বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সংশোধন হচ্ছে সালিশ আইন

আইন ও বিচার ডেস্ক
  ৩১ জুলাই ২০১৮, ০০:০০

২০০১ সালে প্রণীত সালিশ আইনের ওপর ৫৩টি সংশোধনীর প্রস্তাব করে একটি খসড়া চ‚ড়ান্ত করেছে আইন কমিশন। আদালতের বাইরে সালিশি কাযর্ক্রমের মাধ্যমে বাণিজ্যিক বিরোধগুলো নি®পত্তি ব্যবস্থা আরও গতিশীল করতে প্রচলিত আইনটি সংশোধন করতে যাচ্ছে সরকার।

প্রস্তাবিত খসড়ায় সালিশি কাযর্ক্রমে সবোর্চ্চ স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিতে সালিশকারীদের ফি, সালিশ ও আদালতের ক্ষেত্র, ট্রাইব্যুনালের আওতা ও নিষ্পত্তির সময়সীমা সুস্পষ্ট করা হয়েছে। পাশাপাশি সালিশ দায়েরের পর ৩৬৫ দিনের মধ্যে তা নিষ্পত্তি করতে হবে। এ ছাড়া সংশোধিত আইনে ‘আদালত’, ‘আপিল বিভাগ’, ‘সালিশ’, ‘সালিশি ট্রাইব্যুনাল’সহ অন্যান্য বিষয়ে সুস্পষ্ট সংজ্ঞা ও কাযর্ক্ষমতা নিধার্রণ করা হয়েছে। এর ফলে প্রচলিত সালিশি ব্যবস্থা আরও গতিশীল হওয়ার পাশাপাশি নাগরিকের ভোগান্তিও লাঘব হবে।

আইন কমিশনের চেয়ারম্যান সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের নেতৃত্বাধীন কমিশন থেকে স¤প্রতি ৩৮ পৃষ্ঠার প্রাথমিক এ খসড়া চ‚ড়ান্ত করা হয়। পরে সংশ্নিষ্ট খসড়া আইনের ওপর মতামত গ্রহণের জন্য সেটি বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, ব্যাংক ও আথির্ক প্রতিষ্ঠান এবং বিচার-সংশ্নিষ্ট ব্যক্তিদের কাছে পাঠানো হয়েছে। জানা গেছে, সংশ্নিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের মতামত পাওয়ার পরপরই আইনটি চ‚ড়ান্ত করে বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (বিআইডিএ) ও আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।

এ বিষয়ে আইন কমিশনের মুখ্য গবেষণা কমর্কতার্ (জেলা জজ) ফউজুল আজিম গণমাধ্যমকে বলেন, প্রচলিত সালিশ আইনে নানা ধরনের অস্পষ্টতা ও সীমাবদ্ধতা থাকায় জনগণ আইনের সুফল থেকে বঞ্চিত হচ্ছিল। এ জন্য আইনটি সংশোধনের জন্য আইন কমিশনে আবেদন করে বিআইডিএ।

সালিশি কাযর্ধারা পরিচালনা: প্রস্তাবিত আইনের ২৩ ধারায় বলা হয়েছে, সালিশি বিরোধ নি®পত্তির জন্য একটি ট্রাইব্যুনাল থাকবে। ওই ট্রাইব্যুনাল ন্যায়সঙ্গত পক্ষপাতহীনভাবে দায়িত্ব পালন করবে। এ ক্ষেত্রে অন্য কোনো আইনে যা-ই থাকুক না কেন, সালিশি পরিষদ সালিশ দায়েরের ৩৬৫ দিনের মধ্যে তা নি®পত্তি করবে। তবে কোনো পক্ষ থেকে লিখিত আবেদন পাওয়া গেলে নি®পত্তির সময়সীমা সবোর্চ্চ ৩০ দিন বাড়ানো যাবে। পক্ষদয়ের মতামত ও সুবিধাজনক অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে সালিশের স্থান নিধার্রণ করতে হবে। এ ছাড়া সালিশি ট্রাইব্যুনাল প্রয়োজন অনুযায়ী বিশেষজ্ঞ মতামত গ্রহণ করতে পারবে এবং সাক্ষীর প্রতি সমনও জারি করতে পারবে।

সালিশকারীদের ফি: প্রস্তাবিত খসড়ায় ১৪(ক) ধারায় সালিশকারীদের ফি-সংক্রান্ত বিধান যুক্ত করা হয়েছে। বিচারাধীন অথর্ সবোর্চ্চ পঁাচ লাখ টাকা পযর্ন্ত সালিশি পরিষদের ফি নিধার্রণ করা হয়েছে বিচারাধীন অথের্র ১০ শতাংশ। ২৫ লাখ টাকা পযর্ন্ত অথের্র ফি নিধার্রণ করা হয়েছে ৬ শতাংশ। বিচারাধীন অথের্র ৩ শতাংশ ফি নিধার্রণ করা হয়েছে সবোর্চ্চ ৫০ লাখ টাকা পযর্ন্ত। ২ শতাংশ ফি নিধাির্রত করা হয়েছে সবোর্চ্চ এক কোটি টাকা পযর্ন্ত। পঁাচ কোটি টাকা পযর্ন্ত বিচারাধীন অথের্র ফি নিধার্রণ করা হয়েছে ১ শতাংশ এবং প্রস্তাবিত খসড়ায় পঁাচ কোটি টাকার ওপরে বিচারাধীন অথের্র ফি নিধার্রণ করা হয়েছে দশমিক ৫০ (আধা) শতাংশ টাকা। তবে কোনো একক সালিশকারীর ফি মূল ফির ২৫ শতাংশ বেশি হবে বলে প্রস্তাবিত সংশোধনীতে উল্লেখ করা হয়েছে।

এ ছাড়া প্রস্তাবিত খসড়ায় সালিশি ট্রাইব্যুনালের এখতিয়ার, সালিশি চুক্তি, রোয়েদাদ ও কাযর্ধারা পরিসমাপ্তি, সালিশি রোয়েদাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা, কতিপয় বিদেশি সালিশি রোয়েদাদের স্বীকৃতি ও বাস্তবায়ন এবং আপিলসহ নানা বিষয়ে সুনিদির্ষ্ট বিধান যুক্ত করা হয়েছে। এসব বিষয়ে বিদ্যমান আইনে অস্পষ্টতা থাকায় বতর্মানে সালিশি কাযর্ক্রম পরিচালনায় নানা ধরনের সমস্যা হচ্ছে। কমিশনের সংশ্নিষ্টরা বলছেন, প্রস্তাবিত খসড়ায় এই সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে নতুন বিধান যুক্ত করা হয়েছে। এটি কাযর্কর হলে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার প্রতিবন্ধকতা অনেকাংশে কমে আসবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<5750 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1