শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বৃষ্টিছেঁায়া সবুজের রাজ্যে

ফারহানা আলম
  ১২ আগস্ট ২০১৮, ০০:০০

বষার্ ঝরছে অবিশ্রাম জলধারা। এ সময়ে প্রকৃতি দেখে বেড়ানোর আনন্দ অন্য রকম। চারদিক সবুজ আর সবুজ। চলুন এ বেলা না হয় যাওয়া যাক বৃষ্টির দেশে, শ্রীমঙ্গলে।

ঢাকা থেকে শ্রীমঙ্গল যেতে যাত্রাবিরতিসহ সময় লাগবে সব মিলিয়ে চার ঘণ্টা। ট্রেন, বাস অথবা নিজস্ব ব্যবস্থায় যেতে পারেন। ছোট্ট এ শহরের আশপাশে কিন্তু দেখার মতো অনেক কিছু আছে। যদি পৌঁছাতে বিকাল বা সন্ধ্যা হয়ে যায়, তাহলে ওই দিনটা আশপাশে টুকটাক ঘুরেফিরেই কাটিয়ে দিতে পারেন। স্টেশনের কাছে নীলকণ্ঠের সাতরঙের চা খেয়ে আসতে পারেন। সঙ্গে নিজস্ব পরিবহন থাকলে তো কথাই নেই। যদি না থাকে তাহলে স্টেশন রোডে গেলেই ভাড়ায় গাড়ি ঠিক করে নিতে পারবেন।

শ্রীমঙ্গল বেড়ানোর প্রথম দিনের আয়োজনে থাকতে পারে দুটি জায়গা। লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান ও মাধবপুর হ্রদ। শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ সড়ক ধরে এগোতে থাকলে কিছুক্ষণ পর আবিষ্কার করবেন লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান। বাংলাদেশের রেইন ফরেস্ট হিসেবে খ্যাত এই লাউয়াছড়া জীববৈচিত্র্যে পরিপূণর্। এ জঙ্গলে ঢুকে এগোতেই দেখা যাবে একটি রেললাইন। আর এ রেললাইনের ওপার থেকে জঙ্গলের শুরু। কয়েকটি পথে জঙ্গলের ভেতরে ঘুরে আসা যাবে। বিভিন্ন ধরনের গাছের পাশাপাশি এখানে আছে নানাপ্রজাতির পাখি। আর তাই বাডর্ওয়াচারদের খুব প্রিয় স্থান লাউয়াছড়া। অন্তত তিন ঘণ্টা লাগবে লাউয়াছড়ার জঙ্গলে ঘুরে বেড়াতে।

লাউয়াছড়ায় ট্রেকিং শেষ করে যাওয়া যেতে পারে মাধবপুর হ্রদে। কাছাকাছি দূরত্বের মাধবপুর লেকে যেতে যেতেই উপভোগ করবেন চা-বাগানের সৌন্দযর্। রাস্তার দুই ধারে শুধুই চা-বাগান। কোথাও কোথাও দেখা যাবে, চায়ের পাতা তুলছে চা-শ্রমিকরা। আর মাধবপুর হ্রদে এসে আরেকবার যেন মন ভরে উঠবে বাংলাদেশের নিসগর্ দেখে। হ্রদের স্থির পানিতে ফুটে থাকা অদ্ভুত সুন্দর পদ্মফুল মন কেড়ে নেবে। আর হ্রদের পাশে টিলায় উঠলে দেখতে পাবেন, অদূরেই বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত এলাকা। লাউয়াছড়া বা মাধবপুর হ্রদÑএ দুই জায়গা লক্ষ্য করে বেরিয়ে পড়তে হবে খুব ভোরবেলায়। সারাটা দিন কোন দিক দিয়ে চলে যাবে, বুঝতেই পারবেন না।

সারাদিনের ধকল শেষ করে একটু তাড়াতাড়ি ঘুমাতে যাওয়াটা ভালো। পরের দিন যদি হামহাম ঝরনা দেখতে যেতে চান, সে ক্ষেত্রে বিশ্রাম নেয়া ছাড়া উপায় নেই। কারণ গাড়ির রাস্তা ছেড়ে হামহাম ঝরনায় যেতে প্রায় পঁাচ-ছয় ঘণ্টা লাগবে; হঁাটাপথ আছে ফিরে আসতে। হঁাটার কথা শুনে আবার ঝরনা দেখার পরিকল্পনা বাদ দেবেন না যেন। এ ঝরনা দেখে অবশ্যই ভুলে যাবেন হেঁটে আসার ক্লান্তি। ঝরনা দেখে ফেরার পথে দেখে নিন খাসিয়াপুঞ্জি। খাসিয়াদের পোশাকের বুনন দেখে একটা পান খেতে আবার ভুলে যাবেন না কিন্তু। এ অঞ্চলের পানে বেশ ঝঁাজ আছে। এই দিন যদি হাতে আরো সময় থাকে, ঘুরে আসতে পারেন কমলগঞ্জ সড়ক। দুই পাশের চা আর রাবার বাগান দেখলে ভালোই লাগবে। শহরের জঞ্জাল দেখে অভ্যস্ত দুই চোখ যেন স্বস্তি পাবে বৃষ্টিধোয়া সবুজ প্রকৃতি দেখে। দুই বা তিনদিনের এ বেড়ানোর আমেজ থাকবে কিন্তু অনেক দিন।

কোথায় থাকবেন : শ্রীমঙ্গলে থাকার জন্য সবচেয়ে জনপ্রিয় হলো চা-বোডের্র টি রিসোটর্। বুকিং দিতে যোগাযোগ করা চাই অনেক আগে থেকেই। বাংলোগুলোয় থাকতে পারবেন অনেকে মিলে। এ ছাড়া আছে নিসগের্র ইকো কটেজ, যা লাউয়াছড়ার কাছাকাছি অবস্থিত। শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ সড়ক ধরে আধা ঘণ্টা এগোলে হিড বাংলাদেশের কটেজগুলোতেও থাকতে পারবেন সুলভে। যদি শ্রীমঙ্গল শহরের ভেতরে থাকতে চান, সে ক্ষেত্রে রয়েছে হিলভিউ রিসোটর্, টি টাউন রিসোটর্ এবং আরও কিছু আবাসিক হোটেল। পাথর্ক্য আছে সেবা ও গুণগত মানের ক্ষেত্রে। তবে ঢাকা থেকে সদলবলে যাওয়ার আগে থাকার জায়গা ঠিক করে তবেই যেতে হবে। এ ছাড়া শ্রীমঙ্গল স্টেশনের কাছাকাছি রেস্তোরঁাতেও খেতে পারেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<7544 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1