শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
জার্মানি

ইন্টারনেটে বিদ্বেষমূলক বক্তব্য নিয়ন্ত্রণে নতুন আইন

ডয়েচে ভেলে অবলম্বনে
  ০৯ এপ্রিল ২০১৯, ০০:০০

জার্মানিতে আগে এমন 'অপরাধের' শাস্তির বিধান ছিল, যা এ বছর থেকে আর কার্যকর থাকল না। দেশটির পার্লামেন্টের দুই কক্ষেই শাস্তির বিধানটি বাতিল করা হয়। জার্মান সংবিধানের ১০৩ নম্বর অনুচ্ছেদ মতে, বিদেশি কোনো রাষ্ট্র বা সরকারপ্রধান কিংবা সংগঠনের নিন্দা করলে তিন বছর পর্যন্ত জেলের ভাত খেতে হবে। দেশটির পার্লামেন্ট এই অনুচ্ছেদটিই বাতিল করে দিল।

বিষয়টি আলোচনায় আসে ২০১৬ সালে যখন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেচেপ তাইয়েপ এরদোয়ান জার্মান টকশো উপস্থাপক ইয়ান ব্যোমারমানের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেন। জার্মান ব্রডকাস্টার জেডডিএফে একটি কবিতা পড়েন ইয়ান, যেখানে এরদোয়ান শিশু পর্নোগ্রাফি দেখেন এবং পশুর সঙ্গে যৌনকর্ম করেন বলে কটূক্তি করা হয়।

তার বিরুদ্ধে আইনিব্যবস্থা শুরু হলে বাকস্বাধীনতা কতটুকু থাকা প্রয়োজন তা নিয়ে ব্যাপক তর্ক-বিতর্ক শুরু হয়। এদিকে, ইন্টারনেটে বিদ্বেষমূলক বক্তব্য নিয়ন্ত্রণে নতুন আইন করেছে জার্মান সরকার। আইনটির নাম নেটওয়ার্ক এনফোর্সমেন্ট ল বা নেটজডিজি। এই আইন অনুযায়ী, যে সব ইন্টারনেটভিত্তিক পস্নাটফর্মের ২০ লাখের বেশি ব্যবহারকারী আছে তাদের যে কোনো ধরনের বিতর্কিত বা অবৈধ পোস্টের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেয়া হলে তা ২৪ ঘণ্টা থেকে সাত দিনের মধ্যে সরিয়ে ফেলতে হবে। অন্যথায় গুনতে হবে পাঁচ কোটি ইউরো পর্যন্ত জরিমানা।

শুধু তাই নয়- প্রতিষ্ঠানগুলো কী ব্যবস্থা নিল প্রতি বছর তার প্রতিবেদনও দিতে হবে। জার্মানির ফেডারেল কোর্ট অফ জাস্টিসে যে কেউ এ সব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নালিশ করতে পারবেন।

এই আইন ফেসবুক, টুইটার, গুগল, ইউটিউব, স্ন্যাপচ্যাট, ইনস্টাগ্রামসহ সবার জন্যই প্রযোজ্য। তবে পেশাদার নেটওয়ার্ক লিংকডইন ও জিং এবং মেসেজিং অ্যাপ হোয়াটসঅ্যাপের আওতামুক্ত থাকবে।

গেল অক্টোবরেই এই আইন জারি করার সব বন্দোবস্ত হয়ে গেছে। তবে প্রতিষ্ঠানগুলোকে অভিযোগ ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি গড়ে তোলার জন্য তিন মাস সময় দেয়া হয়েছিল।

এরই মধ্যে গুগল অভিযোগ জানানোর জন্য একটি অনলাইন ফর্ম ছেড়েছে। টুইটার রিপোর্ট অপশনের একটি এক্সটেনশন যোগ করেছে যেখানে লেখা আছে 'নেটজডিজি আইনের অধীনে'। ফেসবুকে অবশ্য বিষয়টি একটু জটিল। তবে তারা বলছে যে, প্রতি সপ্তাহেই লাখ লাখ অভিযোগ জমা পড়ছে সেখানে।

এই আইনটি বিদ্বেষমূলক পোস্ট নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখবে বলে কর্তৃপক্ষ দাবি করলেও অনেকেই বাক-স্বাধীনতা খর্ব হবে বলে এর সমালোচনা করছেন। বিশেষ করে উগ্র ডানপন্থি দল এএফডি বলছে যে, এটি একটি সেন্সরশিপ আইন। এ ছাড়া ভুয়া অভিযোগের কারণেও অনেক পোস্ট ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলেও সমালোচনা আছে।

জার্মানির আইন মন্ত্রণালয় গেল ২০১৫ সাল থেকেই সামাজিক গণমাধ্যমগুলোর ওপর নানাভাবে চাপ তৈরি করছে। জার্মানিতে শরণার্থীরা আসতে থাকায় তখন সামাজিক গণমাধ্যমে ব্যাপক হারে বিদ্বেষমূলক পোস্ট দেয়া হচ্ছিল।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<44618 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1