শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

বহুমুখী ব্যস্ততায় নাদিয়া

শুরুটা নাচ দিয়ে হলেও এখন টেলিভিশন নাটকের ব্যস্ত অভিনেত্রীদের অন্যতম একজন নাদিয়া আহমেদ। একক কিংবা ধারাবাহিক- দুটোতেই তুমুল ব্যস্ততায় কাটছে তার সময়। প্রতিনিয়ত ছুটে বেড়াচ্ছেন ইউনিট থেকে ইউনিটে। কথা বলারই যেন সময় নেই তার। এতকিছুর মাঝেও তারার মেলার জন্য খানিকটা সময় বের করেন তিনি। তাও আবার ঘড়ি ধরে নির্ধারিত সময়ের বেশি কথা না বলার সন্ধিতে। এ কারণে ঝটপট প্রশ্নের তড়িঘড়ি উত্তর দিতে হয় তাকে।
মাসুদুর রহমান
  ০৯ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০০
নাদিয়া আহমেদ

নাদিয়ার সঙ্গে যখন কথা হয়, তখন তিনি একটি ধারাবাহিক নাটকের শুটিং স্পটে ছিলেন। খানিকক্ষণের বিরতি শেষে আবার শুটিংয়ে অংশ নেবেন। জানালেন, সত্যিই অনেক কাজ করতে হয় প্রতিদিন। হাতে আমার বেশ কয়েকটি ধারবাহিক নাটকের কাজ। নতুন নাটকের পাশাপাশি বিভিন্ন চ্যানেলে প্রচার চলতি ছয়/সাতটি ধারাবাহিক নাটকেরও কাজ করছি। এর মধ্যে দীপ্ত টিভিতে সপ্তাহে ছয়দিন প্রচারিত হচ্ছে 'বকুলপুর'। ইতোমধ্যে এ ধারাবাহিক নাটকটি ১৫০ পর্ব প্রচারিত হয়েছে। এ নাটকটিতে তিনি অভিনয় করেছেন প্রিন্সেস দিবা ভীষণ চরিত্রে। নাটক ও চরিত্রটি নিয়ে নাদিয়া বলেন, 'নাটকটি নিয়ে ভালো সাড়া পাচ্ছি। যে কোনো কাজে শিল্পী যদি দর্শকের কাছ থেকে সাড়া পায়, ভালোবাসা পায়, সেটা অনেক আনন্দের ব্যাপার। এ নাটকে প্রিন্সেস দিবা ভীষণ পোড়খাওয়া মেয়ে। তাকে জীবনে অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। একটা সময় যাত্রাদলে প্রিন্সেস হিসেবে সে কাজ শুরু করেন। দর্শকের কাছে সে ভীষণ জনপ্রিয়তা পায়। তার অনেক নাম হয়, কিন্তু তার এই পেশা ভালো লাগে না। দিনশেষে সে নিজের মতো করে বাঁচতে চায়। এ নাটক ছাড়াও 'লাগ ভেলকি লাগ', 'ভদ্রপাড়া' 'চাটমঘর', ছায়াহীন মায়াহীন, 'নানা ভাই', 'ক্যাট হাউজ', শিরোনামের ধারাবাহিকগুলো প্রচারিত হচ্ছে। 'সুলতান ভাই' নামে নতুন একটি ধারাবাহিকেও কাজ করছেন তিনি। কিছুদিন আগে অস্ট্রেলিয়া থেকে 'মন দরজা' নামে একটি ধারাবাহিকের শুটিং করে দেশে ফিরেছেন। খন্ড নাটকের চেয়ে ধারাবাহিকে বেশি ব্যস্ততা নিয়ে নাদিয়া বলেন, 'খন্ড নাটক কম তৈরি হয়। প্রস্তাবও কম আসে। বিশেষ দিনগুলোয়ই শুধু এ নাটক তৈরির চাহিদা বেশি থাকে। তাই বিশেষ দিনেই খন্ড নাটকে অভিনয় করি। এখন কয়েকজন শিল্পীর ওপর খন্ড নাটক নির্দিষ্ট হয়ে গেছে। ঘুরেফিরে ৪/৫ জন শিল্পীই একক নাটকগুলোতে অভিনয় করছেন। যেসব নির্মাতারা তাদের দিয়ে খন্ড নাটক করান, আবার ওই নির্মাতারাই ধারাবাহিক নাটকের বেলায় আমাকে খোঁজে নেন। আসলে ধারাবাহিকের বেলায় হয়তো তারা আমার ওপর বেশি আস্থা রাখেন। তাই বলতে গেলে বছরজুড়ে ধারাবাহিক নিয়েই ব্যস্ত থাকতে হয়।'

