শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
মার্কিন গবেষণা

করোনা মহামারি থাকবে আরও দেড় থেকে দুই বছর!

সংক্রমিত হবে বিশ্বের মোট জনসংখ্যার দুই-তৃতীয়াংশ
যাযাদি ডেস্ক
  ০৩ মে ২০২০, ০০:০০
আপডেট  : ০৩ মে ২০২০, ১০:৪১

মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস বিশ্বজুড়ে আরও অন্তত দেড় থেকে দুই বছর সক্রিয় থাকতে পারে বলে ধারণা দিয়েছেন মার্কিন গবেষকরা। আগের মহামারিগুলো নিয়ে হওয়া গবেষণার ওপর ভিত্তি করে যুক্তরাষ্ট্রের 'সেন্টার ফর ইনফেকশাস ডিজিজ অ্যান্ড রিসার্চ পলিসি' (সিআইডিআরআইপি) বৃহস্পতিবার করোনাভাইরাসের স্থায়িত্বকাল নিয়ে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সংবাদসূত্র : রয়টার্স তাদের মতে, বিশ্বের মোট জনসংখ্যার দুই-তৃতীয়াংশের মধ্যে সংক্রমিত হয়ে 'হার্ড ইমিউনিটি' অর্জনের পরেই প্রাণঘাতী এই ভাইরাসটি অকার্যকর হতে শুরু করবে। প্রতিবেদনে যে তিনটি সম্ভাব্য পরিস্থিতির কথা বলা হয়েছে, তার কোনোটিতেই করোনাভাইরাস স্বল্প সময়ের মধ্যে 'মুছে যেতে পারে' এমন আশাবাদ মেলেনি। সংক্রমণের গতি-প্রকৃতি ও একে ঘিরে পরাশক্তিগুলোর মুখোমুখি অবস্থানের কারণে বিশ্ব পূর্ববর্তী সময়ে সহসাই ফিরছে না বলে মত বিশ্লেষকদের। সিআইডিআরআইপির প্রতিবেদনে দেওয়া তিনটি সম্ভাব্য চিত্রের প্রথমটিতে সংক্রমণের ধারাবাহিক 'উত্থান ও পতনের' ভেতর দিয়ে ২০২১ সালের মধ্যে করোনাভাইরাস ধীরে ধীরে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়বে বলে অনুমান করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, 'এই উত্থান-পতন অঞ্চলভেদে ভিন্ন হতে পারে। এটি নির্ভর করবে সংক্রমণ মোকাবিলায় নেওয়া বিধিনিষেধের ধরন এবং তা কীভাবে তুলে নেওয়া হচ্ছে, তার ওপর।' এ পরিস্থিতির ফলে আগামী এক থেকে দুই বছর নির্দিষ্ট সময় পরপর বিধিনিষেধ আরোপ ও তা শিথিল করতে হতে পারে বলেও মনে করা হচ্ছে। সম্ভাব্য দ্বিতীয় চিত্রটিকে 'সবচেয়ে ভয়াবহ' বলছে সিআইডিআরআইপি। এ ক্ষেত্রে শীতকালে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এখনকার চেয়ে অনেক অনেক বেশি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। গবেষকরা বলছেন, তেমনটা হলে এবারের মহামারিও শতবর্ষ আগের স্প্যানিশ ফ্লু'র কারণে হওয়া পরিস্থিতিরই পুনরাবৃত্তি ঘটাতে পারে। তখন লকডাউনের কঠোর বিধিনিষেধ ও সংক্রমণ হারের লড়াইয়ের ওপরই আক্রান্ত-মৃতের সংখ্যা কম হবে না বেশি, তা নির্ভর করবে। সিআইডিআরআইপির প্রতিবেদনে সবচেয়ে ইতিবাচক চিত্রেও করোনাভাইরাস ২০২২ সাল পর্যন্ত বিচরণ করবে ও মহামারি ধীরে ধীরে নিঃশেষ হতে পারে বলে সতর্ক করা হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে মৃতু্য কম হতে পারে বলে একে ইতিবাচক বলা হচ্ছে। গবেষকরা বলছেন, 'যে পরিস্থিতিই হোক না কেন, বিধিনিষেধের মাত্রা অন্তত এখনকার মতো হলেও মহামারি থাকছেই। আমাদের আরও অন্তত ১৮ থেকে ২৪ মাসের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।' বিভিন্ন দেশের সরকারগুলোকে চলতি বছরের মধ্যে টিকা আবিষ্কার কিংবা 'হার্ড ইমিউনিটি' অর্জিত হচ্ছে না, এমন বাজে পরিস্থিতি বা সম্ভাব্য দ্বিতীয় চিত্রের জন্য প্রস্তুতি নিতেও অনুরোধ করা হয়েছে। এমন এক সময়ে সিআইডিআরআইপি তাদের প্রতিবেদন দিল, যখন যুক্তরাষ্ট্রে মৃতু্যর মিছিল দীর্ঘায়িত হওয়া সত্ত্বেও দেশটির বিভিন্ন অঙ্গরাজ্য লকডাউনের বিধিনিষেধ শিথিল করে চলেছে। গত সপ্তাহের শুরুর দিকে কয়েকদিন মৃতু্যর সংখ্যা দেড় হাজারের নিচে থাকলেও এখন দেশটিতে দিনপ্রতি মৃতের সংখ্যা বেড়ে দুই হাজার তিনশ'র আশপাশে ঘোরাফেরা করছে। করোনায় এখন পর্যন্ত যত মানুষের মৃতু্য হয়েছে, তার এক-চতুর্থাংশের বেশিই যুক্তরাষ্ট্রের। এদিকে, এক পূর্বাভাসে দেশটিতে গ্রীষ্মকাল শেষ হওয়ার আগেই অন্তত এক লাখ লোকের প্রাণহানি হতে যাচ্ছে বলে ধারণা দেওয়া হচ্ছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে