বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

এক মাসে ধর্ষণের শিকার ১০৭ নারী-শিশু অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি জরুরি

নতুনধারা
  ১৪ আগস্ট ২০২০, ০০:০০

করোনা মহামারিকালেও দেশে ধর্ষণ, গণধর্ষণ থেমে নেই। ধর্ষণের পর খুনের ঘটনাও বেড়েই চলেছে কোনো রকম প্রতিকারহীনভাবে। বিচারহীনতার সংস্কৃতি এ ধরনের অপরাধ বাড়ার মূল কারণ। স্থানীয় প্রশাসন তথা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ক্রমাগত ব্যর্থতা এর জন্য দায়ী। এক প্রতিবেদনে প্রকাশ, দেশে গত জুলাই মাসে ১০৭ জন নারী ও শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। আর সবমিলে এই এক মাসে ২৩৫ জন নারী ও কন্যাশিশু নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ। এর মধ্যে আবার গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন ১৪ জন। মঙ্গলবার বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু স্বাক্ষরিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। দেশের ১৩টি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত ঘটনার তথ্যের ভিত্তিতে এই প্রতিবেদন তৈরি করেছে সংস্থাটি। সংস্থাটি বলছে, এই এক মাসে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে তিনজনকে। এছাড়া ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে নয়জনকে। এছাড়া ১০৭টি ধর্ষণের ঘটনার মধ্যে শিশু ছিল ৭২ জন। জুলাই মাসে শ্লীলতাহানির শিকার হয়েছেন তিনজন নারী। নারী অপহরণের ঘটনা ঘটেছে মোট পাঁচটি। বিভিন্ন কারণে হত্যা করা হয়েছে ৪৬ জন নারী ও কন্যাশিশুকে। যৌতুকের কারণে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ১৫ জন। এর মধ্যে যৌতুকের কারণে হত্যা করা হয়েছে সাতজনকে। গৃহপরিচারিকা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ছয়জন। শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন চারজন। এছাড়া বিভিন্ন নির্যাতনের কারণে ১০ জন আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছেন এবং আত্মহত্যার প্ররোচনার শিকার হয়েছেন আরও দুজন। ১৮ জনের রহস্যজনক মৃতু্য হয়েছে এবং বাল্যবিয়ের শিকার হয়েছেন পাঁচজন। আর পাঁচ কন্যাশিশু সাইবার ক্রাইমের শিকার হয়েছে। এমন পরিস্থিতি খুবই উদ্বেগজনক।

আমরা কোনোভাবেই সমাজে নারী ও শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারছি না। এটা আমাদের জাতীয় ব্যর্থতা। আমরা এ ধরনের উদ্বেগজনক ঘটনা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছি না। মনে রাখতে হবে সামাজিক অস্থিরতা ও বিচারহীনতার কারণেই যৌন সহিংসতা, নির্যাতন, ধর্ষণ, গণধর্ষণ ও হয়রানি বাড়ছে। অপরাধ করে নিষ্কৃতি পাওয়ার একটি সংস্কৃতি দেশে চালু রয়েছে। যদিও সরকার এ ব্যাপারে বেশ কঠোর। এর পাশাপাশি সামাজিক অবক্ষয়ও একটা কারণ। সব ধর্ষণ গণধর্ষণের ঘটনা মিডিয়ায় আসে না। প্রকৃতপক্ষে ঘটনার ভয়াবহতা অনেক বেশি। রক্ষণশীল সমাজ হিসেবে বাংলাদেশের নারীদের লোকলজ্জা, সামাজিক মর্যাদা, মামলা করে হয়রানি এবং বিচারের দীর্ঘসূত্রতার কারণে অসংখ্য ঘটনা চাপা পড়ে যাচ্ছে। ফলে অপরাধীদের শাস্তি হচ্ছে না। উপরন্তু অপরাধে উৎসাহিত হচ্ছে।

এটা সত্য, সমাজের একশ্রেণির বর্বর পাষন্ড মানুষের হাতে অনেকের জীবনই বিপন্ন হয়ে পড়ছে, অবলীলায় জীবন চলে যাচ্ছে। এমনকি শিশুর জীবনও চলে যাচ্ছে। সমাজে নারী ও শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা জরুরি হয়ে পড়েছে। এটা ভাবতে বিস্ময় জাগে, কোনোভাবেই আমাদের সমাজ যেন আলোর দিকে অগ্রসর হতে পারছে না, কেবল অন্ধকারে খাবি খাচ্ছে। অবক্ষয় যেমন আমাদের সমাজকে দিন দিন গ্রাস করছে। সামাজিক অবক্ষয় চরম আকার ধারণ করেছে। সামাজিক শৃঙ্খলা ভেঙে পড়ার কারণেই মূলত এমনটি হচ্ছে। যারা সমাজকে, রাষ্ট্রকে পদে পদে কলুষিত করছে, সমাজকে ভারসাম্যহীন ও দূষিত করে তুলছে, সমাজের মানুষের নিরাপত্তা ও অধিকার ক্ষুণ্ন করছে, বিপন্ন করছে নারী-শিশুদের জীবন- তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। এ জন্য ব্যাপকভাবে গড়ে তুলতে হবে সামাজিক আন্দোলন এবং এর কোনো বিকল্প নেই।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<108687 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1