বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
কথার লড়াই দুই দেশের

শব্দচয়নে খামেনির সাবধান হওয়া উচিত :ট্রাম্পের হুঁশিয়ারি

ইরানের সর্বোচ্চ নেতার পক্ষ থেকে সমালোচনার পর মার্কিন প্রেসিডেন্টের এই প্রতিক্রিয়া দেশটির আরেক সেনা কর্মকর্তার ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা
যাযাদি ডেস্ক
  ১৯ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০০
ডোনাল্ড ট্রাম্প আয়াতুলস্নাহ খামেনি

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুলস্নাহ আলি খামেনিকে 'শব্দচয়নে' সাবধান থাকার কঠোর হুশিয়ারি দিয়েছেন। শুক্রবার জুমার নামাজের খুতবায় খামেনি যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় দেশগুলোর তীব্র সমালোচনা করার পর এক প্রতিক্রিয়ায় এ কথা জানান তিনি। সংবাদসূত্র : বিবিসি, রয়টার্স

এদিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, 'ইরানের তথাকথিক সর্বোচ্চ নেতা, যিনি ইদানিং আর অতখানি সর্বোচ্চ নন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ সম্পর্কে কিছু বাজে কথা বলেছেন। তাদের (ইরান) অর্থনীতি ধসে পড়ছে, জনগণ কষ্ট পাচ্ছে। তার উচিত কথাবার্তায় আরও সাবধানতা অবলম্বন করা।'

প্রায় আট বছর পর শুক্রবার প্রথমবারের মতো খামেনি হাজারো মানুষের সামনে খুতবা দেন। সর্বশেষ ২০১২ সালে ইসলামী বিপস্নবের ৩৩তম বার্ষিকী উপলক্ষে তেহরানের মসালস্না মসজিদে এ রকম খুতবায় অংশ নিয়েছিলেন তিনি। এদিন তিনি ইউক্রেনের বিমানটি ভূপাতিত করার বিষয়টিকে 'মর্মান্তিক বেদনাদায়ক ঘটনা' উলেস্নখ করে বলেন, মানবীয় ভুলে বিমান ভূপাতিত করার ঘটনা মার্কিন হামলায় নিহত কাসেম সোলাইমানির আত্মত্যাগকে ম্স্নান করতে পারবে না।

খামেনি বলেন, 'ইরানের শত্রম্নরা (যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা) মার্কিন ড্রোন হামলায় কাসেম সোলাইমানি হত্যার বিষয়টিকে আড়াল করতে এই বিমান বিধ্বস্তের ঘটনাকে ব্যবহার করছে। বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় আমরা যতটা দুঃখ পেয়েছি, আমাদের শত্রম্নরা ততটাই খুশি হয়েছে। তারা আমাদের সেনাবাহিনীকে প্রশ্নের মুখে ফেলতে পেরেছে, এতেই তারা খুশি।' তিনি বলেন, 'হিংস্র মার্কিন সরকারের মুখপাত্র ট্রাম্প বারবার বলেই যাচ্ছেন ইরানের জনগণের পাশে আছেন। আপনি মিথ্যা বলছেন।'

এদিন তিনি বিমান দুর্ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করলেও, যাদের ভুল করে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে, সেই সেনাবাহিনীর প্রতি সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন। ইরাকের সামরিক ঘাঁটিতে তেহরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা যুক্তরাষ্ট্রের গালে চড় বসিয়ে দিয়েছে বলেও মন্তব্য করেছেন দেশটির সর্বোচ্চ এই নেতা।

ইরানের শর্ত লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে ইউরোপের তিন দেশ ২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত পরমাণু চুক্তির 'বিরোধ নিষ্পত্তি' কার্যক্রম শুরু করায় তাদেরও কড়া সমালোচনা করেছেন খামেনি। যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানিকে ওয়াশিংটনের 'বার্তাবাহী ভৃত্য' বলে তিরষ্কারও করেছেন ইরানের এ সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা।

ছয় বিশ্বশক্তির সঙ্গে স্বাক্ষরিত ওই চুক্তি থেকে ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্র বেরিয়ে যায়। তারপর থেকেই ওয়াশিংটন ও তেহরানের মধ্যে উত্তেজনার পারদ চড়তে শুরু করে। চলতি মাসের শুরুতে ইরাকের বাগদাদ বিমানবন্দরে যুক্তরাষ্ট্র ড্রোন হামলা চালিয়ে ইরানের বিপস্নবী রক্ষীবাহিনীর বিদেশি শাখা কুদস বাহিনীর শীর্ষ কমান্ডার কাসেম সোলাইমানিকে হত্যা করে। এর বদলায় কয়েকদিন পর তেহরান ইরাকের দুটি সামরিক ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। এতে যুক্তরাষ্ট্রের '৮০ সন্ত্রাসী' নিহত হয়েছে বলে তেহরান দাবি করলেও ওয়াশিংটন তা অস্বীকার করে হামলায় তাদের কেউ নিহত হয়নি বলে জানায়। ইরানি হামলার পর ১১ মার্কিন সেনা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল বলে সম্প্রতি মার্কিন 'সেন্ট্রাল কমান্ড' নিশ্চিত করেছে; আহতদের চিকিৎসা চলছে বলেও জানিয়েছে তারা।

ইরানের আরেক সেনা কর্মকর্তার

ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা

এদিকে, ইরানের এক ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। সরকারবিরোধী বিক্ষোভে নিপীড়ন চালানোর অভিযোগে ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে শুক্রবার জানিয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। নিষেধাজ্ঞার কারণে ইরানের ইসলামী বিপস্নবী বাহিনী আইআরজিসির ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হাসান সাভারপুর যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে পারবেন না।

জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে গত বছরের নভেম্বরে ইরানে শুরু হয় বিক্ষোভ। ওই বিক্ষোভ ক্রমে সরকারবিরোধী আন্দোলনে রূপ নিলে তাতে সমর্থনের ঘোষণা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। বিক্ষোভে নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে কয়েকশ' মানুষ নিহত হয় বলে দাবি করেছে পশ্চিমা মানবাধিকার সংস্থাগুলো। বিক্ষোভে নিপীড়ন চালানোর অভিযোগে ইরানের তথ্যমন্ত্রীসহ বেশ কয়েকজন সেনা কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

শুক্রবার নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসা আইআরজিসির ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হাসান সাভারপুরের বিরুদ্ধে ইরানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর মাহশারে বিক্ষোভ দমনের অভিযোগ এনেছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির ইরানবিষয়ক বিশেষ দূত ব্রায়ান হুক বলেন, 'মাহশারের আশপাশে প্রাণঘাতী নিপীড়ন ও সহিংস অভিযান চালানো সেনা ইউনিটের কমান্ডার ছিলেন জেনারেল সাভারপুর।' তিনি বলেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরে উপস্থাপন করা ইরানি নাগরিকদের ভিডিও ফুটেজ ও ছবি বিশ্লেষণ করে সাভারপুরের অপরাধ নির্ণয় করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র এই ধরনের ৮৮ হাজার ছবি ও ফুটেজ পেয়েছে বলেও জানান হুক।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<84972 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1