মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১
এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ নারী চ্যাম্পিয়নশিপ

নারী ফুটবলের বড় অর্জন

মাহবুবুর রহমান
  ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০০:০০

'এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ নারী চ্যাম্পিয়নশিপ'-এ দ্বিতীয়বারের মতো অংশ নিয়েও গ্রম্নপ পর্বেই সমাপ্ত হয়েছে বাংলাদেশের মিশন। যেটি একই সঙ্গে অনূর্ধ্ব-১৭ নারী বিশ্বকাপেরও বাছাই। দুই আসরে লাল-সবুজের মেয়েদের বড় প্রাপ্তি শক্তিধর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ২-২ গোলের ড্র। বাংলাদেশ দলের কোচ গোলাম রব্বানী ছোটনও এটিকে দেশের নারী ফুটবলের 'বড় অর্জন' বলে অভিমত দিয়েছেন। অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপের স্বপ্ন চোখে নিয়ে এবারের 'এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ নারী চ্যাম্পিয়নশিপ'র চূড়ান্ত পর্বে অংশ নিয়েছিল বাংলাদেশ। যদিও ২০১৭ সালে একই আসরে ভরাডুবি হয়েছিল দলের। তারপরও দুই বছরে বাংলাদেশের ফুটবলের উন্নতিটা মাঠে দেখাতে চেয়েছিলেন কোচ ছোটন। তবে গত আসরের মতোই এবারও বিশ্বকাপে খেলার স্বপ্নটা পূরণ হয়নি তহুরাদের। গ্রম্নপ পর্বে নিজেদের প্রথম ম্যাচে স্বাগতিক থাইল্যান্ডের কাছে ১-০ গোলের ছোট ব্যবধানের হার। এরপর শক্তিধর জাপানের কাছে ৯-০ গোলে বিধ্বস্ত হয়ে নকআউট পর্বে খেলা আর অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপের স্বপ্ন ভেঙে যায় আঁখি-মারিয়াদের। কিন্তু দমে যাননি কোচ ছোটন। মানসিকভাবে উজ্জীবিত করতে চেষ্টা করে গেছেন শিষ্যদের। নিজেদের উন্নতিটা অন্তত শেষ ম্যাচে দেখাতে চেষ্টা করেছে তারা। সফলও হয়েছে। শক্তিধর অস্ট্রেলিয়া। যারা কিনা 'এ' গ্রম্নপের চ্যাম্পিয়ন হবার জন্য লড়াই করছিল। তাদের বিপক্ষেই প্রায় জিততে জিততেই ২-২ গোলের ড্র করে মাঠ ছাড়ে বাংলার বাঘিনীরা। বাংলাদেশের কাছে হারানো একটি পয়েন্টই দলটিকে হতে দেয়নি গ্রম্নপের চ্যাম্পিয়ন। সেই আক্ষেপটা নিশ্চই পুড়িয়েছে অস্ট্রেলিয়ানদের। অন্যদিকে পরপর দুই হারে কোন স্বপ্নই আর বাকি ছিল না বাংলাদেশের। শেষ ম্যাচে এমন শক্তিধর প্রতিপক্ষের বিপক্ষে তহুরা-মারিয়াদের দুর্দান্ত পারফরম্যান্স নিঃসন্দেহে বড় প্রাপ্তি দেশের ফুটবলের জন্য। এমন আন্তর্জাতিক ম্যাচে স্ট্রাইকার তহুরা একাই করেছেন দুটি গোল। সেটিও একটি বড় অর্জন। এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ চ্যাম্পিয়নশিপের চূড়ান্ত পর্বে প্রথমবারের মতো পয়েন্ট অর্জন করে এক নতুন ইতিহাসও রচনা করেছে বাংলাদেশের মেয়েরা। কোচ ছোটনও শিষ্যদের এ কৃতিত্বে দারুণ খুশি। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, 'অস্ট্রেলিয়ার মতো এমন শক্তিধর দলের বিপক্ষে মেয়েদের এই ফলাফল শুধু আমার জন্যই আনন্দের নয়। দেশের নারী ফুটবলকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে।' তবে মেয়েদের পারফরম্যান্স এবং কঠিন প্রতিপক্ষের বিপক্ষে ড্র'তে সন্তুষ্ট হলেও পুরো টুর্নামেন্টের ফলাফলে খুশি নন কোচ ছোটন, 'সত্যিকার অর্থে আমরা খুশি নই। কারণ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে মেয়েরা দেখিয়ে দিয়েছে যে তারা এ ধরনের বড় টুর্নামেন্টে খেলার যোগ্যতা রাখে। প্রথম ম্যাচে দুর্ভাগ্যবশত থাইল্যান্ডের বিপক্ষে আমরা জিততে পারিনি। আর দ্বিতীয় ম্যাচটা ছিল আমাদের দলের জন্য বড় বিপর্যয়। তবে তৃতীয় ম্যাচে দারুণভাবে ফিরে এসেছে মেয়েরা। এবং অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খুবই ভালো খেলেছে।' 'পার্থক্যটা ছিল মানসিকতার। দুই ম্যাচে পরাজয়ের পর আমরা খেলোয়াড়দের মানসিকভাবে উজ্জীবিত করার চেষ্টা করেছি। তারা মানসিকভাবে প্রস্তুত হয়েছিল এবং তারা কতটা উন্নতি করেছে সেটি দেখাতে তাদের সেরাটা দিয়েছে। এটাই ফুটবল। থাইল্যান্ডের কাছে আমরা একটি সেটপিস থেকে হেরেছি। আর অস্ট্রেলিয়ার মতো বড় দলের সঙ্গে আমরা ড্র করেছি।' যোগ করেন ছোটন। এর আগে ২০১৭ সালে একই আসরের মূল পর্বে অংশ নিয়ে ভরাডুবি হয়েছিল বাংলাদেশের। সেবারও গ্রম্নপ পর্ব উৎরাতে পারেনি তারা। ওই আসরে 'বি' গ্রম্নপে খেলে বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচে উত্তর কোরিয়ার কাছে ৯-০ গোলের হারে শুরু। জাপানের বিপক্ষে ৩-০ এবং অস্ট্রেলিয়ার কাছে ৩-২ গোলে হেরেছিল লাল-সবুজের মেয়েরা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে