শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১
ক্রাইস্টচার্চে হামলা

বর্ণবাদী মতাদর্শের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ডাক প্রধানমন্ত্রী আরডার্নের

জ্জ 'সবার জন্য নিরাপদ পৃথিবী নিশ্চিত করতে উগ্রপন্থা নির্মূলের বিকল্প নেই' জ্জ মসজিদে হামলায় নিহতদের দাফন শুরু
যাযাদি ডেস্ক
  ২১ মার্চ ২০১৯, ০০:০০
নিহতদের স্বজনদের সান্তনা দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্ন

ডানপন্থি বর্ণবাদী মতাদর্শকে নির্মূল করতে বিশ্বব্যাপী লড়াইয়ের ডাক দিয়েছেন নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্ন। ক্রাইস্টচার্চের দুই মসজিদে বন্দুকধারীর হামলার প্রেক্ষিতে বুধবার বিশ্ববাসীর প্রতি তিনি এ আহ্বান জানান। সংবাদসূত্র : বিবিসি, এএফপি, আল-জাজিরা

গত শুক্রবার ২৮ বছর বয়সী উগ্র ডানপন্থি অস্ট্রেলীয় নাগরিক ব্রেনটন ট্যারান্ট নামে সন্দেহভাজন হামলাকারীর লক্ষ্যবস্তু হয় নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের দুইটি মসজিদ। শহরের হাগলি পার্কমুখী সড়ক ডিনস এভিনিউয়ের আল নূর মসজিদসহ লিনউডের আরেকটি মসজিদে তার তান্ডবের বলি হয় অর্ধশত মানুষ।

ট্যারান্ট তার হামলার দৃশ্য ফেসবুকে লাইভ স্ট্রিমিং করে। স্বয়ংক্রিয় বন্দুক হাতে হামলাকারীর এগিয়ে যাওয়া, মসজিদের প্রবেশকক্ষ থেকে বিভিন্ন কক্ষে নির্বিচারে গুলি বর্ষণ আর রক্তাক্ত নৃশংস পরিস্থিতির ভিডিও মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

ক্রাইস্টচার্চে হামলার পর প্রথমবারের মতো সংবাদমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্ন। তার কাছে উগ্র ডানপন্থি জাতীয়তাবাদের উত্থান সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়।

জবাবে আরডার্ন বলেন, 'সে (ক্রাইস্টচার্চের হামলাকারী) অস্ট্রেলীয় নাগরিক ছিল। এর মানে এ নয় যে নিউজিল্যান্ডে এ মতাদর্শের মানুষ নেই। তবে নিউজিল্যান্ডের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ একে ঘৃণা করে।'

জাসিন্ডা আরডার্ন মনে করেন, ডানপন্থি জাতীয়তাবাদী মতাদর্শের অস্তিত্ব খুঁজে বের করে একে নির্মূল করতে হবে। পাশাপাশি এ ধরনের মতাদর্শের উত্থানের পরিবেশ যেন সৃষ্টি না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে। বিশ্বকে ডানপন্থি বর্ণবাদী মতাদর্শের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের আহ্বান জানিয়ে জাসিন্ডা বলেন, 'অন্য কোথাও বড় হয়ে ওঠা ও সেখানকার মতাদর্শকে ধারণকারী ব্যক্তির সহিংস কর্মকান্ডের বলি হয়েছে নিউজিল্যান্ড। আমরা যদি আন্তর্জাতিকভাবে নিরাপদ, সহিষ্ণু ও সম্মিলিত জগত নিশ্চিত করতে চাই, তবে সীমানার মধ্যে আটকে থেকে তা চিন্তা করা যাবে না।'

এর আগে মঙ্গলবার পার্লামেন্টের বিশেষ অধিবেশনে দেয়া ভাষণে জাসিন্ডা আরডার্ন ক্রাইস্টচার্চ হামলাকারীর নাম মুখে না নেয়ার শপথ নেন। বলেন, 'সন্ত্রাসী কর্মকান্ড সংঘটনের মধ্য দিয়ে সে অনেক কিছু চেয়েছে। এর একটি হলো নিজের অপকর্মের প্রচার চাওয়া। সে কারণে আপনারা আমার মুখে কখনো তার নাম শুনবেন না।'

হামলায় নিহতদের

দাফন শুরু

এদিকে, দুটি মসজিদে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত ব্যক্তিদের লাশ দাফন শুরু হয়েছে। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে প্রথম ধাপে বুধবার দুজনের লাশ দাফন করা হয়েছে। সব লাশ এখনো স্বজনদের কাছে হস্তান্তর শেষ হয়নি। তবে শিগগিরই হস্তান্তর প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।

বুধবার প্রথম ধাপে যে দুজনের লাশ দাফনের জন্য নেয়া হয়, তারা বাবা এবং ছেলে। এ দুজনের জানাজার পর ক্রাইস্টচার্চ মেমোরিয়াল পার্ক কবরস্থানে তাদের দাফন করা হয়। সাদা কাফনে জড়ানো বাবা ও তার ছেলের লাশ নতুন খোঁড়া একটি কবরে কাবার দিকে মুখ করে শুইয়ে দেয়া হয়। নিউজিল্যান্ডের ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ এ সন্ত্রাসী হামলায় নিহতদের এই কবরস্থানেই দাফন করা হবে। জানাজা ও দাফনের সময় সেখানে কয়েকশ লোক উপস্থিত ছিলেন। টুপি পরা পুরুষদের পাশাপাশি সালোয়ার, কামিজ ও হিজাব পরা অনেক নারীও ছিলেন।

পার্কের ভিতরে একটা এলাকায় ওজু করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পুরো এলাকা নিরাপত্তা চাদরে ঢেকে ফেলা হয়েছে। পরিস্থিতির ওপর নজর রাখা পুলিশের রিভলভারের হোলস্টারে ও তাদের অত্যাধুনিক রাইফেলে গোঁজা ছিল ফুল।

দাফনে যোগ দিতে অকল্যান্ড থেকে ক্রাইস্টচার্চে আসা গুলশাদ আলী নামের এক ব্যক্তি জানান, খাটিয়া থেকে লাশ কবরে নামানোর সময় এক আবেগঘন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। 'লাশ কবরে শুইয়ে রাখা হচ্ছে, আমরা তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছি, খুব কষ্ট হচ্ছে।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<41981 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1