মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

যুগে যুগে ফ্যাশনের অদল বদল

ফ্যাশন পরিবতর্নশীল। পোশাক একজন ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব প্রকাশের অন্যতম মাধ্যমও বটে। যুগে যুগে এই পোশাকে এসেছে অনেক পরিবতর্ন। একে বলা হয় ট্রেন্ড পরিবতর্ন। এই ট্রেন্ডের ওপর নিভর্র করেই ফ্যাশনও নিধার্রণ করা হয়। কিন্তু একটু খেয়াল করলেই দেখা যায়, বারবার ফিরে এসেছে সেই পুরনো দিনের জামার ডিজাইন। প্রতিবছরই নতুন ট্রেন্ড আসে, তা চলে গিয়ে আরেক নতুন ফ্যাশন আসে। লিখেছেন আনিকা ইবনাত
আনিকা ইবনাত
  ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০০:০০
মডেল : ফারজানা নিশি, ছবি : এসডি প্রিন্স

ট্রেন্ডের এই আসা-যাওয়া সবই ঘটে একটা ফ্যাশন সাইকেলের মাধ্যমে। আর এ ফ্যাশন সাইকেলের মধ্যে যুগে যুগে বদলে চলে ট্রেন্ড। এ থেকেই বোঝা যায় ফ্যাশন হচ্ছে পরিবতর্নশীল। আজকে যা নতুন কালকেই তা আবার পুরনো হয়ে যাচ্ছে। ৭০-৮০ দশকের পোশাকগুলোই হালের ফ্যাশন হয়ে আবার ধরা দিচ্ছে ফ্যাশনসচেতন মানুষের কাছে। শাড়ি, কামিজ, পায়জামা, বøাউজ সব কিছুতেই সময়ের পালাবদলে প্রাচীন রূপ আবার নতুনরূপে আসছে।

শাড়ি

শাড়ি বাঙালি নারীদের কাছে সব যুগেই পছন্দের শীষের্। তাই তো যে কোনো উৎসব পাবের্ণর আগে শাড়ি নিয়েই যত জল্পনা-কল্পনা। যুগে যুগে এই শাড়ি নারীদের মন জয় করলেও এর কিন্তু ট্রেন্ডের অনেক পরিবতর্ন এসেছে। কিছু বছর আগেও শাড়িতে চুমকি, পুঁতি, জরি, পাথরের কাজ করা ফ্যাশন ছিল না। তবে এ ধরনের শাড়ির চল সত্তর ও আশির দশকে দেখা গিয়েছিল।

বøাউজে এসেছে ফ্যাশন

শাড়িতে যেমন ফ্যাশনের পরিবতর্ন এসেছে তেমনি এর ব্যতিক্রম ঘটেনি বøাউজেও। শাড়ির সঙ্গে মানানসই ডিজাইনের বøাউজের অনেক ধরন দেখা যায় পোশাক বাজারে। বিভিন্ন ফ্যাশন হাউসগুলোয় ঈদ ও পূজাকে সামনে রেখে বাংলার অতি প্রাচীন আমলের ডিজাইন ব্যবহার করছেন ডিজাইনাররা। আগের দিনের ঠাকুরবাড়ির বউরা শাড়ির সঙ্গে যে ধরনের পোশাক পরতেন সেই প্রথাই আবার ফিরে এসেছে। শাড়ির যেমন খুব গুরুত্বের সঙ্গে বাছাই করা হয় তেমনি বøাউজের ডিজাইনের প্রাধান্যও আছে অনেক নারীদের কাছে। বøাউজের নানা ধরনের ডিজাইন যেমন ডাবানো গোল গলা, আবার থ্রি-কোয়াটার্র হাতা দিয়ে তাতে লেইস বসানো বøাউজ খুব চলছে এখন। তা ছাড়া ঘটিহাতা, পিস্তলহাতা, চুড়িহাতার বøাউজ যা সত্তর ও আশির দশকে বেশ জনপ্রিয় ছিল, তা এখন আবার ফিরে এসেছে। বøাউজের পিছনে লেইস দেয়া ফিতা, এমনকি বোতাম দেয়াটাও দেখা গিয়েছিল আশি-নব্বইয়ের দশকে।

সালোয়ার কামিজে ধরন বদল

শাড়ির পরই যে পোশাকটি বাঙালি নারীরা বেশি পরে তা হলো সালোয়ার-কামিজ। শাড়ির মতো এখানেও ফিরে এসেছে পুরনো দিনের ডিজাইনের বা কাটিংয়ের ধঁাচ। গত ঈদের আগে বিভিন্ন বাজার ঘুরে খুব ভালো মতোই বোঝা গেছে লন কামিজের জ্বর যেন সব তরুণীকে ধরে বসেছে। তবে এই লম্বা বা লন কামিজের ফ্যাশন ছিল আজ থেকে প্রায় দশ বছর আগে, ঘুরে-ফিরে সেই জামার চলই আবার ফিরে এসেছে। তা ছাড়া এক সময়ের চুমকি, পুঁতি, ডলার, জরির কাজ করা জামা এখন চলছে হরদম। সালোয়ারের ক্ষেত্রে রয়েছে ষাট-সত্তরের দশকের চুড়িদার, ধুতি, পেশোয়ারি, পাটিয়ালি এবং চাপাশেপের সালোয়ার ও নিচে মুহুরি।

কাপ্তান এখন টপস

আশির দশকের যে পোশাকের নাম ছিল কাপ্তান এখন তার নাম পরিবতর্ন হয়ে হয়েছে টপস এবং তা ফিরে এসেছে নতুনরূপে। এক সময়ে খুব চলত হাতে কাজ করা কোটি আর এখন এ ধরনের টপসগুলোতেই ওড়নার বদলে ব্যবহার করা হয়েছে সেই কোটি, কোনোটি টপসের সঙ্গে ফিটিং করা, আবার কোনোটি ফিটিং ছাড়া। এই কোটির প্রচলন ছিল প্রায় ১৫ বছর আগে। অনেকে শখ করে হাতে সুতার কাজ করে তারপর কোটি তৈরি করত। আর এখন রেডিমেড পাওয়া যাচ্ছে কোটি। টপসে ফুলহাতা ও থ্রি-কোয়াটার্র হাতার ব্যবহারও আছে। টপসের গলায় ও হাতে রয়েছে হালকা হাতের কাজ, কাঠ, কাচের পুঁতি, স্টোন, বিভিন্ন ধরনের পাতি ও মেটালের কারুকাজ। এ ছাড়া কিছু টপসে রয়েছে কারচুপি ও সিকোয়েন্সের কাজ। এসবের সঙ্গে রয়েছে হাতে, গলায় লেইসের ডিজাইন করা।

পালাজ্জো

বতর্মানে পোশাকের বাজারে যে নামটি খুব বেশি প্রচলিত সেটি হচ্ছে পালাজ্জো। কিন্তু কিছুদিন আগেও চাপা পায়জামার বেশ চল ছিল। এই পালাজ্জোর ইতিহাস যদি দেখি তবে দেখা যাবে এক সময় ডিভাইডার নামে প্রচলিত এই পায়জামা একটু ঘের বাড়িয়ে এখন পালাজ্জো। কিন্তু এ ধরনের পায়জামা আজ থেকে প্রায় দশ বছর আগে পোশাকের বাজার দখল করে রেখেছিল। বতর্মানে লম্বা কামিজের সঙ্গে পালাজ্জো বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। অনেকে আবার বিভিন্ন টপসের সঙ্গেও পালাজ্জো পরতে পছন্দ করছে। প্রায় সব বয়সী মেয়েদের কাছেই এখন পালাজ্জো মানেই ফ্যাশন। তবে এই পালাজ্জো যখন ডিভাইডার নামে পরিচিত ছিল তখন কিন্তু এই পায়জামার ঘের কিছুটা কম ছিল। সময়ের পরিবতের্ন নামের সঙ্গে এর কাটিংয়ে কিছুটা পরিবতের্নর মাধ্যমে এখন তা পালাজ্জো নামে পোশাক বাজারে জায়গা দখল করে নিয়েছে। আগের ডিভাইডারগুলো বিভিন্ন কাপড়ের হতো যেমনÑ সুতি, সিল্ক, জজের্ট তবে বতর্মানে এখানেও পরিবতের্নর ফলে শুধু জজের্ট কাপড়ের পালাজ্জোই বেশি চলছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<13739 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1