শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বঙ্গবন্ধুর মূল্যায়ন বনাম বস্তাপচা গাজীর পাঠ

শেখ হাসিনা বাংলাদেশে নারীর ক্ষমতায়নে অনেক কিছু করেছেন। তবে ওইগুলো ফেঁাড়ার ওপর প্রলেপ দেয়ার মতো। প্রকৃত অবস্থার পরিবতর্ন হয়নি। সম্পত্তির মালিকানা ও উত্তরাধিকারের পরিবতের্নর মাধ্যমেই সম্পত্তিভিত্তিক সমাজে নারীর অবস্থানগত পরিবতর্ন হয়। সে কারণে নারীর ক্ষমতায়ন ঝিলিক মেরে মিলিয়ে যাচ্ছে।
ড. ইশা মোহাম্মদ
  ১৯ অক্টোবর ২০১৮, ০০:০০

বঙ্গবন্ধুর রাজনীতি ও রাজনৈতিক দশর্ন নিয়ে, সঙ্গে শেখ হাসিনার রাজণীতি ও রাজনৈতিক দশর্ন নিয়ে অনেক লেখালেখি হয়েছে, হচ্ছে। এবার শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে প্রশস্তিগঁাথা ছাপা হয়েছে অনেকই। কিন্তু দুঃখের বিষয় লেখালেখিতে সনাতন ভাবভঙ্গি ও ঢঙের ছড়াছড়ি। মধ্যযুগেই এরকম লেখালেখি হতো। তারই ধারা থেকে লেখক- পÐিত এবং নমস্য ব্যক্তিরা মনে হয় বেরিয়ে আসতে পানেনি।

বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে মাঝে মাঝেই বড় নেতাদের সাথে তুলনা করে তাকে মহান করার চেষ্টার করা হয়। পদ্ধতি কিন্তু সেই পুরাতন ভৃত্য ‘মডেল’। গান্ধীজির সাথে তাকে যে তুলনা করে লেখা হয়েছে, তাতে যে বঙ্গবন্ধু ছোট হয়ে গেছেন, লেখক পÐিতরা তা বোঝার ক্ষমতাই রাখেন না বলেই মনে হয়। অনেক বক্তৃতা-বিবৃতিতে অনেক মিষ্টি শোতেও বঙ্গবন্ধুকে অনেক বড় বড় নেতার সাথে তুলনা করা হয়েছে এবং বলা হয়েছে তিনি গান্ধীজির শিষ্য-সাগরেদ। বঙ্গবন্ধু কখনোই গান্ধীজির রাজনৈতিক কৌশলের অনুসারী ছিলেন না। ঠিক শেখ হাসিনাও তেমন গুরু ধরে রাজনীতি করেননি, করছেনও না।

