শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

করোনাভাইরাসের লক্ষণ

নতুনধারা
  ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০০:০০

করোনাভাইরাস নিয়ে বিশ্বজুড়ে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা সাড়ে ২০ হাজার জনের কাছাকাছি, এর মধ্যে বেশির ভাগই চীনের মানুষ। চীনেই সর্বপ্রথম এই ভাইরাসের খবর পাওয়া যায়। ধীরে ধীরে এটি গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ছে। থাইল্যান্ড, জাপান ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো অন্যান্য দেশ থেকেও এই ভাইরাস সংক্রমণের ঘটনা জানা গেছে। তাই, বিশ্বব্যাপী মানুষের মধ্যে এই মারণ ভাইরাস নিয়ে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে।

কীভাবে এই ভাইরাসে সংক্রমিত ব্যক্তিদের চিকিৎসা করা হবে, তা নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডঐঙ) প্রচার করছে। চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের বিশ্বাস, ২০০৩ সালে ৮০০-রও বেশি মানুষের মৃতু্য ও হাজার হাজার মানুষের আক্রান্ত হওয়ার কারণ 'সার্স' (সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপিরেটরি সিন্ড্রোম) ভাইরাসের পরিবার থেকেই এসেছে এই নতুন ধরনের করোনাভাইরাস। তারা আরও জানিয়েছেন যে এই ভাইরাসটি চীনের বাজারে পাওয়া প্রাণিজ পণ্য বা সামুদ্রিক খাবার থেকে মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ছে।

করোনাভাইরাস কী?

করোনাভাইরাস বলতে এক গোত্রের অনেক ভাইরাসকে বোঝায়, যা মূলত প্রাণীদের মধ্যে পাওয়া যায়। বার্ড ফ্লু তথা সার্স ভাইরাসও এই গোত্রের। হিউম্যান করোনাভাইরাস এক ধরনের জুনোটিক রোগ এবং এই সংক্রমণটি প্রাণী থেকে মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে।

ভাইরাসটির অনেক রকম প্রজাতি আছে। কিন্তু, এখন পর্যন্ত বিজ্ঞানীরা প্রায় ছয়টি করোনাভাইরাস শনাক্ত করেছেন, যা মানুষকে প্রভাবিত করে এবং হালকা থেকে মারাত্মক লক্ষণ সৃষ্টি করে।

হিউম্যান করোনাভাইরাসের প্রথম খোঁজ পাওয়া গিয়েছিল ১৯৬০ সালে একজন রোগীর মধ্যে, যিনি সর্দিতে ভুগছিলেন। করোনাভাইরাস নামটি এসেছে এর আকৃতির ওপর ভিত্তি করে। ইলেক্ট্রন মাইক্রোস্কোপে এই ভাইরাসটি ক্রাউন বা মুকুটের মতো দেখতে হওয়ায় এর নাম হয়েছে 'করোনা'।

মানুষ প্রায়ই তাদের জীবনের কোনো না কোনো সময়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়, সুস্থ হয়ে ওঠে এবং কয়েক মাস পরে আবার সংক্রমিত হতে পারে। মানুষের দেহে ছয় ধরনের করোনাভাইরাস সংক্রমিত হতে পারে, যথা- আলফা করোনাভাইরাস (ঘখ৬৩ এবং ২২৯ঊ), বিটা করোনাভাইরাস (ঐকট১ ও ঙঈ৪৩) এবং বাকি দুটি সার্স ও মার্স তাদের প্রাণঘাতী লক্ষণগুলোর জন্য পরিচিত।

হিউম্যান করোনাভাইরাস ছড়ানোর কারণ হিউম্যান করোনাভাইরাস সাধারণত একজন ব্যক্তির শ্বাসনালিকে প্রভাবিত করে। শ্বাসনালিতে সংক্রমিত তরল কাশি বা হাঁচির সময় এক ব্যক্তির থেকে আরেক ব্যক্তির মধ্যে চলে যায়। এ ছাড়া যদি সংক্রমিত ব্যক্তি মুখ না ঢেকে খোলা বাতাসে হাঁচি বা কাশি দেয়, তাহলে ভাইরাসটি বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে।

ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার অন্যান্য কারণ হলো- সংক্রমিত ব্যক্তির সঙ্গে হ্যান্ডশেক, সংক্রমিত কোনো বস্তুর সঙ্গে নাক বা মুখ একসঙ্গে স্পর্শ করা এবং বিরল ক্ষেত্রে, রোগীর মলমূত্র স্পর্শ করা। হিউম্যান করোনাভাইরাসের লক্ষণ ঘখ৬৩ এবং ২২৯ঊ, ঐকট১ ও ঙঈ৪৩-এর কারণে ফ্লু-এর মতো লক্ষণ দেখা দেয় যা, হালকা থেকে মাঝারি আকার ধারণ করে। অন্যদিকে, মার্স ও সার্স মারাত্মক লক্ষণ সৃষ্টি করে।

এই ভাইরাসের পূর্ববর্তী লক্ষণগুলো হলো-

ক) সর্দি, খ) গলাব্যথা, গ) কাশি, ঘ) মাথাব্যথা, ঙ) জ্বর, চ) হাঁচি, ছ) অবসাদ ও জ) শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া।

এ ক্ষেত্রে রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে যায় এবং যারা বয়স্ক তাদের এই ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে এবং নিউমোনিয়া বা শ্বাসনালির ব্যাধির মতো মারাত্মক অসুস্থতায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও বেশি থাকে।

মার্স ও সার্সের লক্ষণগুলো মারাত্মক হয়, এর কারণে গুরুতর শ্বাসকষ্টের সমস্যা, কিডনিতে সমস্যা, ডায়রিয়া এবং কোনো ব্যক্তির মৃতু্যও হতে পারে বলে জানা গেছে।

হিউম্যান করোনাভাইরাস নির্ণয় হিউম্যান করোনাভাইরাস নির্দিষ্ট কয়েকটি পরীক্ষার মাধ্যমে নির্ণয় করা হয়, যথা- মলিকিউলার টেস্ট : সক্রিয় সংক্রমণের লক্ষণগুলো খুঁজে বের করতে।

সেরোলজি টেস্ট : এই পরীক্ষাটি নজরদারি করার উদ্দেশ্যে। এটি পূর্ববর্তী সংক্রমণ থেকে অ্যান্টিবডিগুলো শনাক্ত করার জন্য করা হয়, যা একজন ব্যক্তির ভাইরাসের ধরন প্রকাশিত করে।

হিউম্যান করোনাভাইরাস চিকিৎসার সঠিক চিকিৎসা এখনো আবিষ্কার করা হয়নি। বেশ কয়েকটি ভ্যাকসিন নিয়ে এখনো গবেষণা চলছে। তবে অনেক সহায়ক চিকিৎসাপদ্ধতি এবং ওষুধ রয়েছে যেগুলো এর হালকা থেকে মাঝারি উপসর্গগুলোর চিকিৎসা করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, ব্যথা ও জ্বরের চিকিৎসার জন্য ওষুধ বা গলাব্যথা নিরাময়ের জন্য গরম পানি ইত্যাদি।

হিউম্যান করোনাভাইরাস প্রতিরোধ

ক) হাঁচি বা কাশির পরে হাত ধুয়ে নিন।

খ) কাশি বা হাঁচির আগে মুখ ঢেকে নিন।

গ) আপনার যদি মনে হয় যে আপনি সংক্রামিত, তাহলে কোনো ব্যক্তির সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা এড়িয়ে চলুন।

ঘ) রান্না না করা গোশত ও ডিম খাওয়া এড়ান।

ঙ) নিজেকে সারাক্ষণ হাইড্রেট রাখুন।

চ) লক্ষণগুলো দেখা দেয়া মাত্রই ওষুধ খান এবং পরিস্থিতি গুরুতর হয়ে উঠতে দেবেন না।

ছ) ধোঁয়াটে এলাকা বা ধূমপান করা এড়িয়ে চলুন।

জ) যথাযথ বিশ্রাম নিন।

ঝ) ভিড় থেকে দূরে থাকুন।

য় সুস্বাস্থ্য ডেস্ক

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<87225 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1