শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

একুশ নিয়ে ২১ তারকা

নানা আয়োজনে আজ পালিত হচ্ছে জাতীয় শোক দিবস। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, বাইরে আমরা একুশ নিয়ে নানান কথাবার্তা বললেও অন্তরে কতটা লালন করছি একুশের চেতনা! এখনকার প্রজন্মের কাছে এই দিনটার গুরুত্ব কতখানি! এমন প্রশ্নের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয়েছে দেশের এ প্রজন্মের শোবিজ তারকাদের। প্রশ্ন করা হয়েছে, এখন শোবিজ তারকাদের মধ্যে একুশের চেতনা কতটা দেখা যায় বা হৃদয়ে কতটা ধারণ করেন একুশ? সরাসরি এমন প্রশ্নের মুখে সবাই সেরাটাই বলার চেষ্টা করবেন। কিন্তু বলা আর কাজ মিলিয়ে দেখলেই পাঠকরা পেয়ে যাবেন আসল উত্তর...
সাদিকা পারভীন পপি
  ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

আমার কাছে একুশের অর্থ হচ্ছে বাংলা ভাষার অহঙ্কারের নাম। এই একুশ দিয়ে বাংলাদেশকে বিশ্ব চিনেছে। একুশ মানে হচ্ছে আমার কাছে অনেক শ্রদ্ধা আর ভালোবাসার এক নাম। বাংলা ভাষার জন্য যারা নিজেদের প্রাণ উৎসর্গ করেছেন সেসব শহীদদের জন্য অনেক শ্রদ্ধা, ভালোবাসা। শুধু একুশ এলেই যে তাদের স্মরণ করি আমরা এমন নয়, আমরা বছরজুড়ে নানা সময়েই তাদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি।

মৌসুমী

একুশ মানেই তো আমাদের স্বাধীনতা। আজ যে ভাষায় কথা বলছি এটাই আমার কাছে একুশের চেতনা। নিজের ভাষাকে সঠিকভাবে বলতে পারা। মাতৃভাষাকে সম্মান দেয়াটাই তো একুশের চেতনা। এটি নিজের ভেতর সর্বদা ফিল করি এবং আমার সন্তানদেরও এভাবেই একুশে ফেব্রম্নয়ারি নিয়ে অনুভূতি দেয়ার চেষ্টা করি। তারা যেন একুশের চেতনা ধারণ করতে পারে।

অপু বিশ্বাস

আমাদের ভাষার জন্য যারা জীবন দিয়েছেন তাদের প্রতি আমি গভীর শ্রদ্ধা জানাই। আমরা যেহেতু বাঙালি বাংলা ভাষাটা আমাদের মাতৃভাষা; এ ভাষার প্রতি যেন আমরা সবাই শ্রদ্ধা জানাই এটা আমার কামনা। আমরা যত স্মার্টই হই, যতই আমাদের কালচারকে নতুনভাবে উপস্থাপন করি না কেন, যে মানুষগুলো আমাদের এই ভাষার জন্য বুকের তাজা রক্ত ঝরিয়েছিলেন তাদের প্রতি সম্মান জানিয়ে যেন আমরা ভাবি আমরা বাঙালি এবং বাঙলা আমাদের মাতৃভাষা।

জয়া আহসান

বরকত, সালাম, রফিক, জব্বার, সালাহউদ্দীনসহ অগণিত ছাত্র-জনতার জীবনের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি মায়ের ভাষায় কথা বলার অধিকার। মহান ভাষা আন্দোলনের পথ ধরে আমরা পৌঁছে যাই '৭১-এর রক্তাক্ত মুক্তিযুদ্ধের রণাঙ্গনে। বাংলার দামাল মুক্তি সেনারা অকাতরে প্রাণ দিয়ে ছিনিয়ে এনেছে প্রিয় স্বাধীনতা। আজ আমরা স্বাধীন বাংলাদেশের মুক্ত মানুষ। '৫২-র ভাষা আন্দোলন না হলে '৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ হতো না। মুক্তিযুদ্ধ না হলে বাঙালি জাতি ধীরে ধীরে তার অস্তিত্ব হারাত। আজ একথা ভেবে গৌরববোধ করি। আমি এক নির্ভীক সৃষ্টিশীল জাতির শিল্পকর্মী। বাংলা চলচ্চিত্রের যে অভিনয় ভুবনে আমার নিদ্রাহীন পদচারণা তা তো সম্ভব হয়েছে ওই ভাষা আন্দোলন আর মুক্তিযুদ্ধের কারণে।

ওমর সানি

বাংলা ভাষা তো আমাদের প্রাণের ভাষা। কিন্তু আমরা তো আসলে শুধু ভাষার মাসইে বাংলা ভাষাটাকে একটু গুরুত্ব দেই। আমরা আমাদের সন্তানদের পড়াই ইংলশি মিডিয়ামে, ইউরোপ, আমেরিকায়। পড়াই ঠিক আছে কিন্তু তার সঙ্গে সঙ্গে বাংলা ভাষাটাও যেন তারা ভালো করে বলতে ও লিখতে পারে এ ব্যাপারেও আমাদরে লক্ষ্য রাখা উচিত বলে আমি মনে করি। বাংলা ভাষাটা যেন আমাদের প্রাণের ভাষা হয়, মাতৃভাষা হয় এবং সারা বছরই যেন বাংলা ভাষার প্রচলনটা থাকে এ ব্যাপারে আমাদের সবার লক্ষ্য রাখতে হবে।

আনিসুর রহমান মিলন

'আমরা যে আজ স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারি এটাই একুশ। আমার কাছে একুশের চেতনা হচ্ছে নিজের মায়ের ভাষাকে যথাযথ সম্মান করা এবং এর বিকাশে কাজ করা। পাশাপাশি অন্যের ভাষার প্রতিও ভালোবাসা দেখানো। একুশে চেতনা আমার প্রতিটি কর্মেই থাকে।

তানজিন তিশা

আমাদের এই স্বাধীনতা পরবর্তী প্রজন্মের অনেক শিল্পীদের নিয়ে বলতে শুনি যে, আমাদের বাংলা ভাষাটা কি সেটা আমরা ভুলে যাচ্ছি। আমরাও মাঝে মাঝে সেটা অনুভব করি। আমি আমাদের এই প্রজন্মের সবার জন্য বলতে চাই যে, আমাদেরও উচিত বাংলা ভাষার জন্য কিছু করা এবং আমাদের শুদ্ধ বাংলা ভাষার র্চচা করা। আর আমাদের এই ভাষার জন্য যারা জীবন দিয়েছেন আজকের এই দিনে তাদের প্রতি জানাই অনেক শ্রদ্ধা।

আরিফিন শুভ

একুশে ফেব্রম্নয়ারি আমার কাছে একটা চেতনার নাম। যে চেতনা ভাষাকে ভালোবাসতে উদ্বুদ্ধ করে। ভাষার সঠিক চর্চা করতে অনুপ্রেরণা জোগায়। ভাষার জন্য কোনো জাতি প্রাণ দিতে পারে এটি আয়নার মতো সামনে দাঁড় করায়। সর্বোপরি একুশ আমাদের মনে সাহস জোগায় সংগ্রামের-অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের। কথাগুলো শুধু বলার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। আমি যে পেশাতে আছি, সেখানে শুদ্ধভাবে ভাষা ব্যবহার করে বাংলা ভাষাকে সবার সামনে তুলে ধরার চেষ্টা সবসময় থাকে। কখনো ভাষাকে বিকৃতি করি না আমি।'

জাকিয়া বারি মম

চেতনায় একুশ সর্বদাই ধারণ করি। পৃথিবীর কোন দেশে এমনটি ঘটেছে যে ভাষার জন্য যুদ্ধ! অথচ আমরা এমন গর্বিত একটি ইতিহাসের মালিক। ভাষা শহীদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা, মাতৃভাষার প্রতি অশেষ শ্রদ্ধা। আর এ শ্রদ্ধা তাদের প্রতি যারা কেবল আনুষ্ঠানিকতা নয় বরং আন্তরিকতা নিয়ে সারা বছর আমাদের প্রিয় বাংলা ভাষাকে লালন করছেন জীবনে ও যাপনে। একুশের চেতনা এলে বলে বিশ্বাস করানোর কিছু নেই। এটি অন্তরে-মননে লালন করার বিষয়।