রাজনীতিক হিসেবে বঙ্গবন্ধু একজন অনন্য উদাহরণ। বঙ্গবন্ধু অসহযোগের ডাক দিয়েছিলেন। মনে করা হয় যে, গান্ধীজিই সবর্প্রথম ভারতীয়দের অসহযোগ শিখিয়েছেন। এটি ঠিক নয়। ভারতের অসহযোগের ইতিহাস অতি প্রাচীন। লিখিত নিদশর্ন পাওয়া যায় মোগল আমলেই। খাজনা না দিয়ে সরকারকে অসহযোগিতা করার অনেক ঘটনা বাংলাদেশে ঘটেছিল। সে সময়ে মোগল সেনারা গ্রাম ঘেরাও করে অমানুষিক অত্যাচার করে লুটপাটের মাধ্যমে খাজনা আদায় করা এবং অসহযোগের শাস্তি বিধান করত। অনেক নারী-পুরুষকে ধরে নিয়ে দাস হিসেবে বিক্রিও করে দিত। অনেক সময় এই পদ্ধতিও লাভজনক হতো না। বাধ্য হয়ে তারা গ্রামের মোড়লদের কাছ থেকে পুরু গ্রামের খাজনা আদায় করত। চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের আগে ইংরেজরাও এই পদ্ধতিতে গ্রামের মোট খাজনা আদায় করত। অনেক সময় অসহযোগকারীদের প্রতিবেশীদের কাছ থেকেও পালিয়ে যাওয়া কৃষকের খাজনা আদায় করা হতো। গান্ধীর অসহযোগ ছিল এরই সম্প্রসারিত রূপ। বঙ্গবন্ধুও অসহযোগে খাজনা বন্ধ করার কথা বলেছিলেন। বলা যায়, বঙ্গবন্ধু সব রাজনৈতিক কৌশলই তার জীবনের অভিজ্ঞতা ও উপলব্ধির ফসল। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে পৃথিবীর বড় বড় রাজনৈতিক মহানায়কদের পাথর্ক্য আছে। তিনি কারোর চিন্তা ও পদ্ধতি হুবহু অনুসরণ করতেন না। তিনি যখন মুসলিম লীগের যুবাফ্রন্টের কমীর্ তখনো তার নিজস্ব চিন্তা ছিল। আওয়ামী লীগেও তিনি সোহরাওয়াদীর্ কিংবা মওলানা ভাসানীর একান্ত অনুসারী ছিলেন না। সব সময়ই তার স্বাতন্ত্র্য পরিলক্ষিত হয়েছে। জাতীয়তাবাদ সম্পকের্ তার চিন্তাও নিজস্ব। যে কারণে মওলানা ভাসানীর সঙ্গে তার মতপাথর্ক্য হয়েছে। দল ভাগ হয়ে গেছে। দলভাগের মতো বিশাল ক্ষতি স্বীকার করেছেন। কিন্তু তার কৌশলের স্বাতন্ত্রিকতা ত্যাগ করেননি।

অহিংস রাজনীতিতে স্বাধীনতা অজর্ন করা সম্ভব নয়। তিনি ভালোভাবেই বুঝতেন এটি। তবে তার সহিংসতায় সশস্ত্র¿ রাজনীতি ছিল শেষ অস্ত্র। অনেকটা সুভাষ বসুর কায়দা। জাতীয়তাবাদের সঙ্গে জাতীয় সেনাবাহিনীর প্রয়োজনীয়তাও তিনি বুঝতেন। জাতীয় সেনাবাহিনীর সদস্য হিসেবে তিনি কৃষক শ্রমিকদেরকেই পছন্দ করতেন। তথাকথিত সেনাসদস্যের প্রতি তার ভরসা ছিল না। সে হিসেবে বলা যায়, তিনি অন্তরে গণবাহিনীর ধারণা পোষণ করতেন।

বঙ্গবন্ধুর চিন্তা-চেতনায় বিপ্লবের ধারণাও ছিল। তিনি গণবিপ্লবের ধারণায় বিশ্বাসী ছিলেন। মাও সেতুং এর লং মাচের্র ধারণা তাকে অনুপ্রাণিত করেনি। কিন্তু মাও এর ম্যান ক্যান ডু মিরাকল ধারণার অনুশীলন করতে চেয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু চীন ভ্রমণের আগেও চীনের বিপ্লবী রাজনীতি সম্পকের্ ধারণা পেয়েছিলেন। সশস্ত্র সংগ্রাম হবে শেষ ধাপ। তার আগে গণজাগরণ, গণউত্থান এবং একই সঙ্গে রাষ্ট্রক্ষমতাকে উবিয়ে দেয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন। বোঝাই যায়Ñএই গণবিপ্লবের পদ্ধতি তার একান্ত নিজের।

বঙ্গবন্ধু যে স্বাতন্ত্রিকতা বজায় রেখে রাজনীতি করেছেন তার প্রমাণ তার নিজের মডেলের সমাজতন্ত্র। তিনি সমাজতন্ত্রে বিশ্বাসী ছিলেন। কিন্তু কমিউনিস্ট পাটির্ই সমাজতন্ত্র বিনিমার্ণ করবে আর কেউ পারবে নাÑএ ধারণায় তিনি বিশ্বাসী ছিলেন। তার সমাজতন্ত্র লেলিনের মতো নয়, মাও সেতুংয়ের মতো নয়। ‘বাকশাল’ অনন্য সাধারণ সমাজতন্ত্র। আপনাদের পছন্দ হোক বা না হোক এটিই ছিল বঙ্গবন্ধুর সমাজতান্ত্রিক তত্তে¡র অনুশীলন। সমস্যা হচ্ছে একটাইÑ বাংলাদেশের বড় পÐিতরা ভাবতেই পারে না যে, ‘শেখ মুজিব’ একটি নতুন রাষ্ট্রতত্তে¡র জন্ম দিতে পারে। তাদের ধারণায় কখনোই আসেনি যে, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ব্যবহারিক ‘তত্ত¡’ শেখ মুজিবেরই আবিষ্কার। প্রতিটি পদক্ষেপই তার নিজের উদ্ভাবিত এবং এ কারণেই তিনি অনন্য সাধারণ বিপ্লব ও রাষ্ট্রতত্তে¡র জনক।

