বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১
প্রাথমিক অনুমোদন পার্লামেন্টে

ক্ষমতা কবজায় রাখতে নতুন পথে পুতিন

জ্জ দেশটির সংবিধান পরিবর্তনের মাধ্যমে আবারও ক্ষমতায় আসার সুযোগ পাবেন তিনি
যাযাদি ডেস্ক
  ২৪ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০০
নিজের ক্ষমতাকে আরও সুসংহত করতে পার্লামেন্টের প্রাথমিক সম্মতি পেয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভস্নাদিমির পুতিন। দেশটির নতুন প্রধানমন্ত্রী মিখাইল মিশুস্তিনের সঙ্গে আলাপকালে তিনি -রয়টার্স

রাশিয়ায় বড় ধরনের সাংবিধানিক পরিবর্তনের প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভস্নাদিমির পুতিন। আর তাই প্রধানমন্ত্রীসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পদের নির্বাচনে পার্লামেন্টকে ক্ষমতা দেওয়ার পক্ষে নতুন প্রস্তাব পেশ করেছেন তিনি। তার সেই প্রস্তাব খসড়া আকারে পেশ করার পর বৃহস্পতিবার পুতিনের প্রস্তাবে প্রাথমিকভাবে অনুমোদন দিয়েছে দেশটির পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ দ্য স্টেট ডুমা। সংবাদসূত্র : রয়টার্স

রাশিয়ার সংবিধান অনুযায়ী, দেশটিতে কেউ দুই মেয়াদের বেশি প্রেসিডেন্ট থাকতে পারবেন না। ফলে ২০২৪ সালে মেয়াদ শেষ হওয়ার পর পুতিন বর্তমান সংবিধানের অধীনে আর রাশিয়ার নেতা থাকতে পারবেন না। সংবিধানের এই আমূল পরিবর্তনের মাধ্যমে পুতিন ভবিষ্যতে আবার রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতায় আসার সুযোগ পাবেন।

পুতিন বলছেন, পার্লামেন্টের শাসন ও গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করতে সংবিধান সংশোধনের প্রয়োজন। তবে পুতিনের সমালোচকদের দাবি, অতীতের মতো সংবিধান সংশোধন করে ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকতেই এ পরিবর্তন আনার পরিকল্পনা তার। পুতিন সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে আজীবন ক্ষমতায় থাকছে চাইছেন।

৬৭ বছরের পুতিন রাশিয়ায় ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় আছেন। জোসেফ স্টালিনের (১৯২৪-১৯৫৩) পর কোনো রাশিয়ান বা সোভিয়েত নেতা এত দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকেননি। দেশটির বিদ্যমান আইন অনুযায়ী, চলতি মেয়াদ শেষে আর প্রেসিডেন্ট হওয়ার সুযোগ নেই পুতিনের।

প্রেসিডেন্ট পুতিন সংবিধান সংশোধনের খসড়া বিলে বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিসভার সদস্যদের তাদের পদ থেকে সরানোর ক্ষমতা প্রেসিডেন্টের থাকা দরকার। দেশটির সামরিক বাহিনী ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোরও কর্তৃত্ব নিতে চান ভস্নাদিমির পুতিন। এর মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী পদে ফিরে আসতে পারবেন তিনি।

রাশিয়ার বিদ্যমান আইনে টানা দুইবার প্রেসিডেন্টে পদে থাকার সুযোগ রয়েছে। তবে পুতিন সংবিধান সংশোধন করে টানা দুইবারের পরিবরর্তে সব মিলিয়ে দুইবার করত চান। পুতিন ২০০৮ সাল পর্যন্ত রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট থাকার পর এক চালাকি করেন। সংবিধান সংশোধন করে তিনি প্রেসিডেন্টের চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা বাড়িয়ে (চার বছর থকে ছয় বছর) ওই বছর রুশ প্রধানমন্ত্রী হন। প্রেসিডেন্ট করেন দিমিত্রি মেদভেদেভকে। তারপর ২০১২ ও ২০১৮ সালে পুনরায় প্রেসিডেন্ট হন।

১৯৯৯ সালে তৎকালীন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট বরিস ইয়েলৎসিন পুতিনকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত করেন। অনেক রুশ তখন জানত না কে এই পুতিন। তার কয়েক মাস পর ইয়েলৎসিন অনেকটা নাটকীয়ভাবে পুতিনকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে স্থলাভিষিক্ত করেন। তারপর থেকে প্রায় দুই দশক ধরে পুতিন রাশিয়ার নেতা।

সম্প্রতি রাশিয়ার পুরো সরকার পদত্যাগ করেছে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী দিমিত্রি মেদভেদ গত বুধবার তার সরকারের পদত্যাগের ঘোষণা দেন। এরপর দেশটির নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কর বিভাগের প্রধান মিখাইল মিশুস্তিনের নাম ঘোষণা করেছেন পুতিন।

রাশিয়ার প্রধান বিরোধীদলীয় নেতা অ্যালেক্সেই নাভালনিসহ অন্যান্যরা এই বিলের বিরোধিতা করেছেন। তবে এ বিলের বিরোধিতায় কোনো শক্ত অবস্থান দেখাতে ব্যর্থ হয়েছে তারা। পুতিনের ক্ষমতায় গ্রহণের 'অবৈধ পদক্ষেপকে ঠেকাতে' আগামী ২৯ ফেব্রম্নয়ারি মস্কোয় বিশাল বিক্ষোভের ডাক দিয়েছেন বিরোধীদলীয় ইলিয়া ইয়াশিন।

২০২৪ সালে মেয়াদ শেষ হতে যাওয়া পুতিনের প্রেসিডেন্ট পদে থাকা না থাকা নিয়ে খোদ রাশিয়া এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নানা রকম গুঞ্জন চলছে। তবে নতুন সরকার গঠন না হওয়া পর্যন্ত বর্তমান সরকারই ক্ষমতায় থাকবে।

দেশের সাংবিধানিক পরিবর্তনের জন্য গণভোটেরও প্রস্তাব দিয়েছেন পুতিন। তবে ভোটের নির্দিষ্ট কোনো দিনক্ষণ ঘোষণা করেননি। তিনি বলেন, সংবিধানের আমূল পরিবর্তনে দেশের মানুষের মধ্যে ভোট হওয়া প্রয়োজন বলে আমি মনে করছি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<85676 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1