বিদ্যা সিনহা মিম

যে ভাষার জন্য আমাদের দেশের সূর্যসন্তানরা প্রাণ দিয়েছেন তাদের প্রতি আমার বিনম্র শ্রদ্ধা। একুশের চেতনা শুধু ফেব্রম্নয়ারি মাসেই নয়, সারা বছরই থাকে। আমাদের ভাষাটা অন্য আট-দশটি দেশের ভাষার মতো এত সহজে পাইনি। যুদ্ধ করে, সংগ্রাম করে এ ভাষা অর্জিত হয়েছে। তাই একুশ মননে সর্বদাই থাকে। আমার কাছে একুশে ফেব্রম্নয়ারির অর্থ হচ্ছে বাংলা ভাষা, বাংলা গান, বাংলা ভাষায় গান গাইবার সর্বোচ্চ শক্তি। এই একুশ না এলে বাংলা ভাষা আসত না, বাংলা ভাষায় কথা বলাও হতো না, বাংলা ভাষায় গান গাওয়াও হতো না। তাই একুশ আমার বেঁচে থাকার প্রেরণা, একুশ আমার বেঁচে থাকার অবলম্বন। একুশ আমার অহঙ্কার। ভাষা শহীদদের প্রতি অনেক শ্রদ্ধা, আন্তরিক ভালোবাসা।

নোভা

'আজ আমরা স্বাধীনভাবে স্বাধীন দেশে কথা বলতে পারছি। এর যাত্রা শুরু হয়েছিল কিন্ত সেই বায়ান্নর একুশেতে। যদি সেদিন এর যাত্রা শুরু না হতো তাহলে আমরা স্বাধীন বাংলাদেশ পেতাম না। তবে শুধু ২১ ফেব্রম্নয়ারি একদিনের চর্চা হয়ে ওঠা উচিত নয়। একদিনের জন্য আমরা চেতনায় বাংলাদেশি হয়ে উঠব, এমনটা হওয়া ঠিক নয়। এই চেতনা যেন সারা বছরজুড়েই থাকে, তা হওয়া উচিত এবং সেই চেতনা আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দিয়ে একুশের চেতনায় তাদের উদ্বুদ্ধ করতে হবে। হওয়া উচিত একুশের চেতনা।

বাপ্পী চৌধুরী

একুশ এলেই আমার মনের মধ্যে অন্য ধরনের অনুভূতি কাজ করে। আর বাঙালি হিসেবে বাংলা ভাষার জন্য নিজেকে নিয়ে সবসময় গর্ববোধ করি। একুশের কারণেই বাঙালি হিসেবে আজ আমরা গর্ববোধ করতে পারছি। বাঙালির ইতিহাসে বায়ান্ন এসেছিল বলে একাত্তর এসেছে; পরে আমরা স্বাধীন জাতির স্বীকৃতি পেয়েছি। যে চারটি বড় স্তম্ভের ওপর বাংলাদেশ রাষ্ট্রটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তার অন্যতম প্রধান স্তম্ভটি হলো জাতীয়তাবাদ। আবার এ জাতীয়তাবাদের চেতনাবাহী প্রধানতম স্তম্ভ হলো 'ভাষা'। আমরা আমাদের বাংলা ভাষা নিয়ে গর্বিত।

সাইমন সাদিক

জাতি হিসেবে এই দিনটি একদিকে যেমন আমাদের শোকের অপরদিকে তেমনি গর্বেরও। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রম্নয়ারি ভাষা সৈনিকদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা অর্জন করেছি আমাদের মায়ের ভাষা। ভাষা শহীদদের আত্মত্যাগের সেই অর্জন শুধু আমাদের মাতৃভাষার প্রাপ্তির মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না বরং সেটাকে ছাপিয়ে পরবর্তী সময়ে আমাদের মধ্যে স্বাধীন স্বত্বার এক নতুন স্বপ্নবীজ গ্রথিত হয়েছিল। শুধু তাই নয়, সেই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপদানের পথের সাহস ও প্রেরণাও যুগিয়েছিল ভাষা শহীদদের আত্মত্যাগের এই মহিমা। যারই ধারাবাহিকতায় আজ আমরা স্বাধীন বাংলাদেশের আলো বাতাসে বেঁচে আছি। আমি চাইব, আমরা সবাই বাংলা ভাষাটাকে হৃদয় দিয়ে ভালোবাসি। পৃথিবীর যে প্রান্তেই যাই না কেন, বাংলা যেন আমাদের মাঝে সবসময় থাকে।

সজল

শুধুমাত্র প্রভাতফেরিতে অংশগ্রহণ করে এবং পুষ্পস্তবক অর্পণ করে বাংলাভাষা ও ভাষা শহীদদের প্রতি যথার্থ সম্মান প্রদর্শন হয় না। বরং তাদের চেতনাকে বুকে ধারণ করে নিজেদের দেশের জন্য উৎসর্গ করার মানসিকতা তৈরি করতে হবে। বাংলা ভাষাকে বিকৃতির কবল থেকে মুক্ত করতে হবে। আকাশ সংস্কৃতির মাঝে বিলীন না হয়ে, ব্যক্তিগত ও জাতীয় জীবনের সব স্তরে বাংলাদেশি সংস্কৃতির লালন ও চর্চা করতে হবে।

