শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

গুটিবাজ

সারোয়ার কবীর
  ২৪ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০০

'কিছু মনে না করলে একখান কতা কইবার চাই।'

ফিরে দাঁড়িয়ে জিজ্ঞেস করলাম, 'বলেন, কী বলবেন?'

মাঝ বয়সি দোকানদার, আশপাশে একবার নজর বুলিয়ে গলাটা নামিয়ে বলে, 'একটু আগে এক ম্যাডামের লগে কথ কইলেন, হ্যার লগে পরিচয় কদ্দিন?'

প্রশ্নটা শুনে মেজাজ খিচড়ে যাওয়ার উপক্রম। তবে নিজকে সামলে, জবাব না দিয়ে পা বাড়াই সামনে। একে তো এ ধরনের প্রশ্ন আমার কাছে অনাকাঙ্ক্ষিত, তারপর তাড়া ছিল। সেগুনবাগিচা বন্ড অফিসে গিয়ে একজনকে ধরতে হবে। সেখান থেকে বেরিয়ে নিজের অফিস- সেই তেজগাঁও নাবিস্কো এলাকায়। সাড়ে ৮টার দিকে ঘর থেকে বেরিয়ে সরু গলির মাথায় বড় রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে রিকশার জন্য অপেক্ষা করছি- এমন সময় মহিলার সঙ্গে দেখা। নামটা যেন কি! বদরুন্নেছা অথবা বদরুন্নাহার হবে। বয়স ত্রিশের কোঠায়। দেখতে-শুনতে মন্দ নয়। শাড়ি বস্নাউসে বেশ রুচির ছাপ। এক সময় থাকতো আমাদের পাশের ফ্ল্যাটে। আমরা বর্তমান বাসায় আসার কয়েক মাসের মাথায় কয়েকটা বাড়ির ওপাশে আরেক ফ্ল্যাটে চলে যায়। কয়েক মাসেই আমার স্ত্রীর সঙ্গে মহিলার বেশ খাতির জমে। সেই সূত্রে আমার সঙ্গে পরিচয়। ওর স্বামী সৌদি প্রবাসী। দশ-এগারো বছরের একটা ছেলে আছে। মতিঝিল আইডিয়াল স্কুলের ছাত্র। ওর এক ভাগ্নি ছিল, সম্ভবত এখনো থাকে ওদের বাসায়। বেশ স্মার্ট যুবতী। চাকরি করে কোনো এক অফিসে। বদরুন বেশ খোলামেলা স্বভাবের। আমাকে দেখেই এগিয়ে এসে বলেন, 'ভাইজান কেমন আছেন? ভাবীর সঙ্গে তো একদিনও বেড়াতে গেলেন না আমাদের বাসায়?'

'সময় পাই না, কাজের চাপ বেশি। ব্যস্ত থাকতে হয়।'

'আপনাদের ব্যবসা এখন কেমন?'

'ভালোই চলছে।'

'আমার এক ফুফাতো ভাইয়ের গার্মেন্ট ফ্যাক্টরি আছে।'

'তাই নাকি! আগে তো বলেননি।'

'আমিই জানতাম না। গত সপ্তাহে ফুফুর অসুস্থ হওয়ার খবর শুনে বারডেম হাসপাতালে তাকে দেখতে গেলাম। সেখানেই ভাইয়ের সঙ্গে দেখা হওয়ার পর জানলাম।'

'ওদের ফ্যাক্টরি কোথায়?'

'মিরপুরের ওদিকে। দারুস সালাম রোড না কী যেন বলল। আমি ভাই এক চিড়িয়াখানা ছাড়া মিরপুরের আর কিছুই চিনি না।'

