যাযাদি ডেস্ক
তাইওয়ান আশঙ্কা প্রকাশ করেছে, তারা যেকোনো মুহূর্তে চীনের সামরিক আগ্রাসনের মুখোমুখি হতে পারে। তাইওয়ানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সৃষ্ট বাণিজ্য যুদ্ধের পরিস্থিতিতে যে অভ্যন্তরীণ সংকট সৃষ্টি হয়েছে, তা থেকে জনগণের মনোযোগ সরিয়ে দিতেই এমন হামলা চালাতে পারে বেইজিং। সংবাদসূত্র : রয়টার্স
চীন-তাইওয়ান বিরোধের সূত্রপাত ১৯২৭ সালে। ওই সময় চীনজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে গৃহযুদ্ধ। ১৯৪৯ সালে মাও জে দংয়ের নেতৃত্বাধীন কমিউনিস্ট বিপস্নবীরা জাতীয়তাবাদী সরকারকে উৎখাতের মধ্য দিয়ে এ গৃহযুদ্ধের অবসান ঘটায়। এরপর জাতীয়তাবাদী নেতারা পালিয়ে তাইওয়ান যান। এখনো তারাই তাইওয়ান নিয়ন্ত্রণ করেন। প্রাথমিকভাবে ওই সময় যুদ্ধ বন্ধ হয়ে পড়লেও উভয় দেশই নিজেদের চীনের দাবিদার হিসেবে উত্থাপন শুরু করে। তাইওয়ানভিত্তিক সরকার দাবি করে, চীন কমিউনিস্ট বিপস্নবীদের দ্বারা অবৈধভাবে দখল হয়েছে। আর বেইজিংভিত্তিক চীনের সরকার তাইওয়ানকে বিচ্ছিন্নতাকামী প্রদেশ হিসেবে বিবেচনা করে।
বুধবার রয়টার্সকে দেয়া সাক্ষাৎকারে তাইওয়ানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোসেফ উ ড্রিউ যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যকার বাণিজ্য যুদ্ধের প্রসঙ্গ তুলে ধরে বেইজিংয়ের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি কমে যাওয়ার দিকে ইঙ্গিত করেন। তিনি বলেন, 'চীনের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি যদিও একটি গুরুত্বপূর্ণ ইসু্য, যদিও তাদের শীর্ষ নেতারা বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছেন; তবুও ওই পরিস্থিতির কারণেই আমাদের আরও সতর্ক হতে হবে।' তিনি বলেন, 'সবচেয়ে নিকৃষ্ট পরিস্থিতির জন্য আমাদের প্রস্তুত থাকা দরকার, তা হলো সামরিক আগ্রাসন।' চীনে প্রবৃদ্ধি অব্যাহত থাকলেও বিগত ৩০ বছরের মধ্যে এই বছরের প্রবৃদ্ধি সবচেয়ে কম হওয়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। শাসক দল কমিউনিস্ট পার্টি এই প্রবৃদ্ধিকেই তাদের সাফল্য আকারে প্রচার করে থাকে।
ড্রিউ বলেন, প্রবৃদ্ধির গতি ধরে রাখতে না পারায় প্রেসিডেন্ট শি জিন পিংয়ের বৈধতা প্রশ্নের মুখে পড়েছে। এ কারণেই অভ্যন্তরীণ সংকট থেকে জনগণের মনোযোগ সরিয়ে দিতে বেইজিং তাইওয়ানে হামলা চালাতে পারে।
২০১৬ সালে ক্ষমতায় বসার পর থেকেই এই সরকারের ওপর চাপ অব্যাহত রেখেছে চীন। দুই দেশের মধ্যের সংলাপ বর্জন, তাইওয়ানের অবশিষ্ট কিছু কূটনৈতিক মিত্রদের ছেঁটে ফেলা ও বিদেশি বিমান সংস্থাকে তাইওয়ানকে চীনের অংশ হিসেবে তাদের ওয়েবসাইটে উলেস্নখ করতে বাধ্য করার মাধ্যমে এ চাপ অব্যাহত রেখেছে বেইজিং।