নিরব হোসাইন

পৃথিবীতে কেবল একটি জাতি এবং একটি ভাষাই আছে, যারা মাতৃভাষার জন্য জীবন দিয়েছে। এমন জাতির একজন হতে পেরে আমি খুবই গর্ববোধ করছি। তবে দুঃখের বিষয় হলো যে, আজো অনেকে এই দিন পালন করে হিন্দি গান বাজিয়ে, হৈচৈ করে। আমাদের শ্রদ্ধা দেখানোর মাধ্যম হলো করপোরেট। একদিনের জন্য নামিদামি ব্র্যান্ডের সাদা-কালো জামাকাপড় পরে, টাকা দিয়ে ফুল কিনে শহীদ মিনারে অর্পণ। দায়সারা হয়ে গেলেই আনন্দ করা শুরু হয় সিনেপস্নক্সে গিয়ে বন্ধুবান্ধবীর সঙ্গে সিনেমা দেখা। সব মিলিয়ে দিন শেষ তো সব শেষ। তখন এই চেতনার কোনো চেতনা থাকে না। তাই আমি বল, আসুন সবাই মিলে আমাদের বাংলা ভাষাটাকে ভালোবাসি; আমাদের এই সুন্দর দেশটাকে ভালবাসি। তাহলেই ভাষা শহীদদের এই আত্মত্যাগ সার্থকতা পাবে।

রেসি

এই দিনটির জন্যই আমরা আজকে মাতৃভাষা বাংলায় কথা বলতে পারছি। আমরা থাইল্যান্ড, চায়নাতে গিয়ে দেখি তারা ইংরেজিতে কথা না বলে তাদের মাতৃভাষায় কথা বলে। আমাদের দেশে অনকে আর্টিস্ট আছেন যারা বাংলা ইংলিশ মিলিয়ে ভাষাটাকে বাংলিশ বানিয়ে ফেলেন। আমি মনে করি, বাংলাকে শুদ্ধভাবে বলা ও চর্চা উচিত এবং যতটুকু পারা যায় বাংলা বলা উচিত আমাদের সবার। দেশের বাইরে গেলে ইংরেজি বলতইে হয়। আমাদের দেশের অনেক নতুন নতুন স্টার শিল্পী আছেন, তারা বাংলা ইংলিশ মিলিয়ে কি যে বলেন তা আসলে কিছুই বোঝা যায় না।

আজমেরী হক বাঁধন

এই দিনটিকে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। এটি আমাদের জন্য অনেক গর্বের ব্যাপার। ভাষার জন্য যারা জীবন দিয়েছেন তাদের প্রতি অনেক শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা আজকের এই দিনে। আমার মনে হয় প্রতিটা মানুষেরই তার মাতৃভাষায় কথা বলতে পারা উচতি। আমরা এই অধিকারটা রক্ত দিয়ে র্অজন করেছি বলে এটা আমাদের জন্য আলাদা একটি ব্যাপার। ভাষাটা যেহেতু আমাদের মায়ের সঙ্গে সম্পর্কিত, তাই এটি আমাদের জন্য অবশ্যই আলাদা। আমার মনে হয়, বছরের প্রতিটা দিনই আমাদের সচতেনভাবে ভাষাকে ভালোবাসা উচতি। শুধু একদিনের জন্য যেন না হয় ব্যাপারটা। আমি অনেকদিন থেকেই একটা ব্যাপার দেখছি যে, আমাদের আশপাশের অনেকরে মাঝেই এই ব্যাপারটা কাজ করে যে, নিজে বাঙালি হয়েও তার সন্তান হয়তো বাংলায় কথা বলতে পাওে না বা লিখতে পারে না। এ নিয়ে আবার অনেককে গর্ববোধ করতেও দেখেছি। নিজের ভাষাটা ভালোভাবে না বলতে ও লিখতে না পারাটা কখনো গর্বের বিষয় হতে পারে না বরং এটা অনেক বড় একটা লজ্জার বিষয়।

