আগেকার দিনে পাকা চুল কালার করতে মেহেদি ব্যবহার করা হতোÑ যেটি কিনা একই সঙ্গে সবচেয়ে ভালো প্রাকৃতিক কালার এবং হেয়ার টিট্রমেন্ট। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে যত ট্রেন্ড বদলেছে হেয়ার ট্রিটমেন্টও এসেছে বৈচিত্র্য। বতর্মানে নতুন প্রজন্মের কাছে হেয়ার কালার বেশ জনপ্রিয় একটি নাম। এটির সামান্য ব্যবহারেই বদলে যায় পুরো লুক। শুধু মেয়েরা নয় ছেলেদের মধ্যেও আজকাল হেয়ার কালার করার স্টাইলটা প্রাধান্য পাচ্ছে। তাই কয়েকটি ব্যাপার মাথায় রাখলে আপনিও বিনা ঝামেলায় রাঙিয়ে নিতে পারবেন আপনার সুন্দর চুল।
যেমন চাই বাহারি রং
চুলের কালার আসলে পুরো লুকটাই বদলে দেয়। অনেকে চুল পুরোটা কালার করেন। অনেকে পুরো কালার না করে কিছুটা স্টিক করে কালার করেন। সে ক্ষেত্রে অমেব্র মেহগনি কপার এই কালারগুলো হাইলাইট কিংবা লো লাইটের সঙ্গে বেশ ভালো যায়। এ ছাড়া বøন্ড বা সোনালি, বারগান্ডি, স্ট্রবেরি বøন্ড, রেডিশ বাদামি, জেট বø্যাক ইত্যাদি হেয়ার কালারের শেড হিসেবে বেশ জনপ্রিয়। ইদানীং তরুণ প্রজন্ম একই ধরনের কালার শেড ব্যবহার না করে কয়েকটি ভিন্ন ভিন্ন শেড স্টিকের মতো করে ব্যবহার করছেন। এ ক্ষেত্রে বেগুনি, নীল, ডাকর্ অবানর্, চেস্টনাট, হালকা সবুজ বা নীলচে সবুজ ইত্যাদি কালার আধুনিক ট্রেন্ডের সঙ্গে মানানসই।
তবে চুল যেমনই কালার করুন না কেন তার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূণর্ হেয়ার কাটটাও থাকা চাই। চুল লম্বা হলে নিচের দিকে চুলগুলো হালকা রেডিশ বা বাদামি অথবা বøন্ড কালার করতে পারেন। আর অবশ্যই চুলের কালার করানোর আগে ফাটা চুল থাকলে তা ট্রিম করে নিন। আপনি কোন ধরনের পোশাক পরেন তার সঙ্গে মিলিয়ে চুলে কালার করুনÑ দেখবেন সব ধরনের পাটিের্ত মানিয়ে যাবে আপনার নতুন হেয়ার সেটআপ।
মিলিয়ে নিন গায়ের রং
চুল রং করার আগে অবশ্যই গায়ের রং দেখে নেয়া উচিত। যদি রং একটু চাপা হয় তাহলে ডাকর্ রং পছন্দ করা উচিত। ফসার্ রং যাদের তারা যে কোনো রং পছন্দ করতে পারেন। কিন্তু ফ্যাকাসে রং যাদের তারা কালো বা গাঢ় রং এড়িয়ে চলুন। কারণ এতে গায়ের রং আরও ফ্যাকাসে লাগবে।
লাল রঙের শেড যে কেউ ব্যবহার করতে পারেন। কিন্তু কিছু জিনিস মাথায় রাখুন যেমন যাদের গোলাপি ফসার্ গায়ের রং তারা একটু গাঢ় লাল বাছুন। আবার ডাকর্ রেড ব্রাউন একটু চাপা রঙের মহিলাদের ওপর ভালো লাগবে। আবার যাদের ফ্যাকাসে গায়ের রং তারা জিঞ্জার রেড ব্যবহার করুন। আবার যাদের গায়ের রং কালো তারা উজ্জ্বল লাল বেছে নিন।
