কাওসার আহ্মেদ
এইখানে স্পর্শ ছিল বাবার হাতের,
স্পর্শ ছিল 'মা'র প্রেম বসত ভিটায়!
ফসলের মাঠে মেশা শরীরের ঘাম,
আঙ্গুলে নিংড়ে মাটি বুনেছে সবুজ।
সে মাটির ভালোবাসা লেপ্টে রয় প্রাণে!
সঞ্চারিত হয় কিনা প্রজন্মে প্রজন্মে?
এইখানে পদচিহ্ন রেখে গেছে তারা
মাটির হৃদয়ে সে তা রেখেছে গোপনে,
এখানে মেশানো জলে শরীরের ঘ্রাণ,
স্নানের পুকুরে আজও অবসাদ ডোবা!
কতবার ধুয়েছিল ক্লান্তি অবসাদ
নরম জলের নিচে মিশেছে মাটিতে!
এ-মাটিকে ভালোবাসে সকল পরাণ,
খোয়া যায় দুর্ভাগার মুঠো ফসকে হায়!
ক্রমে বাড়ে সে মাটির বহু বিভাজন,
বিভাজিত হয়ে ওঠে মাটির হৃদয়!
এখানে মাটির পরে কিছু নোনা জল
ফেলে গেছে তারা কবে মনের খরায়!
মাটিতে ছোঁয়নি যার সুকোমল হাত
অথবা আলস্যে কেউ বোনেনিতো বীজ,
চোখের তারায় কারো লাুেগনি সবুজ,
সেওতো প্রবল ছিল মাটির কাঙ্গাল!
তারও তো জীবন গেছে অনায়াসে কেটে,
মিশে গেছে দেহ তারও মাটির গভীরে!
কিছু বৃক্ষ, বৃক্ষছায়া, মহীরুহ, বীজ;
ভাঙ্গা ঘর, ভিটেমাটি, সলীল পুকুর,
পুকুরের ভাঙ্গা ঘাট, গোপন দলীল!
হলুদ খামের চিঠি, নিভৃত বুকের-
হাহুতাশ, হাহাকার, নিরানন্দ প্রেম!
কি প্রতাপে হেঁটেছিল এসব জীবন
অথবা কেটেছে দিন সহজ সরল,
আমরাও চলে যাবো বাঁশঝাড় তলে!
কিছু কীর্তি অসহজ অমরতা লাভে,
কিছু কর্ম সহজতর রহিবে প্রতীক
একটি রোপণও বহে গভীর ইঙ্গিত!
স্মৃতির কাপাস তুলো প্রতীকী হাওয়ায়
'মা'য়ের কাপাস হাসি ওই তো উড়ায়,
বাবার আঙ্গুল কাঁপে স্মৃতির তসবিহে,
খুঁজিতে খুঁজিতে তারে ক্ষয়ে গেছে দানা,
কি জানি সে পেল কিনা আড়ালের তারে
নাকি কভু দেখেছিল আলোর প্রতীক!
সব-ই মিশিবে জানি মাটির নিভৃতে!
এসব জেনেও তবু ভালোবাসি মাটি।