শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
করোনার বিস্তার

আক্রান্তে সবাইকে ছাড়াল যুক্তরাষ্ট্র

দেশটিতে আক্রান্ত ৮৫ হাজার ৭৬২ মৃতের সংখ্যা ১ হাজার ৩০৪ জন যুক্তরাষ্ট্রে মারা যাবে ৮১ হাজার মানুষ : গবেষণা একজোট হয়ে লড়াইয়ের প্রত্যয় চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের
যাযাদি ডেস্ক
  ২৮ মার্চ ২০২০, ০০:০০
করোনাভাইরাসের প্রবল থাবায় নেতিয়ে পড়েছে বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর দেশ যুক্তরাষ্ট্রও। প্রতিদিনই আক্রান্ত ও মৃতের হার আশঙ্কাজনকহারে বাড়ায় দুশ্চিন্তায় দেশটির স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পেরও চড়া সুরে ভাটা পড়েছে। এদিকে, করোনার হানা থেকে বাঁচতে আপাতত নিজেদের ঘরবন্দি করে রেখেছেন মার্কিনিরা। নিউইয়র্কের টাইম স্কোয়ারের পাশে থেকে তোলা এই ছবিটিই বলে দিচ্ছে প্রাণবন্ত শহরে কতটা আঘাত হেনেছে করোনা -সিনহুয়া

যুক্তরাষ্ট্রে এখন করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্তের সংখ্যা বিশ্বের যেকোনো দেশের চেয়ে বেশি। আন্তর্জাতিক জরিপ সংস্থা 'ওয়ার্ল্ডোমিটার'র তথ্যানুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে এখন 'করোনাভাইরাস পজেটিভ' রোগীর সংখ্যা ৮৫ হাজার ৭৬২ জন। অর্থাৎ, আক্রান্তের দিক দিয়ে দেশটি এরই মধ্যে এ ভাইরাসের উৎপত্তিস্থল চীন এবং প্রাদুর্ভাবের নতুন কেন্দ্রস্থল ইতালিকেও পেছনে ফেলেছে। এছাড়া দেশটিতে এ পর্যন্ত মারা গেছে ১ হাজার ৩০৬ জন। সংবাদসূত্র : বিবিসি, রয়টার্স

জরিপ সংস্থাটির তথ্য মতে, চীনে এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে ৮১ হাজারের বেশি। আর ইতালিতে ৮১ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। গত বছরের শেষে চীনের উহান থেকে নতুন এই করোনাভাইরাসের উৎপত্তি হয়েছিল বলে ধারণা করা হয়। নানা কঠোর পদক্ষেপ এবং জনজীবনে বিধিনিষেধ জারি করে চীন আড়াই মাসে পরিস্থিতি অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আনতে পেরেছে। কিন্তু এরই মধ্যে প্রাণঘাতী এ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে বাকি বিশ্বে।

চীনের পর সবচেয়ে বেশি বাজে পরিস্থিতি ইতালিতে। সেখান থেকে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে পুরো ইউরোপ, আফ্রিকা, দক্ষিণ আমেরিকায়, আর দক্ষিণ এশিয়ার অনেক দেশে। মার্চের মাঝামাঝি সময়ে পরিস্থিতি এমন দাঁড়ায়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ইউরোপকে করোনাভাইরাস মহামারির নতুন কেন্দ্রভূমি হিসেবে ঘোষণা করে।

কিন্তু এরপর যুক্তরাষ্ট্রে আক্রান্তের সংখ্যা হু হু করে বাড়তে থাকে। দু'দিন আগে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানায়, যুক্তরাষ্ট্রই করোনাভাইরাস মহামারির নতুন কেন্দ্রভূমি হয়ে উঠতে যাচ্ছে। আক্রান্তের সংখ্যায় সবাইকে ছাড়িয়ে গেলেও যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা এখনো চীন বা ইতালির চেয়ে কম।

