মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

আবাসনের দাবি মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীর

সাবিনা ওয়াহাব
  ১৭ জুন ২০১৯, ০০:০০
আপডেট  : ১৭ জুন ২০১৯, ১১:১৮

১৯৪৭ সালে দ্বি-জাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে ভারতবর্ষ বিভক্ত হয়েছিল অবৈজ্ঞানিক দ্বি-জাতি তত্ত্ব পরবর্তীতে অসার প্রমাণিত হয়। ফলশ্রম্নতিতে উন্মেষ ঘটে বাঙালি জাতীয়তাবাদের। ১৯৭১ সালে সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে বাংলাদেশের জন্ম হয়। পৃথিবীর মানচিত্রে প্রতিষ্ঠিত হয় স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে বিপুল রক্তের বিনিময়ে স্বাধীনতা অর্জন পৃথিবীর ইতিহাসে এক বিরল ঘটনা। রক্তমূল্যে অর্জিত স্বাধীনতায় অংশগ্রহণ করেছিল বাংলার লাখো জনতা। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ শুধু স্বাধীনতা অর্জনের যুদ্ধ নয়, মানব মুক্তির যুদ্ধ। বাঙালি জাতিসত্ত্বাকে টিকিয়ে রাখার যুদ্ধ। এ যুদ্ধ জয়ই প্রমাণ করেছে এ দেশের মানুষ দেশপ্রেমিক। অর্জিত হয় মহান বিজয়। তবে এর জন্য আত্মত্যাগ করতে হয়েছিল ত্রিশ লাখ শহীদকে। দেশের জন্য জীবন দিতে এ দেশের মানুষ কোন কার্পণ্য করেনি। দেশমাতৃকার সম্মান রক্ষায় হানাদারের ৎেৎ মেশিনগানের সামনে বুক চেতিয়ে দিতে একটুও বুক কাঁপেনি তাদের। অসম সাহস আর বীরত্বের মধ্যে দিয়ে পাক হানাদারের বর্বোরোচিত হামলার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ করে তুলতে সক্ষম হয়েছিল এ দেশের মানুষ। তেমনই একজন সাহসী মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন- বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত হেবজু মিয়া।

কুমিলস্নার বুড়িচং উপজেলার পাঁচোড়া গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত হেবজু মিয়ার বিধবা স্ত্রী তার সন্তানদের আবাসনের জন্য সরকারের কাছে একখন্ড জমি চেয়েছেন। হেবজু মিয়ার পরিবারের মাথাগোঁজার ঠাঁই নেই। তার রেখে যাওয়া সামান্য ভূমির ছোট একটি জরাজীর্ণ ঘরে মানবেতর জীবনযাপন করছেন বিধবা স্ত্রী ও তিন ছেলের পরিবার। ভূমিহীন ওই মুক্তিযোদ্ধা পরিবারটির আবাসন সমস্যার সমাধানে তাদের নামে একখন্ড জমি দেয়ার জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও এলাকার লোকজন সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন।

জানা যায়, বুড়িচং উপজেলার ১নং রাজাপুর ইউনিয়নের পাঁচোড়া গ্রামের হেবজু মিয়া বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সৈনিক ছিলেন এবং তিনি ৮নং সেক্টরে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৮৫ সালে তিনি অবসর গ্রহণ করেন এবং ১৯৯৩ সালের ৩১ শে মার্চ স্ত্রী ও তিন ছেলে রেখে মৃতু্যবরণ করেন। তার রেখে যাওয়া মাত্র আড়াই শতকের ভিটেবাড়ির একটি ঘরে স্ত্রী ও ছেলেদের পরিবার নিয়ে বসবাসের ক্ষেত্রে খুব কষ্ট পেতে হচ্ছে। তার বড় ছেলে সাইফুল ইসলাম ১০ বছর আগে দুবাই যাওয়ার পর আজও নিখোঁজ, সে বেঁচে আছে কি না তাও পরিবারের লোকজন জানেন না। তার স্ত্রী ও এক ছেলে রয়েছে।

দ্বিতীয় ছেলে জয়নাল আবেদীন সামান্য বেতনে চাঁদপুরে চাকরি করেন, তার স্ত্রী-সন্তান রয়েছে। ছোট ছেলে মো. শরীফ শ্রমিক। হেবজু মিয়ার বিধবা স্ত্রী নুরনাহার বেগম জানান, ছেলেদের পরিবার নিয়ে বসবাসের জন্য বাড়ি নির্মাণ করার মতো জায়গা ও সামর্থ্য নেই। জরাজীর্ণ ছোট ঘরে সবার স্থান সংকুলান হয় না। তাই বেশিরভাগ সময় ছেলের কর্মস্থলের ভাড়া বাসায় থাকতে হয়। স্বামীর মুক্তিযোদ্ধা ভাতা পাচ্ছি, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে একখন্ড জমি পেলে ছেলেদের মাথাগোঁজার ঠাঁই হতো। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মো. মোস্তফা জানান, এ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারটি আর্থিকভাবে অসচ্ছল। আবাসনের জন্য বাড়ি কিংবা কোনো ঋণ সুবিধাও পায়নি। এ পরিবারের আবাসনের জন্য মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়সহ সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<54017 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1