শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশের ছোটগল্প প্রসঙ্গ মুক্তিযুদ্ধ

চৌধুরী শাহজাহান
  ০৭ ডিসেম্বর ২০১৮, ০০:০০

মুক্তিযুদ্ধ বাঙালি জাতির আত্ম-অহঙ্কার। এই ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে আছে পাকিস্তানি হানাদার সেনাবাহিনী ও তাদের এদেশীয় দোসরদের নিমর্ম ও নৃশংস অত্যাচারের কাহিনী। মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশের সৃজনশীল সাহিত্য বিকাশে গুরুত্বপূণর্ ভ‚মিকা পালন করেছে। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে পাকিস্তানি স্বৈরশাসনবিরোধী প্রতিটি আন্দোলনে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আমাদের আথর্-সামাজিক-সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক জীবনের মতো শিল্পসাহিত্যের ক্ষেত্রেও যুগান্তকারী পরিবতর্ন এসেছে। মুক্তিযুদ্ধের গণজাগরণ ও বৈপ্লবিক চেতনা আমাদের সাহিত্যকে আলোকিত করেছে। মুক্তিযুদ্ধকে নিয়ে গড়ে উঠেছে স্বতন্ত্র ধারার সাহিত্য-মুক্তিযুদ্ধের সাহিত্য। সাহিত্যের প্রতিটি অঙ্গনে মুক্তিযুদ্ধের প্রভাব ও প্রতিফলন দৃশ্যমান। বাঙালি জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে মুক্তিযুদ্ধের ভ‚মিকা অপরিসীম। আমাদের জীবনে ও সাহিত্যে মুক্তিযুদ্ধের অবদানকে নতুন করে মূল্যায়ন করা প্রয়োজন। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পটভ‚মিতে রচিত হয়েছে উল্লেখযোগ্য ছোটগল্প। সব ছোটগল্প শিল্পোত্তীণর্ না হলেও কোনো কোনো ছোটগল্প অনুপম শিল্পকমের্ পরিণত হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গেও মুক্তিযুদ্ধকে নিয়ে কিছু ছোটগল্প লেখা হয়েছে কিন্তু আমাদের আলোচ্য বিষয় বাংলাদেশের স্বাধীনতা-উত্তর ছোটগল্প নিয়ে।

মুুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে ১৯৭১ সালে আবদুল গাফফার চৌধুরীর সম্পাদনায় প্রথম মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক গল্পসংকলন বাংলাদেশ কথা কয় কলকাতা থেকে প্রকাশিত হয়। গ্রন্থটি সম্পকের্ সস্পাদকের মন্তব্যটি স্মরণযোগ্য: ‘‘ভাষা আন্দোলন থেকে ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের সময় পযর্ন্ত বাংলাদেশের সাহিত্য নানা মোড় ফিরেছে, সমৃদ্ধ হয়েছে, জনমানসের প্রতিরোধ চেতনাকে বিস্তারলাভে আরও সাহায্য করেছে। বতর্মানে জাতীয় মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের গল্প ও কবিতার ভ‚মিকা তাই গৌণ নয়। বাংলাদেশ কথা কয় গ্রন্থে সন্নিবেশিত বাংলাদেশের কয়েকজন তরুণ ও প্রবীণ কথাশিল্পীর লেখা গল্পগুলো তাই নিছক যুদ্ধ-সাহিত্য নয়; বরং বাঙালি জাতীয় মানসের বতর্মান বিপ্লবী প্রতিরোধ চেতনার কয়েকটি রূপরেখা।’ এ সংকলনে মোট ষোলটি গল্প স্থান পায়। এগুলো হলো- বিপ্রদাশ বড়–য়ার সাদা কফিন, নিমের্লন্দু গুণের শেষ যাত্রা নয়, আবদুল হাফিজের লাল পল্টন, সুব্রত বড়–য়ার বুলি তোমাকে লিখছি, ফজলুল হকের চরিত্র, আসফ-উজ-জামানের রক্ত প্রজন্ম, বুলবন ওসমানের সোলেমান ভাই, কামাল মাহবুবের নীল নকশা, অনু ইসলামের শব্দতাড়িত, আসাদ চৌধুরীর কমলা রঙের রোদ, সত্যেন সেনের পরীবানুর কাহিনী, ইলিয়াস আহমদের অন্যের ডায়েরি থেকে, জহির রায়হানের সময়ের প্রয়োজনে, কায়েস আহমেদের শেষ বাজি, শওকত ওসমানের আলোক-অন্বেষা এবং আবদুল গাফফার চৌধুরীর রোদের অন্ধকারে বৃষ্টি। এসব গল্পে মুক্তিযুদ্ধের তাৎক্ষণিক অভিজ্ঞতা ও প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত হয়েছে। প্রায় বারো বছর পর প্রকাশিত হয় বাংলাদেশের গল্পকারদের লেখা মুক্তিযুদ্ধের আরও দুটি গল্পসংকলন। সেগুলো হলোÑ আবুল হাসনাত সম্পাদিত মুক্তিযুদ্ধের গল্প (১৯৮৩) এবং হারুণ হাবীব সম্পাদিত মুক্তিযুদ্ধ : নিবাির্চত গল্প (১৯৮৫)। মুক্তিযুদ্ধের গল্পগ্রন্থে সংকলিত গল্পগুলো হলোÑ শওকত ওসমানের দুই ব্রিগেডিয়ার, সত্যেন সেনের পরীবানুর কাহিনী, আবু জাফর শামসুদ্দীনের কলিমদ্দি দফাদার, আলাউদ্দিন আল আজাদের রূপান্তর, জহির রায়হানের সময়ের প্রয়োজনে, আবদুল গাফফার চৌধুরীর কেয়া, আমি এবং জামার্ন মেজর, সৈয়দ শামসুল হকের কথোপকথন : তরুণ দম্পতির, শওকত আলীর কোথায় আমার ভালোবাসা, বোরহানউদ্দিন খান জাহাঙ্গীরের ঘরে ফেরা, সুচরিত চৌধুরীর নিঃসঙ্গ নিরাশ্রিত, রাবেয়া খাতুনের যে ভুলে যায়, হাসান আজিজুল হকের ঘর গেরস্থি, রাহাত খানের মধ্যিখানে চর, মাহমুদুল হকের কালো মাফলার, জাহানার ইমামের উপলব্ধি, আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের অপঘাত, হুমায়ূন আহমেদের শ্যামল ছায়া, রশীদ হায়দারের এ কোন ঠিকানা, সেলিনা হোসেনের ভিটেমাটি, কায়েস আহমেদের আসন্ন, রবিউল হুসাইনের মাটির মেডেল, বিপ্রদাশ বড়–য়ার সাদা কফিন, তাপস মজুমদারের মাটি, সিরাজুল ইসলামের যাত্রার নায়ক, আহমদ বশীরের অন্য পটভ‚মি, রিজিয়া রহমানের ইজ্জত, ইমদাদুল হক মিলনের প্রস্তুতি পবর্ ও মঈনুল আহসান সাবেরের কবেজ লেঠেল। মুক্তিযুদ্ধ : নিবাির্চত গল্পগ্রন্থে সংকলিত গল্পগুলোর নাম হলো- জহির রায়হানের কয়েকটি সংলাপ, রাবেয়া খাতুনের প্রথম বধ্যভ‚মি, রনেশ দাশগুপ্তের কঁাথা সেলাই হইছে নিশ্চিত, বোরহানউদ্দিন খান জাহাঙ্গীরের ফেব্রæয়ারি ১৯৬৯, আবদুল হাফিজের লাল পল্টন, রশীদ হায়দারের প্রথম দিনে, আলমগীর সাত্তারের আক্কেল আলী মিয়ার আগরতলা যাত্রা, মাহবুব তালুকদারের শরণাথীর্, আবদুল গাফফার চৌধুরীর রোদের অন্ধকারে বৃষ্টি, শওকত আলীর পুনবার্র বেয়োনেট, মিন্নাত আলীর রক্ত ঝরার দিনে, মাহমুদুল হকের বেওয়ারিশ লাশ, বশীর আল হেলালের শবের নীচে সোনা, শওকত ওসমানের জননী : জন্মভ‚মি, হারুণ হাবীবের গেরিলা, আবুবকর সিদ্দিকের খতম, শাহরিয়ার কবিরের একাত্তরের যিশু, হাসান আজিজুল হকের ফেরা, আলাউদ্দিন আল আজাদের আমাকে একটি ফুল দাও, মঈনুল আহসান সাবেরের চার যুবক, বিপ্রদাশ বড়ুয়ার দুনি চঁাদের পুনরুত্থান, সরদার জয়েনউদ্দিনের যে ঋণে দেউলিয়া, হুমায়ূন আহমেদের নন্দিনী, সৈয়দ ইকবালের একদিন বঙ্গবন্ধু, সেলিনা হোসেনের যুদ্ধ জয়, ইমদাদুল হক মিলনের পরবতীর্ কাল, রাহাত খানের এই বাংলায় এবং সৈয়দ শামসুল হকের ভালো করে কিছু দেখা যাচ্ছে না বলে।

