একা একা দুঃসহ প্রসব বেদনা সহ্য করে ফুটফুটে ছেলের জন্ম দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের এক কয়েদি। এ ঘটনায় সমালোচনার ঝড় বইছে। এমনকি ঘটনাটির জেরে জেলখানার নিয়মে পরিবর্তনও এনেছে কর্তৃপক্ষ।
যুক্তরাষ্ট্রের কলারাডো অঙ্গরাজ্যের ডেনভারের একটি জেলখানায় ২০১৮ সালের ৩১ জুলাই এ ঘটনা ঘটে। তবে সম্প্রতি ঘটনাটির ভিডিও প্রকাশ এবং মামলা হওয়ায় নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম গার্ডিয়ান জানায়, সানসেজ নামের সন্তানসম্ভবা ওই নারী জেলখানার হাসপাতালের একটি সেলে ছিলেন। ওই সেলেই কারও সহায়তা ছাড়া সন্তান প্রসব করেন সানসেজ।
সানসেজের আইনজীবীর সরবরাহ করা ভিডিওতে দেখা গেছে, একবার দায়িত্বরতদের কাছে সহায়তা চান সানসেজ। এরপর ব্যথা নিয়ে সানসেজ একটি সরু বিছানায় শুয়ে পড়েন। কর্তৃপক্ষকে জানানোর পাঁচ ঘণ্টা পর ওই সরু বিছানাতে কারও সহায়তা ছাড়াই ছেলের জন্ম দেন সানসেজ। এরপর সেখানে একজন নার্স যান এবং তার ছেলেকে কোলে নেন।
তার রক্তক্ষরণ এবং পানিপ্রবাহের কথা কর্তৃপক্ষকে জানানোর পরও অ্যাম্বুলেন্স না ডাকায় মামলা করেছেন সানসেজ।
গত সপ্তাহে দায়ের করা মামলায় বলা হয়েছে, রক্তক্ষরণের পরও অ্যাম্বুলেন্স না ডেকে জেল কর্তৃপক্ষ 'সহায়তার পরিবর্তে নিষ্ঠুরভাবে সুবিধা খুঁজেছে'। সানসেজের জন্য অ্যাম্বুলেন্স বলাই ছিল, কিন্তু আনুষ্ঠানিকতার দোহাই দিয়ে কর্তৃপক্ষ তা ডাকেনি।
এতে আরও বলা হয়েছে, প্রসবের পর কোনো নার্স সানসেজেরে ছেলেকে বেশ কয়েক মিনিট পরিষ্কার করেননি। এমনকি নাড়ি কাটার মতো কোনো যন্ত্রও তাদের কাছে ছিল না। দমকলকর্মীরা আসার আগে ১৫ মিনিট নাড়ি কাটা হয়নি।
ডেনেভারের শেরিফ বিভাগ থেকে বলা হয়েছে, এখন থেকে সন্তানসম্ভবা কয়েদিদের যে কোনো অবস্থায় প্রয়োজন হলে হাসপাতালে নেয়া হবে। আগে এসব ক্ষেত্রে কয়েদিদের জেলখানার নার্সদের কাছে নেয়া হতো। কিন্তু এখন তাদের হাসপাতালে স্থানান্তরের অনুমতি দেয়া হয়েছে।
এ ঘটনায় সানসেজ কোনো মন্তব্য করেননি। তবে গত বছর ঘটনার পর তিনি একটি টেলিভিশন চ্যানেলকে বলেন, জেলখানায় কয়েদিদের 'আবর্জনার' মতো দেখা হয়।