ক্রীড়া ডেস্ক
সুইডেনকে ২-০ গোলে হারিয়ে ২৮ বছর পর বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে পা রেখেছে ইংল্যান্ড। ১৯৯০ সালে শেষবার শেষ চারে খেলেছিল ইংলিশরা। সুইডেন জুজু কাটিয়ে এখন তারা ৫২ বছরের আক্ষেপ ঘুচানোর স্বপ্ন দেখছে। সেই ১৯৬৬ সালে প্রথম এবং এখন পযর্ন্ত শেষবারের মতো বিশ্বকাপ জয়ের উন্মাদনায় ভেসেছিল ইংলিশরা। সেই সাফল্যের পুনরাবৃত্তি ঘটানোর সুযোগ এসেছে রাশিয়ায়। আর দুটি ম্যাচ জিতলেই হাতে উঠবে শিরোপা। এমন পরিস্থিতিতে ইংল্যান্ডের কোচ গ্যারেথ সাউথগেটের মধ্যে কাজ করছে অবিশ্বাস এক অনুভূতি!
বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের কাছে সুইডেন এত দিন ছিল বড় এক ধঁাধার নাম! ফুটবল শ্রেষ্ঠত্বের মঞ্চে কখনোই সুইডেনকে হারাতে পারেনি তারা। শনিবার লাইনটা বদলে দিয়েছে সাউথগেটের শিষ্যরা। তারা দেখিয়েছে, বিশ্বকাপে সুইডেনকে হারাতে পারে ইংল্যান্ড এবং তা দাপটের সঙ্গেই। সুইডেন জুজু কাটিয়ে হ্যারি কেনের দল এখন বিশ্বজেয়র স্বপ্ন দেখছে। ম্যাচ শেষে ইংল্যান্ডের কোচ সাউথগেট বলেছেন, ‘আশা করি, দেশে সবাই আজকের রাতটা উদযাপন করছে। কারণ, এমনটা হরহামেশা ঘটে না। এটা অবিশ্বাস্য এক অনুভূতি।’
স্কোরলাইনের ২-০ দেখলে মনে হতে পারে, ম্যাচটা একপেশে হয়েছে। আসলে তা নয়। বল দখলের লড়াই ও আক্রমণে হ্যারি কেনের দল এগিয়ে থাকলেও প্রতি-আক্রমণ থেকে বারবার ইংলিশদের পরীক্ষা নিয়েছে সুইডিশরা। ম্যাচটা কঠিন হবে, আগেই জানতেন সাউথগেট। তাই কলম্বিয়া ম্যাচের পরই দলকে সতকর্বাতার্ দিয়ে রেখেছিলেন ইংলিশ কোচ। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, ‘আমরা জানতাম ম্যাচটি খুবই কঠিন হবে। কলম্বিয়ার বিপক্ষে ম্যাচটি অতিরিক্ত সময়ের পর পেনাল্টিতে গড়িয়েছিল। তাই সব আবেগ অনুভূতি সেদিকেই ছিল।’
বিদায় নেয়া সুইডেনের সামনে এদিন চীনের প্রাচীর হয়ে দঁাড়িয়েছিলেন ইংল্যান্ডের গোলরক্ষক জডার্ন পিকফোডর্। গোল খাব না- এই দৃঢ়বিশ্বাস নিয়েই যেন মাঠে নেমেছিলেন সাঊথগেটের শিষ্যরা। ইংলিশ কোচ বলেছেন, ‘আমরা জানতাম, অধিকাংশ সময় বল আমাদের দখলে রাখতে হবে। আর এটাই ছিল তাদের রক্ষণ ভেদ করার উপায়। কারণ সুইডেন খুব সুসংগঠিত একটা দল।’
সুইডেনের বিপক্ষে ম্যাচে দুটি গোলই এসেছে হেড থেকে। এই বিশ্বকাপে বাকি দলগুলোর চেয়ে ইংল্যান্ড মাথা দিয়েই বেশি গোল করেছে। ১১ গোলের মধ্যে ৫টিই তারা করেছে হেড থেকে। ‘সেটপিস’ অথার্ৎ ‘ডেড বল’ পরিস্থিতি থেকে এসেছে ৮ গোল। যা ইংল্যান্ডের করা মোট গোলের ৮০ শতাংশ। যেকোনো দলের থেকে তারা দুটি গোল বেশি করেছে ‘সেটপিস’ থেকে। সবমিলে শিষ্যদের পারফরম্যান্সে সন্তুষ্ট সাউথগেট।
আর মাত্র দুটি হ্যারি কেনের দল জয়যাত্রা অব্যাহত রাখতে পারলে ১৯৬৬ সালের মতো আবার বিশ্বকাপ জয়ের আনন্দে মাতবে ইংল্যান্ড। এমন পরিস্থিতিতে দঁাড়িয়ে দল ফাইনালে খেলতে না পারলে সেটা চরম হতাশার হবে বলেই মনে করছেন সাঊথগেট, ‘ফাইনালে পেঁৗছাতে না পারাটা হবে চরম লজ্জার একটি ব্যাপার। ছেলেরা যেভাবে মাঠে লড়েছে, নিজেদের সেরাটা দিয়ে জয় এনেছে সেজন্য তাদের অভিনন্দন জানাই। এই জয়ে আমরা গবির্ত। একইসঙ্গে সুইডেনের দারুণ প্রতিদ্ব›িদ্বতার জন্যে অভিনন্দন জানাই।’
নতুন এক ইতিহাস গড়ার হাতছানি ইংল্যান্ডের সামনে। শিষ্যদের ওপর আস্থা আছে কোচ সাউথগেটেরও। তিনি এখন ১৫ জুলাই মস্কোর ফাইনালের দৃষ্টি রাখছেন, ‘আমরা এখানেই থেমে যেতে চাই না। আমরা আরও দুইটি ম্যাচ খেলতে চাই। আমরা খুবই উজ্জীবিত আছি। মস্কোর ফাইনালে পেঁৗছতে না পারলে সেটি হবে ভীষণ হতাশার বিষয়।’