স্থিরচিত্র চোখের
প্রথম যখন দেখেছিলাম তোমায়
পড়ে না চোখের পাতা আমারÑ অনড়;
তাকিয়ে থাকতে থাকতেই অপলকÑ
নামে রাত ভোর দিনে গড়ায় লাগামহীন ঘোড়া;
চোখ ছুটেছুটে যায় দূর-দূর স্বপ্ন-ঘোর আরও দূরে।
আমারটা যদি চোখ হয়, তোমার কি তবে অঁাখি?
কতকাল পর বছর তিনেক বাদে তিন যুগ
তেত্রিশ বছর
অঁাখিপাত ঘটে এক বণর্হীন চোখে;
কপালে রোদ-চশমা, তাই দেখা যায় না
সময়ের ভঁাজÑ
হাসিবণর্ চোখ মেলে আলতো শুধোলে,
কেমন আছেন পাহাড়-ডাঙ্গার পুরুষনায়ক?
তাজমহলের যমুনা পেরিয়ে আমাদের নাও
সেই কবে ভিড়েছে নগর-উপক‚লে!
নড়ে ওঠে আমার নীরব চোখ,
হয়তো বা পিঁপড়ে-কামড় পাপড়িতে,
একেই কি বলে পলক পড়ার মুহূতর্-প্রলয়?
বুকে নামে ঢল-ডুবসঁাতার পঙ্খিরাজের;
আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণে জাগে স্বপ্নের মায়ামহল।
আবার তোমাকে দেখি মনের মন্দিরে
তিলোত্তমা উবর্শীর রূপোস মায়ায়।
মন মনের মতন থাকে স্থিরÑ জীবন পাল্টায়Ñ
চোখ সেও? ছানিবদ্ধ দ্যুতিহীন!
অন্তজের্্যাতিকে নিবে ছিনিয়ে? কার সাধ্য?
অহনির্শ দেখি যে তোমায় হৃদয়ের বোধে,
তন্ত্রীতে তোমার ছায়াপাত।
তুমি কি কখনো টের পাও নিভৃত মন্ত্র আমার
উচ্চারিত এই ঠেঁাটে
যে ঠেঁাট রাঙাতে চায় তোমাকেই?
হৃদয়ের অতলে যে স্পশর্ তার অনুভ‚তি
তুমিও কি অনুভব কর?
তোমাকেই প্রিয়
প্রতিটি মুহূতের্ তোমাকেই চাই
পলকে পলকে তোমাকে প্রত্যাশা।
আড়াল চোখেও অস্তিত্ব তোমার;
চোখের পরশে তোমারই টান।
ঘোর অতি-ঘোর তুমিই সমুবে
নেশার আলোয় অপরূপা তুমি
রাতের গভীরে নিশিপাখি ডাক,
তোমার শরীরে মৃগমায়া-ঘ্রাণ।
শিল্পিত আঙুলে পদ্মকলি ছেঁায়া,
পল্লব অঁাখিতে নক্ষত্র-ঝলক।
মন ঘোর এই মগন বেলায়
ফিরে ফিরে চাই তোমাকেই প্রিয়।
ভোর আসে নাই
আমার আকাশে এখনো তো আসে নাই ভোর
খুলে নাই রাতের কালো নেকাব,
রাতজাগানিয়া পাখি ডাকে নাই
দেয় নাই ভোরের খবর।
তার সরব কাকলি কলকল পাশের উঠোনে,
পড়শিদের সাথে যত আলাপ
কানাকানি হাসাহাসি।
তার কলস্বর উড়াল দেয় সুদূর প্রবাসেও।
ছেঁড়া ন্যাকড়ার মতো নিস্তরঙ্গ তমসার
সখাপ্রিয় পাখি ফেলে যায় শুষ্ক খড়কুটো।
আমার এ আঙিনায় থমথমে
নিবিড় অঁাধার।