শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
তেলক্ষেত্রে হামলা

আমদানি করে সৌদির তেল রপ্তানি

ম বাণিজ্যের ধারা চালু রাখতে ইরাকের রাষ্ট্রীয় কোম্পানির শরণাপন্ন দেশটি ম হামলার ফলে সৌদির উৎপাদন অর্ধেকের বেশি হ্রাস
যাযাদি ডেস্ক
  ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০০:০০
সৌদি তেল স্থাপনায় হামলা -ফাইল ছবি

তেলক্ষেত্রে ড্রোন হামলার পর বিশ্বের সবচেয়ে বড় তেল রপ্তানিকারক দেশ সৌদি আরব এখন নিজেদের রপ্তানি প্রক্রিয়া চালু রাখতে তেল আমদানির পথে পা বাড়িয়েছে। এরই মধ্যে দেশটি বিদেশি অশোধিত তেল ও অন্যান্য পেট্রোলিয়াম পণ্য উৎপাদকদের সঙ্গে দরবার শুরু করেছে। এভাবে নিজেদের তেল সরবরাহ ঠিক রেখে তেল বাণিজ্যের ধারা চালু রাখার চেষ্টা করছে তারা। সংবাদসূত্র : বিবিসি, রয়টার্স

গত শনিবার ভোরে সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সবচেয়ে বড় জ্বালানি কোম্পানি আরামকোর দুটি তেলক্ষেত্র ড্রোন হামলার শিকার হয়। তার মধ্যে আবকাইক তেল স্থাপনায় বিশ্বের সর্ববৃহৎ তেল শোধনাগারটি রয়েছে। যার জেরে সৌদি আরবের দৈনিক তেল উৎপাদন অর্ধেকের বেশি হ্রাস পেয়েছে। বিশ্ববাজারে এর প্রভাবে তেলের দামও বেড়ে গেছে।

ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা তেলক্ষেত্রে ওই হামলার দায় স্বীকার করলেও ওয়াশিংটনের অভিযোগ, ইয়েমেন নয়, বরং ইরান থেকে হামলাটি চালানো হয়েছে। হামলায় কেউ হতাহত না হলেও তেল উৎপাদন কমে যাওয়ায় বিশ্ববাজারে তেল সরবরাহ কমেছে গড়ে পাঁচ শতাংশ। এক লাফে বেড়েছে অপরিশোধিত তেলের দাম।

এমন পরিস্থিতিতে নির্ভরযোগ্য তেল সরবরাহকারী দেশ হিসেবে সুনাম ধরে রাখতে সৌদি আরব অন্তত তার একটি প্রতিবেশী দেশের কাছ থেকে অশোধিত তেল কেনা এবং বিশ্ববাজার থেকে বাড়তি কিছু তেলজাত পণ্য কেনার চেষ্টা চালাচ্ছে বলে জানিয়েছেন তেল ব্যবসায়ীরা। মার্কিন সংবাদমাধ্যম 'দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল' জানিয়েছে, সৌদি আরব তৈলজাত পণ্য আমদানি করছে এবং ইরাকের কাছ থেকে ২০ লাখ ব্যারেল তেল নিচ্ছে।

সৌদি আরব মূলত অপরিশোধিত তেল রপ্তানি করে। আর মাটির নিচ থেকে তোলা কিছু তেল তারা পরিশোধন করে উৎপাদন করা ডিজেল, গ্যাসোলিন ও জ্বালানি তেল অভ্যন্তরীণ বিদু্যৎ উৎপাদন এবং পরিবহন জ্বালানি হিসেবে কাজে লাগায়। দেশটি সাধারণত অপরিশোধিত তেল আমদানি করে না।

সৌদি আরবের রাষ্ট্র মালিকানাধীন জ্বালানি কোম্পানি আরামকো বলেছে, ক্রেতাদের তেল সরবরাহের যে দায়বদ্ধতা তাদের আছে, তা তারা পালন করবে এবং একইসঙ্গে তেলক্ষেত্রে যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, সেটিও পূরণ করবে। তেলক্ষেত্রে হামলার পরই আরামকো অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটাতে বাজার থেকে ডিজেল, গ্যাসোলিন এবং জ্বালানি তেল সংগ্রহের চেষ্টা চালিয়েছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা। সৌদি আরব এখন রপ্তানির জন্য অপরিশোধিত তেল হাতে রাখতে চাইলে তারা দেশীয়ভাবে যে পরিমাণ তেল শোধন করে তাও কমানোর প্রয়োজন পড়বে।

পেট্রোলিয়াম রপ্তানিকারক দেশগুলোর সংগঠনের (ওপেক) হিসাব মতে, গত বছর সৌদি আরব দিনে গড়ে এক কোটি ৩০ লাখ ব্যারেল অপরিশোধিত তেল উৎপাদন করেছে এবং দিনে ৭৪ লাখ ব্যারেল অপরিশোধিত তেল রপ্তানি করেছে। এছাড়াও দিনে বাড়তি ২০ লাখ ব্যারেল পরিশোধিত তেলজাত পণ্যও তারা রপ্তানি করেছে।

কিন্তু গত সোমবারই দেশটি পূর্ণমাত্রায় তেল রপ্তানি চালু রাখতে তেলজাত পণ্য কেনার জন্য খোঁজখবর শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন ইতালীয় একটি তেল শোধনাগারের প্রধান নির্বাহী দারিও স্কাফার্দি। গ্রীষ্মের সময় এয়ারকন্ডিশনের কারণে বিদু্যৎ গ্রিডের জন্য জ্বালানির চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় সৌদি আরব অনেক সময় বাড়তি ডিজেল আমদানি করে। কিন্তু এ সপ্তাহে সৌদি আরবের এই চাহিদা আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে অনেক বেশি বেড়েছে বলেই মত ব্যবসায়ীদের।

এছাড়া, সৌদি আরব নিজেদের তেল শোধানাগারে তেল সরবরাহের জন্যই দুই কোটি ব্যারেল তেল পেতে ইরাকের রাষ্ট্রীয় তেল কোম্পানির শরণাপন্ন হয়েছে- এমনটিই জানিয়েছেন বিষয়টির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দুই কর্মকর্তা। আবকাইক তেল প্রক্রিয়াজাতকরণ পস্ন্যান্টে হামলার কারণে সৌদি আরবের অভ্যন্তরীণ শোধনাগারগুলোতে তেল শোধন দিনে ১৪ লাখ ব্যারেল কমে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এতে অভ্যন্তরীণ চাহিদার পাশাপাশি রপ্তানির জন্যও সৌদি আরবের তেল সরবরাহ কমবে বলে জানিয়েছেন ফ্যাক্টস গেস্নাবাল অ্যানার্জি ফার্মের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইমান নাসেরি। তিনি বলেন, 'সৌদি আরব এখন আন্তর্জাতিক বাজার এবং অপরিশোধিত তেল রপ্তানিকেই অগ্রাধিকার দিচ্ছে।' এদিকে, ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, সৌদি তেল কোম্পানি আরামকো এ সপ্তাহে দিনে অতিরিক্ত তিন লাখ ব্যারেল তেলজাত পণ্য আমদানির চেষ্টা চালাচ্ছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<67658 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1