ধারাবাহিকের চেয়ে এখন খন্ড নাটকের প্রতিই দর্শকের আগ্রহ বাড়ছে। অধিক সময় ক্ষেপণ, গল্পের ধারাবাহিকতা না থাকা, নতুনত্বের অভাব, বিনোদনের ঘাটতিসহ নানা কারণে দর্শক ধারাবাহিক ছেড়ে খন্ড নাটকের দিকে ঝুঁকছেন। নিয়মিত ধারাবাহিক নাটকের এ অভিনেত্রী বলেন, 'যেসব ধারাবাহিকগুলোতে কাজ করছি সেগুলোর গল্প ভালো। আমার বিশ্বাস দর্শকরাও ভালো বলবেন। তবে সবমিলিয়ে টিভি নাটকের ধারাবাহিকগুলোতে ধারাবাহিকতা বজায় থাকে খুব কম। শুরুতে যেমন থাকে একটা সময় তা আর থাকে না। এ জন্য নাটকে বাজেট কমসহ নানা কারণও আছে। ভালো রান্নার জন্য যেমন সব ধরনের মসলার প্রয়োজন হয়- তেমনই ভালো নাটকের জন্য সব কিছু ভালো হতে হয়। ভালো ভালো বাজেটের পাশাপাশি ভালো গল্পের চিত্রনাট্য, ভালো অভিনয়শিল্পী ও নির্মাতার প্রয়োজন না হলে ভালো নাটক হয় না। এটা শুধু ধারাবাহিক নয়, খন্ড নাটকের বেলাতেও তাই।' সম্প্রতি নাদিয়া আল হাজেন পরিচালিত 'আমার বাবা' শিরোনামের একটি খন্ড নাটকে অভিনয় করেছেন। এতে তিনি অভিনয় করেছেন নার্সের চরিত্রে।

পেশাদার অভিনয়শিল্পী হিসেবে সারা বছরই অভিনয় করেন নাদিয়া। অসংখ্য নাটকে তাকে দেখা যায় বৈচিত্র্যময় চরিত্রে। কখনো গ্রামের সহজ সরল মেয়ে, কখনো চঞ্চল, আবার কখনো শহরের মেয়ে, কখনো প্রেমিকা, আবার নয়তো দায়িত্ববান স্ত্রীর চরিত্রে। নানা চরিত্রে নিজেকে ভাঙেন বারবার। চরিত্রে বাছাই নিয়ে এ অভিনেত্রী বলেন, 'আমার কাছে অভিনয় মুখ্য বিষয়। যদি দেখি নাটকের গল্প ও চরিত্র আমার সঙ্গে মিলে যায় তাহলে আমি সেই কাজটি করার জন্য সিদ্ধান্ত নিই।'

নাটক নিয়ে দর্শক ক্রমেই আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন, এমন অভিযোগ প্রায় শোনা যায়। টেলিশন নাটকের অনেক তারকারাও তা অকপটে স্বীকার করেন। এ নিয়ে নাদিয়ার মন্তব্য একটু অন্যরকম। তিনি বলেন, 'আসলে অনেক বেশি কাজ হচ্ছে বলে নাটকের মান কমছে। কিন্তু ভালো নাটকও তৈরি হচ্ছে।'

দীর্ঘদিন ধরে টিভি নাটকে অভিনয় করে প্রশংসা পেলেও চলচ্চিত্রে অভিনয় করছেন না নাদিয়া। ছোট পর্দার শিল্পীরা চলচ্চিত্রের জন্য মুখিয়ে থাকলেও দেখা নেই কেন? জবাবে নাটকের আলোচিত এ অভিনেত্রী বলেন, 'আসলে অভিনয়ে আমার আসা নৃত্য থেকে। দীর্ঘদিন টিভি নাটকে কাজ করলেও চলচ্চিত্রে এখনো অভিনয় করা হয়নি। যে ধরনের গল্প ও চরিত্রে কাজ করতে চাই তার প্রস্তাব পেলে অবশ্যই চলচ্চিত্রে কাজ করব।'

সারা বছর নাটকের কাজে ব্যস্ত থাকলেও নিয়মিত নাচ করেন এ শিল্পী। সমানতালে সময় দেন নাটক ও নাচে। এ সময়ে নাদিয়া-লিখন নাচের জনপ্রিয় জুটি। তাদের 'নৃত্যকথা' নামে একটি নাচের স্কুল আছে। একেবারে কম বয়সী শিশুদের নাচের প্রতিক্ষণ দেন তারা। নাচই প্রশান্তির জায়গা বলে মনে করেন নাদিয়া। তাই উৎসব এবং উৎসব ছাড়া বিভিন্ন টিভি চ্যানেলগুলোতে নাচের অনুষ্ঠান নিয়ে হাজির হন নাদিয়া। নাচের রিয়েলিটি শোতে বিচারকের চেয়ারেও দেখা গেছে তাকে। নাদিয়া নাচের প্রতি মন থেকে টান অনুভব করেন। তিনি বলেন, 'নাটকের শুটিং থাকলেও আমি নাচের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করি। এমনও হয়েছে, সারাদিন নাটকের শুটিং শেষ করে সন্ধ্যায় অনুষ্ঠানে গিয়ে নাচ করেছি।'

নতুন বছর নিয়ে নাদিয়া বলেন, 'গত বছর আমার ভালোই কেটেছে। কারণ দুবার মায়ের সঙ্গে দেখা করতে পেরেছি। প্রথমবারের মতো শুটিংয়ের জন্য অস্ট্রেলিয়া সফর করেছি। এ ছাড়া ক্যারিয়ারে বেশ কিছু ভালো নাটকে অভিনয় করার সুযোগ হয়েছে।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<83508 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1