শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বাজে পূজার বাদ্যি

পূজার যে সব আনুষ্ঠানিকতা তার জন্য ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরাই ভালো। যেমন অঞ্জলি দিতে যাওয়ার সময় পরা যায় তাতের শাড়ি। সেখানে ফিউশন পোশাক তেমন মানানসই হবে না...
সোরিয়া রওনাক
  ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০০:০০

সামনেই পূজা। নতুন পোশাক তো চাই-ই। আর সেটা হতে হবে একদম মনের মতো। এ বছর পূজার সাজগোছের ধারাটা কেমন, আগের ফ্যাশন ধারাই চলবে নাকি একদম নতুন ধঁাচের কিছু দেখা যাবে, মৌসুমের প্রভাবটাই বা পোশাকে কেমন দেখা যাবে, সে সব প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন ফ্যাশন ডিজাইনাররা।

পূজায় পোশাকে লাল-সাদা রঙের প্রাধান্য দেখা যাচ্ছে। দুটো রঙের আলাদা তাৎপযর্ আছে। লাল হলো উৎসবের রং। পূজার ধুমধাম, আনন্দের সঙ্গে যোগ হলো লাল রঙের। আর সাদাটা অনেকে মনে করেন শরতের প্রকৃতির অনুপ্রেরণায় এসেছে। এটা হলো পূজার পবিত্রতার প্রতীক ‘যে কোনো প্রাথর্নাতেই সাদা রঙের একটা প্রভাব থাকে।’

অন্যবারের তুলনায় এবার ফ্যাশন হাউসগুলো বেশ মনোযোগ দিয়েছে পূজার সংগ্রহে। ঈদ আর পূজার মধ্যে সময়ের ফারাকটাও এবার বেশি নয়। কাজেই ঈদ সংগ্রহের সঙ্গে করে পূজার পোশাকও এনেছে অনেক ফ্যাশন হাউস। পূজার চারদিনের যে কোনো একদিন অন্তত শাড়ি পরা যায় বলে মনে করেন তিনি। তবে চারদিনে চার পোশাক নয়, বরং চারদিনে চার লুক এটাই হোক পূজার ফ্যাশনধারা। উৎসবের আমেজ, আনন্দ ও নিজের ব্যক্তিত্ব এসব কটি দিক মিলিয়েই পোশাক কেনেন সবাই। তবে এর সঙ্গে আরও একটা ব্যাপার গুরুত্বপূণর্ পরিবারের বাজেট।

বাজেটের মধ্যেই কীভাবে নতুন নতুন লুক আনা যায়। মার হয়তো অনেক শাড়ি পড়ে আছে আলমারিতে। সেখান থেকেই তো একটা নেয়া যায়। নতুন একটি বøাউজের সঙ্গে নতুন ঢঙে পরা যায় সেটি। আবার পুরনো কুতার্র সঙ্গে নতুন রংচঙে একটা স্কাফর্ পরা যায়। একদম নতুন দেখাবে পুরনো পোশাকটিই।

আর একটা ব্যাপারে লক্ষ্য রাখা উচিত। পূজার যে সব আনুষ্ঠানিকতা তার জন্য ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরাই ভালো। যেমন অঞ্জলি দিতে যাওয়ার সময় পরা যায় তাতের শাড়ি। সেখানে ফিউশন পোশাক তেমন মানানসই হবে না। আবার সন্ধ্যাবেলা বেড়াতে যাওয়ার আগে পরা যেতে পারে জিন্স, কুতার্। তখন আবার মনের মতো যে কোনো পোশাকেই নিজেকে সাজানো যায়।

কয়েকদিনের উৎসব। মনের মতো সাজগোছের সুযোগটাও অনেক বেশি। একেক দিন একেক থিমে নিজেকে সাজানো যায়। ষষ্ঠীর দিনটা নানা কাজে কেটে যায়। এ জন্য এদিন সাদামাটা, ছিমছাম সাজাই ভালো। সাদা রঙের শাড়িই এদিন মানানসই। সপ্তমীর দিন থেকেই শুরু হবে সাজগোছের পালা। সপ্তমী থেকে দশমী পযর্ন্ত চারদিনে চার রঙের পোশাক বেছে নেয়া যায়, পোশাকের উপাদানও হতে পারে একেক দিন একেক রকম।

সপ্তমীর দিন সকালে পরার জন্য লাল, সাদা, কমলা, গেরুয়া রংগুলো মানানসই। এ রংগুলো সব ধরনের গায়ের রঙেই মানিয়ে যায়। যে কেউ এসব রঙে নিজেকে সাজাতে পারেন। আর চুলে ফুল ব্যবহার করলে বেশ একটা স্নিগ্ধভাব আসবে। সপ্তমীর দিনে সুতি, হাফ সিল্ক শাড়ি চলতে পারে। রাতে পরতে পারেন অ্যান্ডি বা সিল্কের শাড়ি।

অষ্টমীর সাজটা হওয়া চাই একদম ‘ঝাক্কাস। একদম শখ মিটিয়ে সাজা চাই এদিন। সাজে জমকালো ভাবটাও যেন ফুটে ওঠে। সাদা, লাল, কঁাচা হলুদ, গোলাপি, গেরুয়া এসব রঙের শাড়ি পরা যেতে পারে। এদিন নিজের পছন্দমতো যে কোনো পোশাক বেছে নিতে পারেন। পূজার সাজের জন্য শাড়িই প্রথম পছন্দ অনেকের কাছে। তবে কমবয়সী মেয়েরা সালোয়ার-কামিজ, কুতার্ও পরেন। কুতার্র সঙ্গে জিন্স বা লেগিংস পরাটা তো দারুণ চলতি ফ্যাশন। নবমীর সাজে শরতের আকাশের নীল, কাশফুলের সাদা, গাছপালার সবুজ এমন রংগুলো পোশাকে ব্যবহার করতে পারেন। আর লাল-সাদা রঙের ছেঁায়া রাখতে পারেন গহনায়। যেমন, কপালে লালটিপ, হাতে লাল-সাদা চুড়ি।

এদিন রাতে ঐতিহ্যবাহী শাড়ি পরলেই ভালো লাগবে। কোনো ভ্যালুঅ্যাড করা নয়। ঐতিহ্যবাহী তঁাত, জামদানি এসব শাড়ি পরা চাই। দশমীর দুপুরে লাল-সাদা শাড়ি পরেন অনেকে। গরদের শাড়িও পরতে পারেন। পুরাতন ধঁাচের এই শাড়িই যোগ করবে ফ্যাশনের নতুন মাত্রা। এই রাতে অনেকেই আত্মীয়স্বজনের বাসায় বেড়াতে যান। বাড়িতেও নানা আয়োজন থাকে। কাতান, বেনারসি শাড়ি রাতে তাই বেশ মানাবে।

এ তো গেল পোশাকের কথা। সাজ কেমন হবে? পূজায় ঐতিহ্যবাহী সাজটা দেখতে ভালো লাগে। আর চাইলে যে কোনো দিন তো একটু অন্য রকম সাজার সুযোগটা রয়েছেই। শাড়ি যেমনই হোক, গহনাগুলো সাবেকি ধঁাচের পরলে বেশ মানাবে। শাড়ির সঙ্গে কানে ঝুমকা পরলে দারুণ দেখায়। তেমনি সবসময় পরা হয় না এমন গহনা, যেমন টিকলি, নথ এগুলোও পরা যেতে পারে। আর ফুলের সাজের আবেদন তো চিরন্তন।

তবে একদমই ‘যেমন খুশি তেমন না সেজে’ আগে থেকেই একটু পরিকল্পনা করে সাজা দরকার। গহনাটা শাড়ির সঙ্গে মিলিয়ে পরলেই ভালো। যেমনÑ শাড়িতে ম্যাট ভাব থাকলে পরতে পারেন কড়ি, শামুকের গহনা। আবার পাথর, জরির কাজ থাকলে পরতে পারেন পাথরের গহনা।

উজ্জ্বল রঙের চাহিদা, কাতান, অ্যান্ডি, সুতি কাপ— একদমই বাঙালি ঘরানার সাজ-পোশাক। এবার বøাউজের ফ্যাশন হবে বাহারি। শাড়ি যেমনই হোক, নজরে পড়বে বøাউজটা। শাড়ির রঙের সঙ্গে মেলানো নয়; বরং কন্ট্রাস্ট রঙের বøাউজ পরাই এবারের ফ্যাশন। ফ্রিল, লেস বসানো নানা রকম কাটের বøাউজ পরতে দেখা যাবে। পুরনো দিনের গলাবন্ধ, বোটনেক, ঘটি হাতার বøাউজের চলটা পূজায় দেখা যাবে।

যেমন সাদা-লাল শাড়ির সঙ্গে পরা যেতে পারে কন্ট্রাস্ট রঙের কোনো ফ্লোরাল প্রিন্টের বøাউজ। বাটিক, বøকপ্রিন্ট করানো বøাউজও পরা যায়। পূজায় সাদা-লাল রঙের পোশাক পরার দিকে ঝেঁাক থাকে অনেকের। তারা বøাউজে নীল, হলুদ, সবুজ এসব রং ব্যবহার করতে পারেন।

মডেল : নিপা আহমেদ রিয়েলি, ছবি : এসডি প্রিন্স

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<15000 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1