শারমিন জোহা শশী

ভাষার জন্য যে মায়ের নাড়ি ছেঁড়া ধন পরে ছিল রাজপথে, সেই মায়ের হারিয়ে যাওয়া সন্তানের সাধ আমরা কিভাবে দেব? উপনিবেশবাদ, পুঁজিবাদি ও সাম্রাজ্যবাদ আমাদের আজ মুষ্ঠিবদ্ধ করে ফেলেছে। সময়ের সঙ্গে তাল মেলাতে গিয়ে নিজেকে ভুলে যাচ্ছি। বেশি আধুনিক সাজতে গিয়ে অবজ্ঞা করছি আমাদের কৃষ্টি কালচারকে। এ ব্যাপারে আমাদের সবারই প্রয়োজন সচেতনতা।

শাবনাজ ছাদিয়া ইমি

একুশে ফেব্রম্নয়ারি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন। এদিন তিনি ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধাভরে সবাই স্মরণ করেন। একুশ এলেই তার মনের মধ্যে অন্য ধরনের অনুভূতি কাজ করে। আর বাঙালি হিসেবে বাংলা ভাষার জন্য নিজেকে নিয়ে সব সময় গর্ববোধ করেন। একুশে ফেব্রম্নয়ারি মানে বাংলা ভাষার মুক্তি দিবস। যে ভাষায় আমার দাদা-দাদি কথা বলতেন, আব্বু কথা বলতেন, আম্মু কথা বলেন- এ ভাষাকেই কেড়ে নিতে চেয়েছিল পাকিস্তানিরা। এ অন্যায়ের কারণেই তো ওদের পতন হয়েছে। ভালো হয়েছে তাতে। আমরা স্বাধীন বাংলাদেশের নাগরিক আজ। বাংলা গানের গায়ক হিসেবেই আজ আমি বিশ্বের অনেক দেশে গান করতে পারছি। এর চেয়ে বড় অহঙ্কার আর কী হতে পারে আমার জন্য।

আজরা মাহমুদ

একুশ এখন অনেকের কাছে আনন্দের বিষয়। এখন শহীদ মিনারে অনেকেই যায় আনন্দ করতে। এটা আমার কাছে অবাক লাগে। আগে চেতনাটা ছিল প্রবল। বাঙালিত্বের চেতনা ছিল, ছিল ভাষার চেতনা। আগে যেটা ছিল সেটা হলো কালজয়ী চেতনা। একুশের ওপর জহির রায়হানের 'জীবন থেকে নেয়া' ছবি বানিয়েছেন। যতদিন বাংলাদেশ থাকবে, সেই সিনেমার কথা সবাই মনে রাখবেন বলে আমি বিশ্বাস করি। একুশ নিয়ে এরকম সিনেমা আর কখনও হবে না বা কেউ করেওনি। একুশের চেতনার কথা বলি- সেটা জহির রায়হানের ওই সিনেমার মধ্যেই আছে। একুশ কাকে বলে? এবং কেন? একুশের ওই সিনেমাটি মুক্তিযুদ্ধকেও ত্বরান্বিত করেছে। আমরা কথায় কথায় বলি- মিডিয়া সাংঘাতিক শক্তিশালী মাধ্যম। সেই সিনেমা দেখলেই বোঝা যায় আসলে মিডিয়া কত শক্তিশালী মাধ্যম।

বুলবুল টুম্পা

আমার মতে এর চেয়ে গর্ব করার মতো কিছু নেই। যারা রক্ত দিয়ে আমাদের দেশ এবং ভাষা দিয়ে গেছেন তাদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি। তাদের আত্মাহুতির প্রতিদান আমাদের পক্ষে দেয়া সম্ভব নয়। একটা দেশের ভাষা, সংস্কৃতি জাতির সবচেয়ে বড় পরিচয়। আমরা সুন্দর ভাষা পেয়েছি, স্বাধীনতা পেয়েছি, একটা সুন্দর পতাকা পেয়েছি। এটাই আমাদের শেকড়। নতুন প্রজন্মের একটাই চাওয়া, তারা যেন আমাদের এই শেকড়কে কোনোভাবেই ধ্বংস হতে না দেয়। একুশে ফ্রেব্রম্নয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। একজন বাঙালি হিসেবে এর চেয়ে পরম পাওয়া আর কী থাকতে পারে। ভাষা আন্দোলন এবং মুক্তিযুদ্ধের সময় সংগীত এক বিশেষ ভূমিকা পালন করেছে। বাংলা ভাষা যখন ভিনদেশিদের মুখে শুনি তখন গর্বে বুকটা ভরে যায়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<37633 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1