শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
জেনে নিন

যেসব দেশে সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশি প্রবাসী

বৈধ পথে জনশক্তি রপ্তানি
আইন ও বিচার ডেস্ক
  ১৫ অক্টোবর ২০১৯, ০০:০০

প্রতিবছরই বাংলাদেশিরা কাজ নিয়ে পাড়ি জমাচ্ছেন বিশ্বের কোনো না কোনো দেশে। বৈধপথে বিদেশে যাওয়া এসব প্রবাসীর হিসাব রাখে সরকারের জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ বু্যরো বা বিএমইটি।

বাংলাদেশের ঠিক কতজন নাগরিক প্রবাসে আছেন তার সঠিক পরিসংখ্যান নেই। বিএমইটির হিসাবে ১৯৭৬ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ১ কোটি ২৬ লাখ মানুষ কর্মসংস্থানের জন্য দেশের বাইরে পাড়ি জমিয়েছেন। তবে কতজন ফিরে এসেছেন সেই পরিসংখ্যান নেই সেখানে।

দেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি প্রবাসীদের আয়। এর কারণে বাংলাদেশের রিজার্ভের অঙ্কটাও এখন বেশ শক্তিশালী। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ১৯৭৬ সালে মাত্র ২৪ লাখ ডলার বা প্রায় ৩৬ কোটি টাকার রেমিট্যান্স এসেছিল দেশে। সেই তুলনায় রেমিট্যান্স অনেক বেড়েছে। শুধু গত বছরই এসেছে ১৫৫৫ কোটি ডলার বা ১ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত ২০ হাজার ৩৭৪ কোটি ডলার বা ১৪ লাখ ৬৭ হাজার কোটি টাকা পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা।

বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি প্রবাসীর গন্তব্য সৌদি আরব, যেখানে এখন পর্যন্ত ৩৮ লাখ ৮৪ হাজার বাংলাদেশি পাড়ি জমিয়েছেন। ১৯৭৬ সালে মাত্র ২১৭ জন দিয়ে এই শ্রমবাজারের যাত্রা শুরু। ২০১৭ সালে সর্বোচ্চ ৫ লাখ ৫১ হাজার কাজ নিয়ে গেছেন মধ্যপ্রাচ্যের দেশটিতে। আর চলতি আগস্ট পর্যন্ত পাড়ি জমিয়েছেন ২ লাখ ৩৪ হাজার জন।

শুরুর দিকে সংযুক্ত আরব আমিরাতই ছিল বাংলাদেশের বড় বাজার। ২০০৮ সালে দেশটিতে একবছরে সবচেয়ে বেশি ৪ লাখ ১৯ হাজার জন বাংলাদেশি গেছেন। তবে ২০১৩ সালের পর থেকে এই বাজারটিতে মন্দা চলছে। গতবছর মাত্র ৩ হাজার ২৩৫ জন দেশটিতে পাড়ি জমানোর সুযোগ পেয়েছেন। ১৯৭৬ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ২৩ লাখ ৭০ হাজার বাংলাদেশির গন্তব্য ছিল আরব আমিরাত, যা মোট জনশক্তি রপ্তানির প্রায় ১৯ ভাগ।

প্রবাসীদের গন্তব্যের দিক থেকে তৃতীয় অবস্থানে আছে পারস্য উপসাগরের দেশ ওমান। ১৪ লাখ ৭৭ হাজার বাংলাদেশি কাজ নিয়ে গেছেন সেখানে। তবে গত ৩ বছর ধরে এই বাজারটিতেও প্রবাসী যাওয়ার সংখ্যা কমছে। ২০১৬ সালে যেখানে ১ লাখ ৮৮ হাজার জন ওমানে পাড়ি জমিয়েছেন, গেল বছর তা নেমে এসেছে ৪৭ হাজার ৭৮৭ জনে।

বাংলাদেশিদের কাছে মালয়েশিয়া আকর্ষণীয় হয়ে উঠতে শুরু করে মূলত ১৯৯০ সালের পর থেকে। ২০০৭ সালে সেখানে সবচেয়ে বেশি ২ লাখ ৭৩ হাজার জনের বেশি শ্রমিক কাজের জন্য গেছেন এশিয়ার দেশটিতে। মধ্যে এই প্রবণতা কমলেও সম্প্রতি আবার বেড়েছে। গত বছর দেশটিতে গেছেন ১ লাখ ৭৬ হাজার জন। সব মিলিয়ে মালয়েশিয়ায় বৈধভাবে পাড়ি জমিয়েছেন সাড়ে ১০ লাখের বেশি বাংলাদেশি।

২০০৬ সাল পর্যন্তও কাতারের বাজার বাংলাদেশের শ্রমশক্তি রপ্তানিতে ততটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল না। তবে মধ্যপ্রাচ্যের তেলসমৃদ্ধ এই দেশটিও এখন বিদেশ গমনেচ্ছুদের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে। কাতারের বিশ্বকাপ আয়োজন সেখানে অনেক বাংলাদেশির জন্যই কাজের সুযোগ তৈরি করেছে। এখন পর্যন্ত প্রায় আট লাখ বাংলাদেশি দেশটিতে কাজ নিয়ে গেছেন।

দেশের দক্ষ শ্রমিকদের জন্য পছন্দের এক গন্তব্য সিঙ্গাপুর। এশিয়ার উদীয়মান অর্থনীতির দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৭ লাখ ৬৫ হাজার বাংলাদেশি পা রেখেছেন, যা মোট প্রবাসীর ছয় ভাগের কিছু বেশি। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৬০ হাজার জন গেছেন ২০১৩ সালে।

বাংলাদেশিদের জন্য কুয়েতের মতো গুরুত্বপূর্ণ এক শ্রমবাজার প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল বলা চলে। ২০০৮ থেকে ২০১৩ এই সময়ে মাত্র ৪১৪ জন দেশটিতে পাড়ি জমিয়েছিলেন। ২০১৪ সাল থেকে তা বাড়তে শুরু করলেও গত দুই বছর ধরে আবার পড়তির দিকে। সব মিলিয়ে ৬ লাখ ২৪ হাজার বাংলাদেশি গেছেন কুয়েতে, যা মোট প্রবাসীর প্রায় ৫ ভাগ।

৪ লাখ ১০ হাজার বাংলাদেশির গন্তব্যের দেশ বাহরাইন। ২০১৬ সালে সর্বোচ্চ ৭২ হাজার মানুষ কাজ নিয়ে পাড়ি জমিয়েছেন পারস্য উপসাগরের দ্বীপ রাষ্ট্রটিতে।

ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশি রয়েছে ইটালিতে। ২০০২ সাল থেকে সেখানে পাড়ি জমানোর তথ্য আছে বিএমইটির কাছে। সে অনুযায়ী এখন পর্যন্ত সাড়ে ৫৫ হাজার বাংলাদেশি বৈধ পথে গেছেন পশ্চিম ইউরোপের দেশটিতে।

ডয়েচে ভেলে অবলম্বনে

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<71128 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1