শেখ হাসিনার কপালটাও তার বাপের মতোই খারাপ। তার বাপকে কেউই নতুন তত্ত¡দাতা মনে করে না, তেমনি শেখ হাসিনাকেও কেউই নতুন তত্ত¡দাতা মনে করে না। যেমন তিনি যে অংশগ্রহণমূলক গণতন্ত্রের ধারণার অনুশীলন করেছেন তা বিশ্বের কোনো দেশই কখনোই অনুশীলন করেনি। তিনিও তার বাপের মতোই নতুন ধরনের গণতন্ত্র আবিষ্কার করেছেন এবং অনুশীলন করে দেখিয়ে দিয়েছেন যে, ‘গণতন্ত্র’ বিচিত্রধমীর্। মানুষের কল্যাণই যদি গণতন্ত্রের প্রধান বিষয় হয় তবে অংশগ্রহণমূলক গঠনমূলক উন্নয়নমূলক গণতন্ত্রই শ্রেষ্ঠ। নিছক হালুয়া নিয়ে কাড়াকাড়ি গণতন্ত্র নয়। নিছক সমালোচনার ছলে গালমন্দ করা গণতন্ত্র নয়। গদির আকষের্ণ যখন সংবিধানও তুচ্ছ হয়ে যায় তখন দেশ বঁাচাতে স্টেটসম্যান বৃহত্তর কল্যাণের সঙ্গে ক্ষুদ্রতর ও স্বল্পমেয়াদি অকল্যাণ করতেই পারে। এমনকি স্বল্প মেয়াদে ভোটাধিকারও রহিত করতে পারে। পৃথিবীতে এমন ধরনের ঘটনা বহুতই ঘটেছে।

