আমি এখন ধানমন্ডির বত্রিশ নম্বরে দাঁড়িয়ে আছি
আমার কানে বাজছে এক স্পষ্ট আহাজারি-
মৃতু্য চিৎকার করে বলছে, আমি হেরে গেছি- আমি হেরে গেছি
আমার যত আস্ফালন-
এতদিন বুক ফুলিয়ে যে আস্ফালন দেখিয়েছি, তা শুধু
এই এক জায়গাতেই আমাকে পর্যুদস্ত করেছে-
আমাকে পরাজিত করেছে
মৃতু্য থরথর করে কাঁপছে- তার কণ্ঠ দিয়ে কথা সরছেই না
সে বলতে চাচ্ছে, এত রথী মহারথী- এত এত লোক নিধন করেছি
শুধু একজনের মৃতু্য আমাকে বড় বিচলিত করেছে
যেখানে আমি অসহায়, আমার সব জারিজুরি মুখ থুবড়ে পড়ে আছে !
আমি মারতে পারিনি, আমি নিঃশেষ করতে পারিনি একটি প্রাণ-
মৃতু্যহীন যিনি এসেছিলেন এই বাংলায়
সবুজ শ্যামলীমা ঘেরা সোনালি এক ভূখন্ডে হাতের মুঠোয় প্রাণ নিয়ে
ঘুরে বেড়িয়েছেন শত্রম্নর ডেরায় ডেরায়
মুক্তিমন্ত্রে দীক্ষিত তিনি
নিয়তির সঙ্গে শলা-পরামর্শ করে করে এঁকেছিলেন ছক
তারপর বাহান্ন এলো
তারপর ঊনসত্তর এলো
তারপর এলো একাত্তর-
বদলে গেল একটি ভাষা
বদলে গেল একটি জনপদ- উত্তাল হলো জনসমুদ্র
তারপর বদলাতে শুরু করল একটি দেশ
নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর পুরোপুরি বদলে গেল একটি মানচিত্র
লাল সবুজের এই পবিত্র মানচিত্র হাতে দাঁড়িয়ে আছেন পিতা
যাঁর কোনো মৃতু্য নেই
পরাজিত মৃতু্য তার পায়ের ভৃত্য হয়ে আগলে ধরে আছে তাকে।