ঘরে বসেই রং
ঘরোয়াভাবে রং করতে চাইলে বেশ কটা ব্যাপার মাথায় রাখা জরুরি। রং করার আগে পুরনো কোনো টি-শাটর্ অথবা অন্যকোনো পুরনো পোশাক পরে নিন। কেননা এতে রং লাগতে পারে এবং দ্বিতীয়বার হয়তো পোশাকটি আর পরতে নাও পারেন। আপনার কপালে, গালে, পেছনে হেয়ার লাইনের নিচে রং লাগতে পারে তাই ভ্যাসলিন বা লিপ বাম মেখে নিন। একে বলা হয় কোটিং। এর মাধ্যমে রং লাগা প্রতিরোধ করা যায়।
সাধারণত ডাই অনেক ঘন থাকে। এটিকে আপনার পছন্দের রঙে পরিণত করতে হলে লঘু করতে হবে। এজন্য ডাইটিকে ডেভেলপারের সঙ্গে মেশাতে হবে। যদি গাঢ় রং করতে চান তাহলে ১০% ডেভেলপার মিশিয়ে নিন। হালকা করতে চাইলে ২০%।
রং মেশানো হয়ে গেলে চিরুনি দিয়ে আপনার চুলগুলোকে ছোট ছোট ভাগে ভাগ করে ক্লিপ দিয়ে আলাদা করে ফেলুন। এবার ব্রাশের মাধ্যমে একটু একটু করে রং লাগাতে থাকুন। গোড়া থেকে আগা পযর্ন্ত সাবধানে লাগাতে থাকুন যেন বেশি গড়িয়ে না পড়ে। হাতে রং লেগে যাওয়া ঠেকাতে গøাভস পরে নেবেন। মাকেের্ট আপনি আপনার পছন্দের ব্র্যান্ড খুঁজে নিতে পারেন। বতর্মানে বেশকিছু জনপ্রিয় ব্যান্ড হলোÑ আপনার চুল কালার করার ক্ষেত্রে আপনার পছন্দ অনুযায়ী ব্র্যান্ড বেছে নিন। কিছু জনপ্রিয় ব্র্যান্ড হলোÑ রেভলন, গানির্য়ার, স্ট্রিক্স, ওয়েলা কলেস্টিন্ট, লরিয়াল, ম্যাট্রিক্স. কালার মেট, ডক্টর জেইনস ইত্যাদি।
যতœ নিন চুলের
চুল কালার করানোর আগে থেকেই চুল যতটা সম্ভব স্বাস্থ্যকর এবং ময়েশ্চারাইজড রাখার চেষ্টা করুন এবং কমপক্ষে ৩-৪ সপ্তাহ আগে থেকে চুলে কোনো কেমিক্যাল ট্রিটমেন্ট করাবেন না।
কালার করা চুলে সপ্তাহে অন্তত একবার হট অয়েল ট্রিটমেন্ট করুন। যতটা সম্ভব হেয়ার ড্রায়ার, কালার বা চুল আয়রন করা থেকে বিরত থাকুন। এসব জিনিস চুলকে ভেতর থেকে ড্যামেজ করে এবং ধীরে ধীরে চুল রুক্ষ ও মলিন হয়ে পড়ে। এ ছাড়া চুল পড়ার অন্যতম একটি কারণ হচ্ছে এসব হেয়ার স্টাইলার ব্যবহার করা। চুল নরম ও উজ্জ্বল রাখতে লিভ ইন কন্ডিশনার ব্যবহার করুন। এই কন্ডিশনার চুল থেকে ধুয়ে ফেলতে হয় না এবং এটি চুল নরম ও শক্ত করতে সাহায্য করে। এই কন্ডিশনার কেনার আগে এর উপাদানগুলোতে একবার চোখ বুলিয়ে দেখে নিন যে তাতে সিলিকন, সালফেট বা সালফার আছে কিনা কারণ এই উপাদানগুলো চুলের জন্য বেশ ক্ষতিকর।