শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

দুরন্ত কোনাল

এ সময়ের অন্যতম প্রিয় সংগীতশিল্পী সোমনুর মনির কোনাল। মোহনীয় সুরের জাদুতে দশর্কহৃদয় হরণ করে ক্যারিয়ারের শুরুতেই চ্যানেল আই সেরাকণ্ঠ বিজয়ীর খেতাব অজর্ন করেন। এরপর আর থামতে হয়নি। দেশ-বিদেশে স্টেজ শো, একক অ্যালবাম, মিশ্র অ্যালবাম, প্লেব্যাকÑ সব মাধ্যমেই দুরন্ত গতিতে ছুটছেন তিনি। সুহাসিনী এই সংগীত তারকাকে নিয়ে লিখেছেনÑ মাসিদ রণ
নতুনধারা
  ০৫ জুলাই ২০১৮, ০০:০০

গান, চাকরি ও সংসার তিনটিই ছন্দময় গতিতে সামলাচ্ছেন শ্রোতাপ্রিয় সংগীতশিল্পী কোনাল। চ্যানেল আইতে ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর হিসাবে যেমন দায়িত্ব পালন করছেন তেমনি পরিবারের মানুষকে দুপুরের রান্নাও নিজ হাতে করে খাওয়ান তিনি। এ নিয়ে কোনালের ভাষ্য, ‘যে কোন কাজে প্রেম থাকাটা জরুরি। প্রেম থাকলে কাজের যত চাপই আসুক না কেন, সবই পারফেক্টলি হয়ে যায়। তারকা বলে সবকিছু ছেড়েছুড়ে থাকার পক্ষপাতি আমি নই। আমি গান ছাড়া নিজেকে চিন্তাও করতে পারি না। সংসার ছাড়া বঁাচতেও পারব না। আর চাকরিটাকেও আমি এনজয় করি। ফলে কোনটিই ছাড়তে চাই না। যত পরিশ্রমই হোক না কেন সব শক্তহাতে সামাল নিয়ে চাই।’

আসলেই তাই, কোনাল খুবই সাদামাটা থাকতে পছন্দ করেন। আবার পেশাগত কারণে গø্যামারাস তারকা হয়েই উপস্থিত হন দশর্ক-ভক্তের সামনে। তার আরেকটি বড় গুণ হলো- চমৎকার করে কথা বলতে পারেন। গানের মতো তার কথার যাদুতে মন্ত্রমুগ্ধ হওয়া ভক্তের সংখ্যাও নেহাত কম নয়। এ জন্য তাকে মাঝে মাঝে টিভি অনুষ্ঠানের উপস্থাপকের চেয়ারেও বসতে হয়। তবে নানামাত্রিক কাজে ব্যস্ত থাকলে প্রাণের সুধা খুজে পান নতুন কোনো গান গাইতে পারলে।

এরই মধ্যে বেশকিছু নতুন গেয়েছেন এই গায়িকা। অচিরেই প্রকাশ পাবে আলোচিত ছবি ‘যদি একদিন’-এ তার ও তাহসানের কণ্ঠে গাওয়া টাইটেল গানটি। এ গানটি নিয়ে উচ্ছ¡সিত কোনাল বলেন, ‘এই প্রথম তাহসান ভাইয়ের সঙ্গে প্লেব্যাক করলাম। তাছাড়া ছবিটির নিমার্তা মোস্তফা কামাল রাজ। তার পূবের্র ছবি প্রজাপতি, তারকাটা, সম্রাট ইত্যাদি ছবিগুলো খেয়াল করলে দেখবেন গানগুলো খুবই সমৃদ্ধ। খুব কম পরিচালক আছেন যারা ছবির গান নিয়ে এত ভাবেন। এ ছাড়া আমার কণ্ঠে ঠোট মেলাবেন দুই বাংলার প্রিয় নায়িকা শ্রাবন্তি। সবমিলিয়ে এই গানটি আমার জন্য দারুণ কিছু এনে দেবে বলে আশাবাদী হতেই পারি।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই ছবির গানটি আমার কণ্ঠে দুই রকমভাবে শুনতে পাবেন দশর্ক। একটি তো আমার আর তাহসান ভাইয়ের দ্বৈত। অন্যটি আমার একক কণ্ঠে গানটির ¯েøা ভাসর্ন। এই গানের সংগীতপরিচালক নাভেদ দারুণ কাজ করেছেন। এর আগেও তার সংগীতে আরেকটি ছবির গান গেয়েছি আমি।’