বদরুনের সঙ্গে আমার যখন কথা হচ্ছিল তখন হয়তো হাত পাঁচেক দূরত্ব থেকে দোকানদার আমাদের লক্ষ্য করেছিল বা কথা শোনার চেষ্টা করছিল। মাঝেমধ্যে ওই দোকানে গিয়ে আমি নুন, চিনি, প্যাকেট আটা, দুধ ইত্যাদি কিনে থাকি। কখনো টাকার নোট খুচরা করি। দোকানদারের সঙ্গে খাতির আছে মোটামুটি। মাথায় গোলটুপিসহ স্কুলের ইউনিফরম পরা ছেলে রিকশা ডেকে আনলে বদরুন তাতে চড়ে বিদায় নেওয়ার পর দোকানদারের ডাক শুনে তার কাছে যাই। কিন্তু ওর কথা মনঃপূত না হওয়ায় দাঁড়াইনি আর। কিছুটা হেঁটে খালি রিকশা পেয়ে চড়ে বসলাম।

সামনে খিলগাঁও ফ্লাইওভারের নিচে লেভেল ক্রসিং। ট্রেন যাবে বলে গেট পড়ে। ওখানকার জ্যামে আটকে থাকা অবস্থায় দোকানদারের কথাটা মনে উঁকি দেয়। অমন প্রশ্ন কেন করতে গেল সে? নিশ্চয় কোনো কারণ আছে। মনে হচ্ছে, দোকানদার কিছু একটা জানাতে চেয়েছে। সেটা কী হতে পারে? ওভাবে এড়িয়ে আসাটা ঠিক হয়নি, শুনলেই পারতাম। বদরুনকে যদ্দিন দেখে আসছি, তার মধ্যে কোনো অস্বাভাবিকতা বা সন্দেহজনক কিছু চোখে পড়েনি। আর পাঁচটা ভদ্রমহিলার মতোই মনে হয়েছে। সে ধরনের কিছু থাকলে নিশ্চয় গিন্নির কাছ থেকে জানতে পারতাম। ছবি, মানে আমার স্ত্রীর নজর বড় প্রখর। আমাদের দশ-বারো বছরের দাম্পত্য জীবনে দেখেছি যা আমার ধারণার বাইরে ছিল সেটা ঠিকই তার চোখে ধরা পড়েছে। বয়সে একটু বড় বলে বদরুনকে আপা বলে ডাকে। কয়েকবারই বলেছে, 'বদরুন আপার মনটা খুব ভালো।' আমারও একই অভিমত। কিন্তু দোকানদারের কথার সুরে অন্যরকম ইঙ্গিত।

চাকরির পাশাপাশি আমি টুকটাক গার্মেন্ট এক্সেসোরিস ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। গাজীপুরের এক গার্মেন্ট ফ্যাক্টরির মার্চেন্ডাইজারের অনুরোধে একটা বন্ড লাইসেন্স বের করার ধান্ধায় আছি। কাস্টমস বন্ড অফিসের একজন সুপারিনটেনডেন্ট আমার দেশি ভাই- আত্মীয়ও বটে। সকাল সকালে সেগুনবাগিচায় তার অফিসে গিয়ে দেখা করলাম। তিনি আমাকে আশ্বস্ত করলেন লাইসেন্স পেতে আরও সপ্তাহ দুয়েক লাগবে। বন্ড অফিস থেকে বেরিয়ে কাকরাইল মোড়ে গিয়ে ছয় নম্বর রুটের বাস ধরে তেজগাঁও নাবিস্কো। বাস থেকে নেমে খানিকটা হাঁটলেই আমার অফিসে। মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের একটি প্রতিষ্ঠান।

মুক্তিযোদ্ধা না হয়েও সেখানে চাকরিটা পেয়েছি এক চাচার জোরে। চাচা ডাকসাইটের মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার। চাকরিটা বেশ আরামের। অফিসে বেশির ভাগ সময় কাজ বলতে মাছি খেদানো। মাসান্তে বেতনটা ঠিকমতোই পাচ্ছি। তবু মনের ভেতর আশঙ্কা যে এই প্রতিষ্ঠান বেশিদিন টিকবে না। যে কারণে এক বন্ধুর সহযোগিতায় গার্মেন্ট এক্সেসোরিস ব্যবসা শুরু করি। একটা প্রেস দিতে পারলেই আয়-রোজগার নিয়ে আর ভাবতে হবে না। অফিসে আমার ইমিডিয়েট বস যিনি-সেই বজলু ভাই আমার চাচা কুদ্দুস কমান্ডারের অধীনে মুক্তিযুদ্ধ করেছেন। সেই সূত্রে তার সঙ্গে বেশ খাতির, তারপরও এটা-ওটা গিফট করি। এই যেমন দুদিন আগে এক গার্মেন্ট ফ্যাক্টরি থেকে টি-শার্ট এনে দিয়েছি। দারুণ খুশি। তাকে বলেই লাঞ্চ আওয়ারে অফিস থেকে বেরিয়ে পড়লাম। বাসে চড়ে গুলিস্তান। ওখানকার কয়েকটা মার্কেট ঘুরে স্যাম্পল নিয়ে চলে যাই সদরঘাট এলাকায়। সন্ধ্যায় আরামবাগে গেলাম এক প্রেসে ছাপতে দেওয়া লেভেল দেখার জন্য। এত ব্যস্ততা আর রাস্তাঘাটের বিরক্তিকর জ্যামের দরুন দোকানদারের বিষয়টা আর মাথায় ছিল না। রাতে মহলস্নার রাস্তায় রিকশা ঢুকতেই মনে পড়ে। বাসার কাছে এসে দেখি, দোকানদার নয় তার জোয়ান ছেলে বসা।

ব্যবসায়িক ঝামেলা আর ব্যস্ততার ভেতর কয়েকদিন কেটে যায়। দোকানদারের দেখা পেলেও মাথায় তখন অন্য চিন্তা, নয়তো কাজের তাড়া ছিল। শুক্রবার, সাপ্তাহিক ছুটির দিনে বাজারে যাওয়ার সময় দোকানের সামনে গিয়ে তাকে বললাম, 'সেদিন যেন কী বলতে চেয়েছিলেন?'

কথাটা শুনে দোকানদার যেন আকাশ থেকে পড়ার ভান করে বলে, 'কী কন ভাই? আমার তো মনে নাই।'

'ওই যে আমার পাশের ফ্ল্যাটে থাকতেন যে মহিলা, তার সঙ্গে আমার কথা হচ্ছিল আগে- তখন আপনি যেন কী বলতে চেয়েছিলেন?'

দোকানাদার মাথা একটু দুলিয়ে বলে 'ও এবার বুঝছি। সায়েমের মার কথা কইতাছেন? তা কন, কী জানবার চান?

'আমি সেটা কেমন করে জানবো আপনি না বললে....'

আবার মাথা দুলিয়ে বলে দোকানদার, 'স্যার, আমি ঠিক বুঝবার পারতাছিনা। আর মহিলা গো ব্যাপারে এখন কিছু না কওনই ভালা। দ্যাশে কত রকমের আইন, কোন ঝামেলায় পড়ি ঠিক আছে? তাই একটা কতাই কইতে চাই, সাবধানে থাকবেন।'

'কেন?'

প্রশ্নের জবাবটা আর শোনা হলো না। একে তো কাস্টমার এসে হাজির, আমারও প্রায় ধৈর্যচু্যতি ঘটে দোকানদারের ধানাই-পানাই দেখে। চলে এলাম।

বিষয়টা মাথা থেকে ঝেড়েই ফেলেছিলাম। বদরুন সম্পর্কে এক মুদি দোকানদারের নিন্দা কিংবা প্রশংসা শোনার অভিরুচি আমার নেই। বাসা থেকে কর্মস্থলে যাওয়া-আসার সময় দোকানদারের দেখা পেলেও কোনো আগ্রহ দেখালাম না। এমনকি কেনাকাটার ক্ষেত্রে পারলে এড়িয়ে চলি তার দোকান। এক ছুটির দিনে, দুপুরে গোসল এবং খাওয়া-দাওয়া সেরে বিছানায় টান হয়ে এক দফা ঘুমের পর বাসা থেকে বেরিয়েছি। রিকশায় চড়ে আরামবাগে যাওয়ার সময় খিলগাঁও চৌরাস্তার কাছাকাছি পৌঁছতেই উল্টা দিক থেকে আসা আরেক রিকশায় নজর গেল। বদরুন ও তার ছেলে আসছিল। আমাকে দেখে মহিলার মুখে হাসি ফুটে ওঠায় আমিও হাত নাড়ালাম। আমার ধারণা, বদরুন ছেলেকে কোচিং করিয়ে বাসায় ফিরছিলেন। তখন দোকানদারের কথা মনে পড়ে গেল। লোকটা আমাকে মধ্য তিরিশের বেশ সুশ্রী এই মহিলা সম্পর্কে সাবধান থাকতে বলেছে। কিন্তু কেন?

সে রাতেই বাসায় ফেরার সময় দেখি দোকানদার একাই বসে আছে। কাছে গিয়ে কুশলাদি বিনিময়ের পর জিজ্ঞেস করলাম, 'সেদিন আমাকে আপনি সাবধানে থাকতে বললেন, ব্যাপারটা আসলে কী?'

'কবে কইছি।'

'এই তো কয়েকদিন আগে, মনে নাই? ওই যে আমার পাশের ফ্ল্যাটে এক ভদ্রমহিলা থাকতেন। তার সম্পর্কে সাবধান করেছিলেন।'

'ও বুঝছি এবার, সায়েমের মায়ের ব্যাপারে জানবার চান?' আমার জবাবের অপেক্ষায় না থেকেই ফের বলে, 'ছাইড়া দ্যান ভাই, যে যার মতো বাঁচুক। যান ভাইজান, রাইত অনেক অইছে বাসায় যান। আমিও দোকান বন্ধ করবার চাই।'

সত্যিই আমার মেজাজ খিচড়ে গিয়েছিল ওর কথার ধরন দেখে। তবে সামলে নিই নিজকে। দোকানদারকে আর কিছু না বলে পা বাড়ালাম বাসার দিকে। নিজের ওপর বিরক্ত হলাম গিবতে আসক্ত মেয়েমানুষের মতোই যেন আমাকে বাজে কৌতূহল পেয়ে বসেছে। ঠিক করলাম, দোকানদার ব্যাটার সঙ্গে কোনো কথাই বলব না। ঠেকায় না পড়লে ওই দোকান থেকে কিনব না কিছুই।

আমার এই অঘোষিত প্রতিজ্ঞা চলার সময়ে এক সাপ্তাহিক ছুটির দিনে দুপুরে গোসল, জুমার নামাজ এবং খাওয়া-দাওয়া সেরে একদফা ভাতঘুম দিয়ে উঠে দেখি, মে মাসের লম্বা বিকেল ফুরাতে তখনও অনেকটা বাকি। রাস্তার উল্টাদিকে এক পাঁচতলা বাড়ির ছাদের কার্নিশে মেখে থাকা উজ্জ্বল রোদ জানালার পর্দার ফাঁক দিয়ে নজর কাড়ছে। ড্রইং রুমে পা রেখে দেখি টিভি ছেড়ে আমার স্ত্রী কলকাতার স্টার জলসার সিরিয়াল দেখছে। আমিও বসলাম পাশের সোফায়। বিজ্ঞাপন বিরতিতে আমার অনুরোধে ছবি যখন চা বানাতে কিচেনে ঢুকেছে তখন বেজে ওঠে কলিংবেল। কিচেন থেকে ভেসে গিন্নির গলা, 'দ্যাখো তো কে এসেছে!'

আমি গিয়ে দরজা খুলতেই দেখি বদরুন। নীল রঙের সিফন শাড়ির সঙ্গে ম্যাচ করা বস্নাউজ। ওর ফর্সা শরীরে মানিয়েছে দারুণ। বেশ উৎসাহের সঙ্গেই বললাম, 'আসুন আপা, ভেতরে আসুন।'

কিচেন থেকে তেড়ে এলো ছবির প্রশ্ন, 'কে এসেছে গো?'