শেখ হাসিনাকে মূল্যায়ন করতে গিয়ে যারা বস্তাপচা গাজীর পাঠ রচনা করেছেন তাদের ধন্যবাদ দেয়াই যায় এবং একই সঙ্গে বোঝাই যায় বাল্যকালে তারা ভদ্রভাবে গরুর রচনা লিখে ফুলমাকর্স পেয়েছেন। যারা লেখালেখি করেন, তারা কি জানেন না যে মধ্যযুগীয় মডেল এখন আর চলে না। অন্তত বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনাকে লেখালেখির ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতন হওয়া উচিত ছিল। কেননা, তার বিরুদ্ধে অপপ্রচারেও লোক নিয়োজিত আছে। মূল্যায়নে ‘প্রকৃতকে’ তুলে আনতে হবে। শেখ হাসিনা যে, নয়া গণতন্ত্রের জননী সেটি বোঝাতে হবে সাধারণ মানুষকে। মাও সে তুং নয়া গণতন্ত্রের ধারণা দিয়েছিলেন। তার ধারণা নিয়ে বিশাল বিতকর্ আছে বিশ্বময়। কিন্তু আজ পযর্ন্ত কেউই তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিতে পারেনি। ঠিক তেমনি শেখ হাসিনার নয়া গণতন্ত্রের ধারণাকেও কেউই তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিতে পারবে না। বিতকর্ হবেই। বিতকর্ চলবে বহুদিন। যদি বেশ কয়েক বছর এটি নিরবচ্ছিন্নভাবে অনুশীলন করা যায় তবে বিশ্বব্যাপী বোদ্ধাদের মস্তিষ্কে ঝড় তুলবে। রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা এই অংশগ্রহণমূলক গণতন্ত্রের ধারণা নিয়ে বই লিখবে এবং বিশ্ববিদ্যালয় সমূহে পড়ানো হবে। এখনই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব বিশ্ববিদ্যালয়ে শেখ হাসিনার উদ্ভাবিত তত্ত¡ পড়ানো উচিত। তাহলে কয়েক বছরের মধ্যেই সামাজিক ভিত্তিও তৈরি হবে। মাও সেতুং কেন দীঘির্দন ক্ষমতায় ছিলেন? রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা এমন জাতীয় প্রশ্ন করেন। অনেকগুলো সামাজিক ও রাজনৈতিক শতর্ উল্লিখিত হয়। তার মধ্যে মাও সেতুংয়ের নতুন রাজনৈতিক চিন্তা ও দশর্নকেও গুরত্ব দেয়া হয়। তিনি নয়াগণতন্ত্রের জনক। এই নবোদ্ভাবিত রাজনৈতিক ধারণার পক্ষে তিনি জনমত তৈরি করেছিলেন। তার দলের মধ্যকার প্রতিপক্ষরাও এই শতের্র ক্ষমতা অতিক্রম করতে পারেনি। শেষ পযর্ন্ত ওয়াং মিং রাশিয়ায় পালিয়ে জীবনরক্ষা করেছিলেন। মাও সেতুংয়ের সমালোচকরা যাই বলুক না কেন, নয়াগণতন্ত্র চীনে ঠিকই টিকে আছে। দ্বিতীয় রাজনৈতিক চিন্তা ছিল ‘শতফুল ফুটতে দাও’ সমাজতন্ত্রেও জাতীয় বুজোর্য়া মূল্যবোধের বিকাশ হতে পারে। ধনতন্ত্রের শুভময়তাকে কাজে লাগানো যায় এবং শাশ্বত সামন্ত মানবিক মূল্যবোধকে আরও শক্তিশালী করা যায় তা শত ফুল ফোটার রাষ্ট্রীয় উদ্যোগের মাধ্যমে তিনি প্রমাণ করেছিলেন। মাও সেতুং জাতিকে তার রাজনৈতিক চিন্তার দ্বারাই কয়েকশ বছর এগিয়ে নিয়েছিলেন।

শেখ হাসিনার ব্যাপারটাও ওই রকমই। তিনি একটি আধুনিক রাজনৈতিক চিন্তার জননী। তিনি অংশগ্রহণমূলক গণতান্ত্রিক ধারণার জন্ম দিয়েছেন। অনুশীলন করে দেখিয়ে দিয়েছেন যে, এভাবেও গণতান্ত্রিক ছাচে অবৈরীমূলক উন্নয়ন ধারাকে প্রাগ্রসর করা সম্ভব। তিনি কেবল কথার কথা বলেননি। উন্নয়ন ধারা প্রবাহিত করেছেন, শত বৈরিতার মধ্যেও। সংসদে নিছক তকার্তকির্ হাতাহাতি মারামারি কোনো শুভ উদাহরণ নয়। জাতিকে শুভবাতার্ দেয় না। তাই সংসদকে তিনি গঠনমূলক আলোচনা ও সমালোচনার স্থান করেছেন। যে কোনো উন্নয়নশীল দেশই শেখ হাসিনার নবোদ্ভাবিত ‘রাষ্ট্রচিন্তা’ গ্রহণ করবে, অদূর ভবিষ্যতে।

এবারকার সংসদ কেমন হতে পারে? এ প্রশ্ন অনেকেই করেছেন। কে জিতবে, কেন জিতবে, সেটি বড় কথা নয়। যারাই জিতবে, তারাই অংশগ্রহণমূলক কেবিনেট তৈরি করবে। তাহলেই দেশে উন্নয়ন ধারা অব্যাহত থাকবে। এমনও হতে পারে যে, প্রকৃত সামাজিক উন্নয়নের বাস্তবভিত্তি তৈরি করার জন্য সংবিধানে সামান্য পরিবতর্ন এনে সংসদ সদস্যদের সংখ্যাগত অবস্থান নারী-পুরুষ সমান সমান করতেও পারেন। খুব ‘বড়সাহসে’র কাজ হবে এটি। নারী-পুরুষের সংখ্যা সাম্য বাংলাদেশের সমাজে তো আছেই। ‘নারীরা পারে না’Ñ এই অসুস্থ ও প্রতিক্রিয়াশীল ধারণা বজর্ন করলেই সংসদে নারী-পুরুষ সমান করার চিন্তাকে বিজ্ঞানমনস্ক মনে হবে।

