প্রশ্ন : সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অভিনেত্রী হিসেবে আপনি অসাধারণ অভিনয় দর্শকদের উপহার দিচ্ছেন। একজন অভিনেত্রী হিসেবে নিজেকে কীভাবে বিচার করেন?
দীপিকা : আমার মনে হয় গত ১০ বছরে অনেক কিছু শিখেছি এবং আগামী কুড়ি বছর আরও অনেক কিছু শিখতে চাই। কেরিয়ারের শুরুর দিকে মানুষ সমালোচনা করলেও আমি সেটা ইতিবাচক দিক থেকেই দেখেছি। কারণ, জানতাম সমালোচনা না হলে নিজেকে শোধরাতে পারব না।
প্রশ্ন : 'ছপাক' এ অভিনয় করতে গিয়ে তো আপনি লক্ষ্ণীর সঙ্গে আবেগে জড়িয়ে পড়েছেন। এই ছবির মাধ্যমে কি আপনি তাকে নতুন জীবন দিলেন?
দীপিকা : আমার মনে হয় লক্ষ্ণীর জীবনে আমরা কোনো বদল আনতে না পারলেও ওর এ সফরটা অসংখ্য এসিড আক্রান্ত মহিলাকে অনুপ্রেরণা জোগাবে।
প্রশ্ন : কিন্তু তিনি তো অপারেশনের মাধ্যমে একটা সুন্দর মুখের অধিকারী হয়ে উঠতে পারতেন?
দীপিকা : দেখুন, আমার মনে হয় না তার সমবেদনার প্রয়োজন! তারা শুধু সমাজে সমান অধিকার দাবি করেন মাত্র। আমাদের বোঝা উচিত যে এসিড আক্রান্তদের মুখ কোনো অক্ষমতা নয়! তারাও বিশেষভাবে সক্ষম। ছবিটা এসিড আক্রান্তদের প্রতি সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি বদলাবে।
প্রশ্ন : পুরুষদের অহংবোধই কি এসিড আক্রমণের মূল কারণ?
দীপিকা : হঁ্যা, তবে আরও অনেক কারণ রয়েছে। প্রতিশোধও হতে পারে বা হয়তো প্রত্যাখ্যান। সম্প্রতি দেখলাম একজন একটা বাচ্চা ছেলেকে এসিড আক্রমণ করেছে; কারণ, বাচ্চাটির মা সেই লোকটাকে বিয়ে করেনি।
প্রশ্ন : আপনার কাছে লক্ষ্ণী হয়ে ওঠা কতটা কঠিন ছিল?
দীপিকা : সত্যি বলতে এর আগেও আমি অনেক কঠিন চরিত্রে অভিনয় করেছি। কিন্তু আমার মনের ওপর সেগুলো এরকম তীব্র প্রভাব বিস্তার করেনি। কোমর বেঁধে প্রস্তুতি নিতে হয়েছিল। প্রচুর ওয়ার্কশপ, রিহার্সাল করেছিলাম। তারপর মেকআপ নিয়ে লক্ষ্ণীর ওই জীবনটায় প্রবেশ করা আমার কাছে একটা স্মরণীয় অভিজ্ঞতা।
প্রশ্ন : এই ছবিটা কি ইন্ডাস্ট্রির নায়িকাদের নতুন বার্তা দেবে? কারণ পর্দায় নায়িকা মানেই তো রূপসী হওয়া চাই!
দীপিকা : যুগ যুগ ধরে বলিউডের মূল ধারার ছবিতে তো এটাই হয়ে আসছে। নায়িকাদের দোষ দেব কেন। যারা চিত্রনাট্য লিখছেন তাদেরও তো দায়িত্ব থাকে। আমার ভাগ্য ভালো যে, লক্ষ্ণীর মতো একটা চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পেলাম। অভিনেত্রী হিসেবে এটাকে আমি কোনো সাহসী পদক্ষেপ বলতে চাই না। আমি সে রকম ছবিই করতে চাই, যেগুলো মানুষের জীবনে কোনো পরিবর্তন আনতে পারবে। তার মানে আবার এটা নয় যে, সবসময় ধর্ষণ বা এসিড আক্রমণের মতো কঠিন বিষয় নিয়েই ছবি করতে হবে, সহজ বিষয়ও হতে পারে। এই যেমন 'পিকু' বা 'তামাশা'।
প্রশ্ন : পর্দায় নিজের অভিনীত চরিত্রগুলোর সঙ্গে আপনার সম্পর্ক কি রকম?
দীপিকা : প্রত্যেকটা চরিত্রই আপনাকে কিছু না কিছু শেখায়। তারা আপনার চরিত্রকে প্রভাবিত করে। যেমন একটা সময়ে 'ককটেল'-এর ভেরোনিকার সঙ্গে নিজের মিল খুঁজে পেয়েছিলাম। আবার কোনো কোনো চরিত্রের সঙ্গে হয়তো আমার সামান্য মিল রয়েছে। আমি যে চরিত্রেই অভিনয় করি না কেন, সবসময় তারমধ্যে অল্প হলেও নিজেকে ঢেলে দেওয়ার চেষ্টা করি।
প্রশ্ন : বিয়ের পর প্রায় দুই বছর হতে চলল। আপনার মা হওয়া নিয়ে মাঝে মাঝেই গুজব ছড়িয়ে পড়ছে। আচ্ছা, আপনি কী ধরনের মা হতে চান? ফুরফুরে মেজাজের মা? নাকি অন্য ঘরানার?
দীপিকা : যখন সময় আসবে তখন না হয় ভাবা যাবে। অভিভাবকত্ব কিন্তু দুটো মানুষের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করে।