শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

আপেলের দামে রেকডর্

যাযাদি রিপোটর্
  ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০০:০০
আপডেট  : ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ২৩:৫৭

হঠাৎ করেই দেশের বাজারে অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে আপেলের দাম। রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে খুচরা পযাের্য় এক কেজি আপেল ২৭০ টাকা পযর্ন্ত বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় আপেলের এমন অস্বাভাবিক দাম বেড়েছে বলে জানিয়েছেন আমদানিকারক ও আড়তদাররা। তবে খুচরা পযাের্য় যে দামে আপেল বিক্রি হচ্ছে তাকে অস্বাভাবিক বলছেন তারা।

তাদের মতে, খুচরা পযাের্য় আপেলের দাম সবোর্চ্চ ২০০ টাকা হতে পারে।

বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সবুজ রঙের আপেল বাজার ও মান ভেদে বিক্রি হচ্ছে ২৫০-২৭০ টাকা কেজি দরে। চায়না আপেল বিক্রি হচ্ছে ১৮০-২০০ টাকায়। ২৫০-২৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে অস্ট্রেলিয়ান আপেল।

রামপুরার ফল ব্যবসায়ী মো. তোয়াব মিয়া বলেন, ‘কোরবানির ঈদের পর থেকেই আপেলের দাম বাড়তি। ঈদের আগে যে আপেল ১২০-১৩০ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে, এখন সেই আপেলের দাম বেড়ে হয়েছে ২৫০ টাকা। আর ৮০-১০০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া আপেলের দাম বেড়ে হয়েছে ১৮০ টাকা। অথার্ৎ সব ধরনের আপেলের দামই দ্বিগুণ হয়েছে।’

আপেলের দাম বৃদ্ধির কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সাত বছরেরও বেশি সময় ধরে ফলের ব্যবসা করছি। এর আগে কখনো এত বেশি দামে আপেল বিক্রি করিনি। এখন আড়তে আপেলের অনেক দাম, যে কারণে আমাদের বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। আড়তে দাম কমলে আমরাও কম দামে বিক্রি করতে পারব।’

শান্তিনগরে সবুজ রঙের আপেল ২৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে দেখা যায় ব্যবসায়ী জামাল হোসেনকে। তিনি বলেন, ‘১৫-২০ দিন ধরে ২৫০-২৭০ টাকা কেজি দরে সবুজ আপেল বিক্রি করছি। এর আগে কোনো দিন এতো বেশি দামে আপেল বিক্রি করিনি। কোরবানির ঈদের পর থেকেই আড়তে সব ধরনের আপেলের দাম বেড়েছে, তাই আমরাও বাড়তি দামে বিক্রি করছি।’

খেঁাজ নিয়ে জানা গেছে, আড়তের তুলনায় খুচরা বাজারে কেজিতে আপেলের দাম প্রায় ১০০ টাকা বেশি রাখা হচ্ছে। খুচরা বাজারে ২৫০ টাকার ওপরে বিক্রি হওয়া সবুজ রঙের আপেল বাদামতলীর আড়তে বিক্রি হচ্ছে ১৬০-১৬৫ টাকায়।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ফ্রেস ফ্রুটস ইম্পোটাসর্ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এবং সাথী ফ্রেস ফ্রুটসের কণর্ধার মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘সবুজ রঙের দক্ষিণ আফ্রিকার সব থেকে ভালো আপেল আমরা মঙ্গলবার বিক্রি করছি ১৬২ টাকা কেজি দরে। এর সঙ্গে সব খরচ যোগ করলেও খুচরা পযাের্য় এ আপেলের দাম ২৫০ টাকা হতে পারে না। খুচরা পযাের্য় সবুজ আপেলের দাম ২০০ টাকার ওপরে হওয়ার কথা নয়।’

খুচরা পযাের্য় ২৫০ টাকা কেজি দরে আপেল বিক্রি হওয়াকে অস্বাভাবিক বললেও অতীতের যে কোনো সময়ের তুলনায় এখন দেশের বাজারে আপেলের দাম বেশি বলে স্বীকার করেছেন তিনি। এমন দাম বৃদ্ধির কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘ভারত ও চীনে এখন আপেলের সিজন (মৌসুম) না। ফলে আমদানি না থাকায় বাজারে আপেলের সরবরাহে সংকট দেখা দিয়েছে। যে কারণে দাম বেড়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘দীঘির্দন ধরে আমদানিকারকদের আপেলে লোকসান হয়েছে। তিন মাস ধরে আপেলের আমদানি নেই। আমের মৌসুমে প্রচুর আম হয়েছিল। ফলে যারা গোডাউনে আপেল রেখেছিল, তারা অনেক টাকা লোকসান করেছেন। আমের দাম কম হওয়ার কারণে আপেল বিক্রি করতে পারিনি। আর এখন মৌসুম না হওয়ায় সরবরাহ সংকট দেখা দিয়েছে। তবে আমরা আশা করছি ১৫ দিনের মধ্যে এ সংকট কেটে যাবে। কাশ্মিরীসহ বিভিন্ন আপেল বাজারে আসবে। ফলে দামও কমবে।‘

এর আগে কখনো এতো বেশি দামে আপেল বিক্রি করেছেন কি? এমন প্রশ্নে এ ব্যবসায়ী নেতা বলেন, ‘বাজারে আপেলের এমন সংকট দেখা দিবে এটা ধারণায় ছিল না। এবার আবহাওয়া ভালো থাকার কারণে এক মাস ধরে কোনো বৃষ্টি নেই। আর বৃষ্টি না থাকায় বিক্রি ভালো হয়েছে। এতে বাজারে আপেলের সংকট বেড়ে গেছে।’

বাংলাদেশ ফ্রেস ফরুটস ইম্পোটাসর্ অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি এবং খাজা ফরুট স্টোরের মালিক হাজী বরাত মিয়া বলেন, ‘এক মাস আগে আমদানিকারকরা অনেক লোকসান করেছে। ফলে সবাই আপেল আমদানি বন্ধ রেখেছে। এতে বাজারে সরবরাহ কমে গেছে। যে কারণে আপেলের দাম এতো বেড়ে গেছে।’

আমদানি পযাের্য় দাম বাড়েছে কি-না? এমন প্রশ্নে বাদামতলীর প্রভাবশালী এ ব্যবসায়ী বলেন, আমদানি পযাের্য় দাম না বাড়লেও আমদানি একদম কমে গেছে। আবার ডলারের দাম ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে। ডলারের দাম বৃদ্ধির কারণে মালের দাম কিছুটা হলেও বেড়ে যাচ্ছে। তবে আপেলের দাম এমন থাকবে না। কিছুদিনের মধ্যে ঠিক হয়ে যাবে।

ব্যবসায়ীদের লোকসানের কারণ কী, জানতে চাইলে হাজী বরাত মিয়া বলেন, ‘বাজারে এবার আম অনেক বেশি ছিল। ২০-৩০ টাকা কেজি দরে আম বিক্রি হয়েছে। এতো কম দামে আম পাওয়ায় আপেলও কম দামে বিক্রি হয়েছে। আবার পোটের্ রাখতে রাখতে অনেক আপেল নষ্টও হয়েছে। যে কারণে ব্যবসায়ীদের অনেক লোকসান দিতে হয়েছে।’

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<12057 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1