বদরুনই জবাব দেন, 'আমি সায়েমের মা'।

'আপা, ভালো আছেন তো? ড্রইং রুমে বসে আপনারা কথা বলেন, আমি চা বানিয়ে আনছি।

ড্রইং রুমে সিঙ্গেল সোফায় বসেন বদরুন। ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে একটা লাল জমিনে সোনালি নকশা আঁকা খাম বের করে রাখেন টি-টেবিলের ওপর। বুঝতে বাকি থাকে না ওটা দাওয়াতের কার্ড। বদরুন বলে ওঠেন, 'আমার ভাগ্নিকে তো দেখেছেন, ওর বিয়ে সামনের শুক্রবার।'

'অনুষ্ঠান কোথায়?'

'এই তো কাছেই। মালিবাগ বাজারের কাছে বিশ্বরোডের পাশে খিলগাঁও কমিউনিটি সেন্টারে।'

'চিনেছি। আমরা তো একসময় ওদিকেই, মানে রেললাইনের ওপাশে গুলবাগে থাকতাম। তা পাত্র কী করে?'

'ব্যাংকে চাকরি করে। আসলে ভাই ব্যাপারটা হলো পাত্র ওর সহপাঠী ছিল, একসঙ্গে ওরা ভার্সিটিতে পড়ত।'

'বুঝেছি আপা, আর বলতে হবে না। আপনার ভাগ্নিও তো জব করে।'

'হঁ্যা, ও একটা প্রাইভেট ফার্মে আছে।'

'যাক, ভালোই হবে। এই বাজারের স্বামী-স্ত্রী রোজগার করলে বেশ স্বাচ্ছন্দে থাকা যায়। তা সায়েমের বাবা আসবেন না বিয়েতে?'

আমার প্রশ্নের মুখে বদরুন যেন ঠিক তৈরি ছিলেন না। ওর ফরসা মুখে একটা ছায়া পড়ে। তবে জবাব দেন, 'কে জানে ভাই, আসবে কী আসবে না। যার যার অভিরুচি। আমি ফোনে ওকে বিয়ের তারিখ জানিয়ে দিয়েছি।'

প্রসঙ্গ পাল্টাতেই আমি কিছু একটা বলতে যাব আর তখনই মনে উঁকি দেয় দোকানদারের ঘন চাপদাড়ি ভরা মুখটা। ভাবলাম, কাছেই যখন পেয়েছি একবার জিজ্ঞেস করলে দোষ কী! তাই বললাম, 'আচ্ছা আপা, এই যে আমাদের বাসার গলির মুখে মুদি দোকানদারটাকে তো দেখেছেন, লোকটা কেমন বলেন তো?'

বদরুনের মুখ দেখে মনে হলো, প্রশ্নটা করা ঠিক হয়নি। যদিও স্বাভাবিক গলায় বললেন, 'চানমিয়ার কথা বলছেন! দোকানদার হলে কী হবে, লোকটা সাংঘাতিক। যাকে বলে গুটিবাজ।'

'গুটিবাজ!'

'হঁ্যা। আপনাকে কিছু বলেছে নাকি?'

'না, কিছু বলেনি। তবে লোকটার হাবভাব দেখে ভালো মনে হয় না।'

আমার জবাব শেষ হতেই গিন্নি ট্রেতে চা-বিস্কুট আর পানি ভরা গস্নাস নিয়ে ঘরে ঢোকে। দোকানদারের প্রসঙ্গ চাপা পড়ে গেল। আমিও আর আগ্রহ দেখালাম না এই ভেবে বদরুন আমাকে ভুল বুঝতে পারেন।

মহিলা বিদায় নেওয়ার আগে আবার বললেন, 'বিয়েতে না গেলে ভাই আমি খুব মাইন্ড করব। আর আপা, আপনি গায়ে হলুদের দিনও যাবেন।'

বদরুন চলে যাওয়ার পরও তার মুখে উচ্চারিত 'গুটিবাজ' শব্দ আমার কানে বাজতে থাকে। দোকানদারের মুখটাও ভাসে। আমার ধারণা, মহিলার ওই মন্তব্যের পেছনে নিশ্চয় কোনো ঘটনা আছে। কিন্তু সেটা কী?

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<85631 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1