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক গল্পগ্রন্থের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য। মুক্তিযুদ্ধ এবং যুদ্ধ অনুসঙ্গবাহী আমাদের গল্পকাররা অসংখ্য রচনা করেছেন যা শিল্পমানের দিক থেকেও কালোত্তর মহিমায় অভিসিক্ত। বিগত কয়েক দশকে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ছোটগল্প সংকলনের সংখ্যাও কম নয়। যেমনÑ বশীর আল হেলালের প্রথম কৃষ্ণচ‚ড়া ( ১৯৭২) গ্রন্থে সংকলিত হয়েছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক আটটি গল্প। গল্পগুলো হলোÑ দুই কুত্তার গল্প, সাপ, বাংলার প্রাণ, নারকীয় নাটক, জলবন্দী, রণকৌশল, কলি ও অভিধানগুলোকে বুড়িগঙ্গায় ফেলে দাও। আলাউদ্দিন আল আজাদের আমার রক্ত স্বপ্ন আমার (১৯৭৫) গ্রন্থে সংকলিত হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের সাতটি গল্প। সেগুলো হলোÑ বিস্ফোরণ, যুদ্ধ নয়, অচেতনা (পরিবতির্ত নাম আগন্তুক), রূপান্তর, নীরবতা, আমার রক্ত ও রক্ত আমার। হাসান আজিজুল হকের নামহীন গোত্রহীন (১৯৭৫) গ্রন্থের সব গল্পই মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক। এগুলো হলোÑ ভ‚ষণের একদিন, নামহীন গোত্রহীন, কৃষ্ণপক্ষের দিন, ঘর গেরস্থি, কেউ আসেনি ও ফেরা। আবু জাফর শামসুদ্দীনের রাজেন ঠাকুরের তীথর্যাত্রা (১৯৭৭) গল্পগ্রন্থে মুক্তিযুদ্ধের গল্প আছে চারটি। এগুলো হলোÑ চঁাদমারি, মাটি, প্রতিশোধ ও চার দেয়াল। তঁার ল্যাংড়ী (১৯৮৪) গল্পসংকলনে মুক্তিযুদ্ধের বিষয় এসেছে কুলমুুদ্দি দফাদার, ল্যাংড়ী, উস্টানি, গোশত ইত্যাদি গল্পে। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক গল্প সংকলিত হয়েছে এমন অন্যান্য গল্পগ্রন্থের মধ্যে শওকত আলীর লেলিহান সাধ (১৯৭৭), সাদেকা সফিউল্লাহর যুদ্ধ অবশেষে (১৯৮০), শওকত ওসমানের জন্ম যদি তব বঙ্গে (১৯৮৪), বিপ্রদাশ বড়–য়ার সাদা কফিন (১৯৮৪), যুদ্ধ জয়ের গল্প (১৯৮৫) ও মুক্তিযোদ্ধারা (১৯৯১), হারুণ হাবীরের লাল শাটর্ ও পিতৃপুরুষ (১৯৮৫), বিদ্রোহী ও আপন পদাবলি (১৯৮৫) ও গল্পসপ্তম (১৯৯৭), জুবাইদা গুলশান আরার বাতাসে বারুদ-রক্তে নিরুদ্ধ উল্লাস (১৯৮৬), খালেদা সালাউদ্দিনের যখন রুদ্ধশ্বাস (১৯৮৬), এহসান চৌধুরীর একাত্তরের গল্প (১৯৮৬), সৈয়দ ইকবালের একদিন বঙ্গবন্ধু ও অন্যান্য গল্প (১৯৮৬), রশীদ হায়দারের তখন (১৯৭৭), আবুবকর সিদ্দিকের মরে বঁাচার স্বাধীনতা (১৯৮৭), রাবেয়া খাতুনের মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী (১৯৮৬), মকবুলা মনজুরের মুক্তিযুদ্ধের গল্প (১৯৯১), কাজী জাকির হাসানের যুদ্ধের গল্প (১৯৯১), সৈয়দ শামসুল হকের জলেশ্বরীর গল্পগুলো (১৯৯০) ও প্রাচীন বংশের নিঃস্ব সন্তান (১৯৮১), সেলিনা হোসেনের পরজন্ম (১৯৮৬), বোরহানউদ্দিন খান জাহাঙ্গীরের মুÐহীন মহারাজ (১৯৭৪) ইত্যাদি। বিষয় ও ভাবের দিক থেকে বাংলাদেশের ছোটগল্পে যেমন মুক্তিযুদ্ধের প্রতিফলন ঘটেছে. তেমনি ভাষা ব্যবহার ও অলংকার সৃজনেও মুক্তিযুদ্ধের অনুষঙ্গ উপস্থিত। ছোটগল্পে মুক্তিযুদ্ধের প্রতিফলন ঘটেছে বিভিন্নভাবে। কখনো সরাসরি যুদ্ধকে অবলম্বন করে ছোটগল্প রচিত হয়েছে, কখনো-বা ছোটগল্পের মৌলভাব সৃষ্টি হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সমৃদ্ধ হয়ে। কোনো কোনো ছোটগল্পে স্বাধীনতার সপক্ষীয়দের প্রতি শ্রদ্ধা-ভালোবাসা এবং বিপক্ষীয়দের প্রাত ঘৃণাবোধ উচ্চারিত হয়েছে। আবার কোথায়ও-বা ছোটগল্পের বহিরঙ্গে লেগেছে মুক্তিযুদ্ধের স্পশর্। মুক্তিযুদ্ধের উপাদানপুঞ্জ ব্যবহার করে বাংলাদেশের প্রায় সব গল্পকারই রচনা করেছেন ছোটগল্প।’(মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আমাদের সাহিত্য/ রফিকউল্লাহ খান/ কালি ও কলম, ঢাকা)।

মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ছোটগল্পগুলোতে মুক্তিযুদ্ধের নয় মাসের বহুমাত্রিক চিত্র পাওয়া যায়। একাত্তরের মাচের্র পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নিমর্ম অত্যাচার, নৃশংস গণহত্যা, ধষর্ণ, ব্যাপক ধ্বংসলীলা, হাজার হাজার মানুষের দেশত্যাগ (যুদ্ধের কারণে), দেশের মানুষের নিরাপত্তাহীনতা, নানা মানবীয় সংকট ইত্যাদি অনুসঙ্গ ছোটগল্পের উপাদান হয়ে এসেছে। এসব ঘটনা মুক্তিযুদ্ধের গল্পগুলোতে নানাভাবে প্রতিফলিত হয়েছে বিচিত্র আঙ্গিকে। একাত্তরের মাচের্র রাজনৈতিক অবস্থা নিয়ে রচিত হয়েছে আলাউদ্দিন আল আজাদের বিস্ফোরণ গল্পটি। সত্তরের গণ পরিষদের সাধারণ নিবার্চনে বঙ্গবন্ধু ও তার দল সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন লাভ করলেও পাকিস্তান ক্ষমতাসীন দল ক্ষমতা হস্তান্তর না করার হীনষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। এই পরিস্থিতিতে লাখো জনতার মনে যে ক্ষোভ জন্মে তা এক সময় জনতার বিস্ফোরণে রূপ নেয়। এগল্পে সেই একাত্তরের রাজনৈতিক অবস্থার বাস্তবচিত্র উদ্ভাসিত হয়েছে। শওকত ওসমানের দুই ব্রিগেডিয়ার গল্পে ১৯৭১ সালের ২৫ মাচের্র কালোরাত্রির বিভীষিকাময় ঘটনার বণর্না পাওয়া যায়। এই গল্পে ফায়ার ব্রিগেডের অফিসার সয়ীদ ভুঁইয়া সদলবলে নিহত হন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর লাগানো আগুন নেভাতে গিয়ে। তার আলোক-অন্বেষা গল্পেও এদেশের আপামর সাধারণ মানুষের ওপর দখলদার বাহিনীর নিমর্ম ববর্রতার চিত্র স্থান পেয়েছে। বুলবন ওসমানের সে এবং সেদিন গল্পে কলকাতায় এক শরণাথীর্ মায়ের মুখ থেকে জানা যায় ২৫ মাচর্-পরবতীর্ দিনগুলোতে হানাদার কবলিত বাংলাদেশে পাকিস্তানি সেনাদের অত্যাচার, মুক্তিবাহিনীর প্রতিরোধ সংগ্রাম এবং নিঃস্ব মানুষের দেশত্যাগের ঘটনা। আবদুল গাফফার চৌধুরীর কেয়া, অমি এবং জামার্ন মেজর গল্পটি প্রতীকী তাৎপযের্ ব্যঞ্জনাময়। বাস্তব পরিস্থিতি এবং সংলাপের সমান্তরাল বিন্যাসে যুদ্ধকালীন তীব্র উত্তেজনা গল্পের পটভ‚মি বিস্তৃত হয়েছে। যুদ্ধরত সময়ের সংরক্ত আবেগ ও সচেতন অনুভ‚তির প্রকাশরূপে গল্পটি অতুলনীয়। মাচের্র কালোরাতে হানাদার বাহিনী ও অবরুদ্ধ ঢাকার উদ্বেগ-উৎকণ্ঠাময় ভয়াল চিত্র পাওয়া যায় রশীদ হায়দারের প্রথম দিনে গল্পে। অবরুদ্ধ শহরের সেই চিত্র পাওয়া যায় মাহমুদুল হকের কালো মাফলার গল্পে। সৈয়দ শামসুল হকের কথোপকথন : তরুণ দম্পতির গল্পের উপজীব্য বিষয় অবরুদ সময়ের বিপন্ন অস্থিরতা। এই গল্পে অবরুদ্ধ নগরীতে সদ্য বিবাহিত করুণ দম্পতির অসহায়তা, উদ্বেগ ও শঙ্কা ফুটে উঠেছে। বিপ্রদাশ বড়–য়ার সাদা কফিন গল্পে পাকিস্তান বাহিনীর নিমর্ম অত্যাচারের মধ্যে একজন মায়ের প্রাণ বঁাচানোর দুবার্র প্রচেষ্টার চিত্র পাওয়া যায়। রশীদ হায়দারের প্রথম দিনে গল্পে পাওয়া যায় বধ্যভ‚মিতে পরিণত হওয়া অবরুদ্ধ ঢাকা শহরের ভীতসন্ত্রস্ত লোকালয়ের ছবি। আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের রেইনকোট গল্পে দেখা যায় রসায়নের প্রভাষক ভীরু নুরুল হুদা মুক্তিযোদ্ধা না হলেও তাকে মুক্তিযোদ্ধা মনে করে তার ওপর খানসেনারা নিযার্তন চালায়। মুক্তিযোদ্ধা শ্যালকের রেইনকোট পরে নুরুল হুদার মধ্যে সঞ্চারিত হয় দেশপ্রেম। আনন্দের সঙ্গে সে সব অত্যাচার গ্রহণ করে। পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর নিমর্মতার চিত্র পাওয়া যায় শওকত ওসমানের জন্ম যদি তব বঙ্গে গল্পগ্রন্থের নামগল্পে। এখানে একাত্তরের ববর্রতা ও উদ্বেগময় পরিস্থিতি বণির্ত হয়েছে এক বৃদ্ধের জবানিতে। বশীর আল হেলালের বাংলার প্রাণ গল্পে পাক হানাদার বাহিনীকে দেখা যায় জল্লাদের ভ‚মিকায়। তার নারকীয় নাটক গল্পে হানাদার বাহিনীর অসহায় মানুষের ঘর-বাড়ি লুটপাট ও নারী লোলুপতার নারকীয় চিত্র ফুটে উঠেছে। মিন্নাত আলীর বারাঙ্গনা স্ত্রী গল্পে স্থান পেয়েছে হানাদার কবলিত মহকুমা শহরের শিক্ষিত বাঙালি নারী ধষের্ণর ঘটনা। আলাউদ্দিন আল আজাদের যুদ্ধ নয় গল্পে এক কুকুরের জবানিতে বণির্ত হয়েছে একাত্তরের ভয়াল কালোরাতের নৃশংসতার চিত্র। বশীর আল হেলালের সাপ গল্পে ব্যক্ত হয়েছে পাকিস্তানি সেনাদের অত্যাচার ও সাধারণ মানুষের প্রতিরোধস্পৃহা। এখানে ইয়াহিয়া খানকে দেখানো হয়েছে সাপের প্রতীক হিসেবে। হাসান আজিজুল হকের ভ‚ষণের একদিন গল্পে ফুটে উঠেছে একাত্তরের এপ্রিলে হানাদার বাহিনীর গণহত্যার নিমর্ম চিত্র। তার কৃষ্ণপক্ষের দিন গল্পে বণির্ত হয়েছে পঁাচজন তরুণ মুক্তিযোদ্ধার যুদ্ধকালীন অভিজ্ঞতা। এখানে পাকিস্তানি সৈন্য কতৃর্ক গ্রামাঞ্চলে অগ্নিসংযোগ, হত্যা, ধষর্ণ, ইত্যাদির নিমর্ম চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। শওকত আলীর কোথায় আমার ভালোবাসা গল্পে প্রেমিক মুক্তিযোদ্ধার অপেক্ষায় প্রেমিকার অব্যক্ত বেদনার কথা প্রকাশ ঘটেছে। জহির রায়হানের সময়ের প্রয়োজনে গল্পে হানাদারের নিমর্ম ববর্রতার পাশাপাশি আছে বাঙালি যোদ্ধাদের রুখে দঁাড়ানোর অঙ্গীকারের ছবি। যুদ্ধকালীন গ্রামবাংলার চিত্র ধরা পড়েছে আবু জাফর শামসুদ্দীনের কলিমদ্দি দফাদার গল্পে। মঈনুল আহসান সাবেরের কবেজ লেঠেল গল্পেও গ্রামীণ জীবনের ছবি পাওয়া যায়। সুচরিত চৌধুরীর নিঃসঙ্গ নিরাশ্রিত গল্পে পাক হানাদার বাহিনীর হাতে মা-বাপ হারানো এক নিরাশ্রিত ছেলে আশ্রয় পায় এক দাগী আসামির কাছে, যে একাত্তরে হয়ে যায় এক অদম্য মুক্তিযোদ্ধা। তার আলো নিরুত্তর গল্পটি পাকবাহিনী ও তার দোসরদের হত্যাযজ্ঞ ও নিযার্তনের পটভ‚মিতে লেখা হয়েছে। শাহরিয়ার কবিরের একাত্তরের যিশু গল্পে মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর নিষ্ঠুর নিযার্তনের চিত্র ফুটে উঠেছে।

মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবহুল দিনগুলোতে দখলদার হানাদার বাহিনী ও তাদের এদেশীয় দোসরদের অত্যাচারের চিত্র ফুটে উঠেছে কিছু গল্পে। ধমর্ রক্ষার নাম করে তারা চালায় গণহত্যা। তাদের প্রতিরোধ করার জন্য বাঙালি জাতি ঝঁাপিয়ে পড়ে। অসংখ্য বাঙালি সহায়-সম্বলহীন হয়ে পড়ে হানাদারদের লুণ্ঠন ও অত্যাচারে। কিছু গল্পে হানাদার ও রাজাকার বাহিনীর ঘৃণ্য তৎপরতা প্রতিফলিত হয়েছে। শওকত ওসমানের দ্বিতীয় অভিসার (এবং তিন মিজার্, ১৯৮৬) রাজাকারের সহযোগিতায় হানাদারদের নারীলিপ্সার চিত্র পাওয়া যায়। তার একই রকম আরেকটি গল্প হচ্ছে জননী : জন্মভ‚মি (জন্ম যদি তব বঙ্গে, ১৯৮৪)। বশীর আল হেলালের দুই কুত্তার গল্প (প্রথম কৃষ্ণচ‚ড়া, (১৯৭২) গল্পে হানাদার ও তাদের দোসরদের প্রতীকীভাবে তুলে ধরা হয়েছে। স্বাধীনতাবিরোধী দালালদের মানবতারবিরোধী ভ‚মিকার কথা তুলে ধরেছেন আবদুল গাফফার চৌধুরীর রোদের অন্ধকারে বৃষ্টি (বাংলাদেশ কথা কয়) গল্পে। একই ধরনের আরেকটি গল্প বোরহানউদ্দিন খান জাহাঙ্গীরের আমার আল্লারে। সেলিনা হোসেনের আমিনা ও মদিনার গল্প যুদ্ধে পাকসেনাদের সহায়তাকারী রাজাকারদের পরিবারের নারী সদস্যদের যে ইজ্জত লুণ্ঠিত হয়েছিল তারই প্রতিচিত্র ধরা পড়েছে। মসজিদের মুয়াজ্জিন আল আমিনের দুই মেয়েকে হানাদাররা ক্যাম্পে তুলে নিয়ে যায় এবং আদিম উল্লাসে মেতে ওঠে। পাকবাহিনীর ববর্রতা ও নিষ্ঠুরতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদী চেতনায় অনন্য হুমায়ূন আহমেদের ঊনিশ’শ একাত্তর গল্পটি। এই গল্পে পাকিস্তানি একজন মেজর সদলবলে আজিজ মাস্টারকে জনগণের সামনে নগ্ন করে অপমানিত করে। কিন্তু মৃত্যুকে উপেক্ষা করে মাস্টার এই অপমানের বদলা নেয় মেজরের শরীরে থু থু ছিটিয়ে। হারুণ হাবীবের গেরিলা গল্পে আমরা পাই পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধা গেরিলাদের সংগ্রামের চিত্র। সত্যেন সেনের পরীবানু গল্পের পরীবানু দেশপ্রেমের মহিমায় উজ্জ্বল এক নারী চরিত্র। এই গল্পে পরীবানু তার নারীত্বকে বিসজর্ন দেয় মুক্তিযুদ্ধের স্বাথের্। রাজিয়া খানের ইজ্জত গল্পটি এর বিপরীতধমীর্। ইজ্জত রক্ষার জন্য নায়িকা মৃত্যুকে বেছে নেয়। আলাউদ্দিন আল আজাদের নীরবতা গল্পে বাঙালি রমণীর সাহসিকতার পরিচয় পাওয়া যায়। রাবেয়া খাতুনের একাত্তরের ভুলে যাওয়া একটি দিন গল্পে বিপদ মাথায় রেখে খানসেনাদের হাত থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের রক্ষার ক্ষেত্রে নারীকে এগিয়ে আসতে দেখা যায়। গৃহকমীর্ মরিয়ম বেগমের উপস্থিত বুদ্ধির কারণে ঘরে আশ্রয় নেয়া দুজন মুক্তিযোদ্ধা খানসেনাদের হাত থেকে রক্ষা পায়। মিন্নাত আলীর আমি দালাল বলছি (আমি দালাল বলছি, ১৯৭২) গ্রন্থের নামগল্পে একজন দালালের জবানিতে তুলে ধরা হয়েছে মুক্তিযুদ্ধে দেশত্যাগী শরণাথীর্ এবং দেশে অবস্থানরতদের মানসিকতাকে। আলাউদ্দিন আল আজাদের আমাকে একটি ফুল দাও (জীবন জমিন, ১৯৮৮) এমনি একটি গল্প।

যুদ্ধোত্তর জাতীয় পটভ‚মির অসংগতি, মুক্তিযোদ্ধার বিবণর্ পরিণাম, হানাদার বাহিনীর সহযোগী হিসেবে রাজাকার-আলবদরদের আথর্-সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে প্রতিষ্ঠা, মুক্তিযোদ্ধার বিলুপ্ত অস্তিত্বের সাহসী পুনরুত্থান প্রভৃতি বিশ্বস্তভাবে রূপায়িত হয়েছে সেলিনা হোসেনের ভিটেমাটি গল্পে। এ গল্পে হাফেজ মিয়া মুক্তিযুদ্ধে পুত্রহারা শোকগ্রস্ত পিতাদের প্রতিনিধি। পরজন্ম গল্পে ফ্ল্যাশব্যাক পদ্ধতিতে বণির্ত হয়েছে মুক্তিযুদ্ধ ও যুদ্ধে নিহত চার মুক্তিযোদ্ধা সন্তানের বীরত্বগাথা। শকুনের ছায়া (খোল করতাল, ১৯৮২) পাকিস্তান হানাদারের দোসর রহমত আলীর সংহারের গল্প। আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের অপঘাত গল্পে যুদ্ধকালীন জীবনের তীব্র আতির্ ও যন্ত্রণা বণির্ত হয়েছে। এহসান চৌধুরীর পরাজিত পদক্ষেপ শত্রæ-মিত্র ভেদে বিপন্ন মানবতাকে সমানভাবে দেখার অভিব্যক্তি ফুটে উঠেছে। আবুবকর সিদ্দিকের রক্ত গজর্ন গল্পে একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধার দৃষ্টিতে দেখা হয়েছে যুদ্ধ-পরবতীর্ সময়ের বাস্তবতাকে, যেখানে সাটিির্ফকেটধারী ভÐ মুক্তিযোদ্ধারা রাজনৈতিক ক্ষমতা ও প্রতিপত্তির অধিকারী। রাহাত খানের মধ্যিখানে চর গল্পে বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন ছাত্র গভীর আবেগে মুক্তি সংগ্রামে অংশ নেয়। কিন্তু যুদ্ধ শেষে তারা চলে যায় অস্বাভাবিক জীবনের পথে। তার এই বাংলায় গল্পে চিত্রিত হয়েছে যুদ্ধে নারী ধষের্ণর পাশবিকতা। কলেজ পড়–য়া রোজিনা মুক্তিযুদ্ধকে সমথর্ন করায় রাজাকাররা তাকে তুলে দেয় পাক হায়েনাদের হাতে। তার সম্ভ্রম লুট করে হায়েনারা তাকে হত্যা করে। গল্পকার দেখিয়েছেন নারীর ইজ্জতের বিনিময়ে স্বাধীনতা এলেও ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্টের পর মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধকে নস্যাৎ করা হয়। আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের খেঁায়ারি গল্পে স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংকট, ধমার্ন্ধগোষ্ঠীর তাÐব ও মূল্যবোধের অবক্ষয়ের প্রেক্ষাপটে ওই সময়কে দেখা হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্নভঙ্গের অধ্যায় হিসেবে। তার মিলির হাতে স্টেনগান গল্পে সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে অথৈর্নতিক সংকট, বিশৃঙ্খলা, হানাহানি, লুটপাট ইত্যাদির পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়েছে আব্বাস পাগলার চোখ দিয়ে। গল্পে মিলি হয়ে উঠেছে নতুন সংগ্রাম ও মুক্তিচেতনায় উদ্বুদ্ধ মানুষের প্রতীক। কায়েস আহমেদের আসন্ন যুদ্ধেও বস্তুনিষ্ঠ গল্পরূপ। রবিউল হাসানের মাটির মেডেল এবং বিপ্রদাশ বড়–য়ার সাদা কফিন যুদ্ধকালীন সংরক্ত অনুভবের বাক্সময় প্রকাশ। তাপস মজুমদারের মাটি, সিরাজুল ইসলামের যাত্রার নায়ক, আহমদ বশীরের অন্য পটভূমি এবং ইমদাদুল হক মিলনের প্রস্তুতিপবর্ গল্পে অভিজ্ঞতার রূপায়ণই মুখ্য। তবে আহমদ বশীরের গল্পের উপজীব্য মুক্তিযুদ্ধ নয়, যুদ্ধ অপেক্ষা ভয়াবহ জীবনযুদ্ধের অনিশ্চিত সম্মুখভ‚মি। মাহবুব তালুকদারের শরণাথর্র্ী দেশত্যাগী তারুণ্যের বিভ্রম ও আত্মজয়ের শব্দরূপ।’ (মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আমাদের সাহিত্য/ রফিকউল্লাহ খান/ কালি ও কলম, ঢাকা)।

হাসান আজিজুল হক মুক্তিযুদ্ধকে অনুষঙ্গ করে রচনা করেন উল্লেখযোগ্য গল্প। কোনো কোনো গল্পে মুক্তিযুদ্ধকে বিষয় করে নতুন কিছু প্রত্যাশার জন্ম দেয়। তার নামহীন গোত্রহীন গল্পগ্রন্থের আটক, ঘর গেরস্থি, কেউ আসেনি ও ফেরা-এধরনের গল্প মুক্তিযুদ্ধের শেষ পবের্র ঘটনাকে নিয়ে রচিত আটক গল্পে ভারতীয় মিত্রবাহিনী ও বাংলাদেশের যৌথবাহিনীর আক্রমণে পযুর্দস্ত পাকবাহিনীর নাজুক অবস্থা দেখানো হয়েছে। হাসানের ঘর গেরস্থি গল্পের রামশরণ মুক্তিযুদ্ধের শুরুতে ধমার্ন্ধগোষ্ঠীর অত্যাচারে ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদ হয়। আশ্রয় নেয় প্রতিবেশী দেশ ভারতে। দেশ স্বাধীন হলে অনেক আশা ভরসা নিয়ে বাংলাদেশে ফিরে আসে। কিন্তু তাদের স্বপ্নের সেই আশা পূরণ হয় না। কেউ আসেনি গল্পেও স্বাধীনতার প্রাপ্তি নিয়ে রয়েছে নানা প্রশ্ন। যুদ্ধ ফেরত গফুর যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা আসফ আলীকে হাসপাতালে দেখে আহত হন। তার মনে প্রশ্ন জাগে, মুক্তিযুদ্ধ করে কী পেল আসফ? ফেরা গল্পে লেখক স্বাধীনতার প্রকৃত উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। সরকার অস্ত্র জমা দেয়ার ঘোষণা দিলে সে অস্ত্র জমা না দিয়ে ডোবার মধ্যে লুকিয়ে রাখে। কারণ আবার হয়তো অস্ত্র দরকার হতে পারে। মাহবুবুল হক মুক্তিযুদ্ধের গল্প সম্পকের্ মন্তব্য করেন এভাবে- ‘হানাদারদের অত্যাচার, লুণ্ঠন, ধষর্ণ, অগ্নিসংযোগের বিবরণের মধ্য দিয়ে একদিকে চরম মানবিক বিপযের্য়র ছবি আমরা পাই, অন্যদিকে মুক্তিযোদ্ধাদের অঙ্গীকার ও আত্মত্যাগ, বাঙালির রুখে দঁাড়ানোর দৃঢ় মনোভাব রূপায়ণের মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের সবর্জনীন চেতনার অভিপ্রকাশ ঘটে। টুকরো-টুকরো ঘটনার মধ্যদিয়ে পাঠকের অনুভবের মধ্যে সঞ্চারিত হয় মুক্তিযুদ্ধের উত্তেজনা ও উত্তাপ। ’

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<25768 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1