এবারকার নিবার্চনের রাজনৈতিক পরিবেশ শেখ হাসিনার পক্ষেই আছে। তিনি বাংলার সব নারীর সমথর্ন পাবেন। তবে তিনশত আসনে নারী সদস্য আনতে হলে প্রত্যক্ষ নিবার্চনের মাধ্যমেই আসতে হবে। কয়েকজন করুণাশ্রিত নারীকে সাংসদ বানিয়ে সমগ্র নারী জাতিকে অপমান করা যে উচিত নয়, এ বোধ কেন স্টেটম্যানের অন্তরে জ্বালা ধরায় না তা বোঝা যায় না। যিনি নিরুপায়, তার কথা আলাদা। কিন্তু যার উপায় আছে, ক্ষমতা আছে, তিনি কেন কয়েকজন প্রতিক্রিয়াশীল নারীবিদ্বেষী এবং হালুয়াভোগীর কথায় বিচলিত হয়ে ‘বড় ভালো’ কাজটি করবেন না। আমার তো মনে হয় এখনিই সময়। এ সুবণর্ সুযোগ কাজে লাগিয়ে নারীমুক্তি আন্দোলনকে জোরদার করা, নারীর সামাজিক সাংস্কৃতিক অধিকার ফিরিয়ে দেয়া এবং কয়েক হাজার বছরের অধিকার বঞ্চনা থেকে মুক্তি দেয়ার উদ্যোগ নেয়া উচিত। যদি শেখ হাসিনা এ কাজটি করতে পারেন, তবে তিনি ইতিহাস হয়ে যাবেন। তিনি তো জানেনই, কাউকে না কাউকে ঝুঁকি নিয়ে বড় কাজ করতে হয়। নারীদের ভোটাধিকার সম্পকের্ বলা হয়ে থাকে, রানি ভিক্টোরিয়া নারীদের ভোটাধিকার তার নিজের ক্ষমতাবলে না দিলে আরও কয়েকশ বছর লেগে যেত। খোদ মাকির্ন যুক্তরাষ্ট্রে নারীদের ভোটাধিকার পেতে শতবষর্ব্যাপী সংগ্রাম করতে হয়েছে। ভারতীয় নারীরা ভোটাধিকার ভোগ করেছে রানি ভিক্টোরিয়ারই কারণে। নইলে বাংলার মুসলিম মহিলারা সৌদি আরবের মতো ভোটাধিকারবঞ্চিতই থাকত।

শেখ হাসিনা বাংলাদেশে নারীর ক্ষমতায়নে অনেক কিছু করেছেন। তবে ওইগুলো ফেঁাড়ার ওপর প্রলেপ দেয়ার মতো। প্রকৃত অবস্থার পরিবতর্ন হয়নি। সম্পত্তির মালিকানা ও উত্তরাধিকারের পরিবতের্নর মাধ্যমেই সম্পত্তিভিত্তিক সমাজে নারীর অবস্থানগত পরিবতর্ন হয়। সে কারণে নারীর ক্ষমতায়ন ঝিলিক মেরে মিলিয়ে যাচ্ছে।

উত্তরাধিকারের আইনে পরিবতর্ন এখন করা যাচ্ছে না। কিন্তু পালাের্মন্টে ‘সমবিধান’ আনতে পারলে, সমাজেও কালক্রমে ‘সমবিধান’ তৈরি হতে পারে। সুযোগ আর ক্ষমতা শেখ হাসিনার হাতেই। নারী-পুরুষের শতভাগ অংশগ্রহণমূলক গণতান্ত্রিক সরকার তৈরি করার এমন সুবণর্ সুযোগ হাতছাড়া করা উচিত হবে না। ভয় কি? তিনি তো আরও বহুদূর যাবেন।

ড. ইশা মোহাম্মদ: প্রাবন্ধিক ও কলাম লেখক

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<18181 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1