতে হাত রেখে সুন্দর দেশ গড়ি।’

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<18524 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1