আরেকটি ছবির গান নিয়েও আশাবাদী কোনাল। মোস্তাফিজুর রহমান মানিক পরিচালিত সায়মন-মাহি জুটির মুক্তি প্রতিক্ষিত ছবি ‘জান্নাত’-এ বাপ্পা মজুমদারের সঙ্গে গানটি গেয়েছেন তিনি। আমার সবচেয়ে প্রিয় সংগীতপরিচালক ইমন সাহার সংগীতে এই গানটি কিছুটা সুফি ধঁাচের। ‘তুমি জান্নাত পৃথিবীতে, বেহেশত ধরনীতে’ এমন কথার গানটি সবার মন ছঁুয়ে যাবে বলে আশা করি।’

এই গানের বাইরে চিত্রনায়ক নিরব ও কলকাতার প্রিয়াংকা সরকার অভিনীত ‘হৃদয় জুড়ে’ ছবিতেও সম্প্রতি কণ্ঠ দিয়েছেন কোনাল। জেকের সংগীতে গানটিতে তার সহশিল্পী বেলাল খান।

এদিকে গত কয়েকমাস ‘ঘুম জড়ানো’ গানটির প্রশংসায় ভাসছেন এই গায়িকা। বাপ্পা মজুমদারের সঙ্গে গাওয়া রোমান্টিক এই গানটি ইতিমধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। এ নিয়ে কোনাল জানালেন, ‘আমার ক্যারিয়ারের অণ্যতম সফল গান এটি। স্টে শো-টিভি লাইভ তো আছেই, ফেসবুক লাইভে আসলেও দশর্ক প্রথমেই আমাকে এই গানটি গাওয়ার অনুরোধ করেন। এই গানটি সফল হওয়ায় আরও আত্মবিশ্বাসী হয়েছি। আমি যে ধরনের গান করতে চাই, তা দশর্কও পছন্দ করছেন। এটাই আমার সাথর্কতা।’

বিশেষ বিশেষ দিবসে কোনাল তার ভক্তদের বিশেষ গান উপহার দিতে ভালোবাসেন। ভালোবাসা দিবসে তিনি উপহার দিয়েছিলেন নজরুলের গান ‘আবার ভালোবাসার সাধ জাগে’র মিউজিক ভিডিও। আবার নারী দিবসে তিনি বেছে নেন রবীন্দ্রনাথের গান ‘একলা চলো রে’। ‘বন্ধু’ শিরোনামেরও একটি শ্রোতাপ্রিয় গান তিনি গেয়েছেন। এ প্রসঙ্গে কোনাল বলেন, ‘একজন শিল্পী হিসাবে ভক্তদের বিনোদন দেওয়া যেমন আমার কাজ, তেমনি তাদের মনুষত্বকে জাগিয়ে তোলাও আমার দায়িত্ব। তাই বিশেষ দিবসকে বেছে নিই ভক্তদের বিশেষ বাতার্ পেঁৗছে দিতে। নারী দিবসে একলা চলো রে গানটির মাধ্যমে একজন নারী হিসাবে অন্য নারীদের আহŸান জানিয়েছি- শত বঁাধা অতিক্রম এগিয়ে চলার। আর বন্ধু গানটি আমার প্রাণের গান। বন্ধু ছাড়া জীবন অচল, অসম্পূণর্। এ কথাই উঠে এসেছে গানে গানে।’

সবশেষে টিভি লাইভে নিজের কম উপস্থিতি প্রসঙ্গেও বললেন সুরেলা কণ্ঠের এই গায়িকা, ‘নানা কারণে আমি টিভি লাইভে গান করি না। প্রথমত, লাইভ অনুষ্ঠানের জন্য যে মানের অডিও সিস্টেম থাকতে হয় তা আমাদের দেশের বেশিরভাগ চ্যানেলে নেই। নিম্নমানের অডিওতে গান গাইলে শিল্পীর বদনাম হয়। দ্বিতীয়ত, একজন শিল্পীর উচিত নয় খুব বেশি টিভি লাইভে গান করা। কারণ এত বেশি টিভিতে মুখ দেখালে তাকে নিয়ে দশের্কর আগ্রহ কমে যায়। আর তৃতীয়ত, টিভি লাইভে শ্রম অনুযায়ি পারিশ্রমিক নেই। সবমিলিয়ে আমি টিভি লাইভে কম আসি। আমি কেন, যে কোন শিল্পীরই চুজি হওয়ার অধিকার আছে। তাই অল্প হলেও ভালো কিছু কাজ করে যেতে চাই। ’

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে