শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
করোনাভাইরাস

করোনার নাগালে ১৪ দেশ

যাযাদি ডেস্ক
  ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০০:০০

বিশাল লাল ড্রাগন থরথর করে কাঁপছে। তার গায়ে বাসা বেঁধেছে করোনাভাইরাস। সেই কারণে নিস্তেজ বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী অর্থনীতির এই দেশটি। এটা যদি চীনের চিত্র হয়, তবে দেশটির সীমান্ত সংলগ্ন এশিয়া ও ইউরোপের মোট ১৪টি দেশও ভাইরাস হানার নাগালে। শুধু চীনের স্থল সীমান্তের এই ১৪টি দেশের কথা ধরলেই হবে না। এই দেশের রয়েছে বিপুল সমুদ্র সীমান্তও। সেই হিসাবে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের নাগালে আরও কিছু দেশ।

চীনের সীমান্ত মিশে রয়েছে মঙ্গোলিয়া, তাজিকিস্তান, কিরঘিজস্তান, কাজাখস্তান, আফগানিস্তান, পাকিস্তান, ভারত, নেপাল, ভুটান, মিয়ানমার, লাওস, ভিয়েতনাম এবং উত্তর কোরিয়া, রাশিয়া। এর পাশাপাশি রয়েছে হংকংয়ের মতো অতি জনঘনত্বের এলাকা ও স্বশাসিত দ্বীপ ম্যাকাও। এই ১৪টি দেশের সঙ্গে চীনের স্থল সীমান্ত; তাদের নিয়েই চিন্তা বেশি। কারণ, অতি জনসংখ্যা বা জনঘনত্বের দিক থেকে এই দেশগুলোর অন্তত ১২টি বিশেষভাবে আলোচিত। সেখানে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হলে অর্ধেক বিশ্বের মহামারির কবলে পড়ার আশঙ্কা প্রবল। একমাত্র ভুটানের ক্ষেত্রে পরিস্থিতি কিছুটা আলাদা। সেখানে জনসংখ্যা কম। কিন্তু বাকি দেশগুলো ও রাশিয়ার জনসংখ্যার কথা ধরলে চিন্তা বাড়ছে বিশেষজ্ঞদের।

আশঙ্কা- এসব দেশে যদি করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে, তাহলে অবস্থা হবে ভয়াবহ। এরই মধ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, চীনের সাম্প্রতিক ভাইরাস হানা হিমশৈলের চূড়া মাত্র। ভবিষ্যৎ আরও ভয়ঙ্কর।

এবার আসা যাক চীনের সমুদ্র সীমান্তের দিকে। পূর্বে পীত সাগর বা হলুদ সাগরের তীরে দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের মতো দেশ, আর দক্ষিণ চীন সাগরের উল্টো দিকে আছে ফিলিপাইন। আছে ইন্দোনেশিয়া, ব্রম্ননেইয়ের সঙ্গেও চীনের সমুদ্র সীমানা ও যোগাযোগ। এছাড়াও দক্ষিণ এশিয়ার সামুদ্রিক এবং আকাশপথ, বাণিজ্যপথের অন্যতম দুই দেশ মালয়েশিয়া এবং সিঙ্গাপুর চীনের খুব কাছে।

বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমের খবর, চীনের পর করোনাভাইরাসের সবচেয়ে বড়সড় ঝুঁকির মুখে পড়েছে ভিয়েতনাম। সীমান্ত বন্ধ করে একটি গুরুত্বপূর্ণ শহরকে সম্পূর্ণ অবরুদ্ধ করেছে দেশটির সরকার। এর বেশি কিছু জানতে দেওয়া হয়নি।

জাপানে ক্রমেই ছড়িয়েছে করোনাভাইরাস। মালয়েশিয়ায় মারা গেছেন অন্তত দুই জন। এদের একজন ভারতীয়। করোনাভাইরাসে মৃতু্যর খবর এসেছে জাপান, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, ফিলিপাইন, ফ্রান্স, তাইওয়ান থেকে। হংকংয়েও চিহ্নিত হয়েছে সংক্রমিত রোগী। জাপান উপকূলে নোঙর করে রাখা প্রমোদতরীটির ক্রু ও যাত্রীদের মধ্যেও করোনাভাইরাস ছড়িয়েছে। যদিও গত রোববার থেকে নিজ দেশের যাত্রীদের সরিয়ে নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এর মধ্যে প্রায় ৫০ জন করোনায় আক্রান্ত।

চীনে করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা সোমবার পর্যন্ত ১৭৭৫। প্রতিদিনই আসছে মৃতের সংখ্যা বৃদ্ধির খবর। এই অবস্থায় গোটা দুনিয়া থেকেই প্রায় বিচ্ছিন্ন চীন। প্রবল আতঙ্কে চীনের সঙ্গে সীমান্ত বন্ধ করেছে প্রায় সবকটি দেশই। তবে চীনেরই ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী উত্তর কোরিয়া একেবারেই নীরব। তাদের সরকারের কোনো বিবৃতি না থাকায় সেখানকার পরিস্থিতি নিয়েও বাড়ছে রহস্য। বিভিন্ন মহল থেকে দাবি করা হয়েছে, উত্তর কোরিয়ার একনায়ক শাসক কিম জং-উন বাস্তব পরিস্থিতি উপেক্ষা করে সব কিছু লুকিয়ে রাখছেন। কিন্তু দেশটি নীরব।

চীনের সঙ্গে সীমান্ত থাকা সর্বাধিক জনবহুল দেশ ভারত। যদিও ভারতে কয়েকজনের শরীরে এই ভাইরাসের সংক্রমণ হয়েছে। তবে সরকারের দাবি, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। আর নেপালেও নতুন করে করোনাভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তির সন্ধান মেলেনি। এখন নেপাল-চীন সীমান্ত বন্ধ। কাঠমান্ডু থেকে জানানো হয়েছে, আরও কিছুদিন দেখার পর দুই দেশের সীমান্ত পথ ফের খুলে দেওয়া হবে।

আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের সঙ্গে চীনের সীমান্ত এলাকাতেও আতঙ্ক প্রবল। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, এই দুই দেশের দুর্বল স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর কারণে বিপদের আশঙ্কা প্রবল। তবে আফগানিস্তানে সন্দেহজনক রোগীদের রক্ত ভারতে পরীক্ষা করা হচ্ছে।

রাশিয়া ও মঙ্গোলিয়া আগেই তাদের সীমান্ত সিল করে দিয়েছে। কিন্তু চীনের উইঘুর প্রদেশ সংলগ্ন কিরঘিজস্তান, তাজিকিস্তান, কাজাখস্তানে ভাইরাসের ছোবল মারাত্মক আকার নিতে চলেছে বলেই আশঙ্কা। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, চীনের সর্বত্রই এখন করোনাভাইরাসের ছোবল।

ফলে ভয়ে চীন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছে বিশ্ব। আর দেশটির গায়ে লেগে থাকা অন্য দেশগুলো আতঙ্কে কাঁপছে। সংবাদসূত্র : বিবিসি, রয়টার্স, সিনহুয়া

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<89038 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1