যুক্তরাষ্ট্রে মারা যাবে ৮১

হাজার মানুষ

এদিকে, মহামারি করোনাভাইরাসে যুক্তরাষ্ট্রে আগামী চার মাসে অন্তত ৮১ হাজার মানুষের মৃতু্য হতে পারে। আর জুনের আগে ভাইরাসটির প্রকোপ নাও কমতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন 'ইউনির্ভাসিটি অব ওয়াশিংটন স্কুল অব মেডিসিন'র একদল গবেষক। বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে তারা এ আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন।

গবেষকদের মতে, আগামী এপ্রিল মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাবে। এর মধ্যে কোনো কোনো রাজ্যে ওই মাসের শেষ দিকে রোগী বাড়তে পারে। জুলাইয়ের শেষ দিক পর্যন্ত এ ভাইরাসের কারণে কোনো কোনো রাজ্য থেকে মারা যাওয়ার খবর আসতে পারে।

সরকারি তথ্য, হাসপাতাল এবং অন্যান্য সূত্র থেকে পাওয়া তথ্য থেকে গবেষকরা ধারণা করছেন, ভাইরাসটিতে যুক্তরাষ্ট্রে কম বেশি হলে মৃতু্যর সংখ্যা ৩৮ হাজার থেকে এক লাখ ৬২ হাজার পর্যন্ত হতে পারে।

ক্যালিফোর্নিয়া হবে পরের নিউইয়র্ক

আর নিউইয়র্ক পরের ইতালি

অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্র করোনাভাইরাসে সবচেয়ে বেশি আক্রান্তের হিসাবে ইতালি ও চীনকে ছাড়িয়ে যাওয়ার পর ক্যালিফোর্নিয়ার লস অ্যাঞ্জেলস শহরের মেয়র এরিক গারসেত্তি আরও ভয়াবহ পরিস্থিতির আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। করোনায় যুক্তরাষ্ট্রের পরিণতি দিনকে দিন খারাপের দিকে যাবে বলে মনে করছেন তিনি।

গারসেত্তির মতে, 'ক্যালিফোর্নিয়া হতে যাচ্ছে পরের নিউইয়র্ক এবং নিউইয়র্ক হবে পরের ইতালি।' তিনি বলেন, 'একইভাবে এখন নিউইয়র্ক হতে যাচ্ছে পরের ইতালি এবং ইতালি হবে পরের ইরান। আর ইরান হবে পরের চীন। আপনি কোথায় থাকেন, তা ব্যাপার নয়। আপনি হতে পারেন পরের শিকার। ভাইরাস মানে না আপনি কোথায় আছেন।'

একজোট হয়ে লড়াইয়ের

প্রত্যয় চীন-যুক্তরাষ্ট্রের

এদিকে, চীনে করোনাভাইরাসের উৎপত্তি হলেও এখন তা ছড়িয়ে পড়েছে সারা বিশ্বে। তিন মাসের ব্যবধানে ভাইরাসের সংক্রমণও অনেক কমিয়ে এনেছে চীন। কিন্তু ইউরোপ ও আমেরিকায় লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্তের সংখ্যা। পুরো বিশ্বের শত্রম্ন একটাই 'করোনাভাইরাস'। এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে এবার একজোট হয়ে লড়াইয়ের প্রত্যয় বিশ্বের দুই পরাশক্তি চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৃহস্পতিবার এক ফোনালাপের পর চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বলেন, করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে একজোট হতে চায় দুই দেশ। ট্রাম্পকে শি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীন তাদের সব তথ্য ও অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করতে চায়।

ফোনালাপ শেষে ট্রাম্প টুইটারে লিখেছেন, দুই নেতা একসঙ্গে কাজ করবেন। তার টুইট, 'চীনা প্রেসিডেন্ট শির সঙ্গে খুব ভালো আলাপ হয়েছে। আমাদের পৃথিবীর অনেক অংশে থাবা বসানো করোনাভাইরাস নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। এ ভাইরাস সম্পর্কে অনেক ভালো জানে চীন, তারা এটা মোকাবিলা করেছে। আমরা একসঙ্গে কাজ করছি। অনেক শ্রদ্ধা রইল।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<94352 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1